জীবনের ডায়েরী থেকে গল্প সমগ্র : পর্ব-৭৫

ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন),

 (গত পর্বের পর) : ভাগ্যই সেরা, (এম.রহমান, পি-এইচ.ডির ডাইরী থেকে) : প্রবাদ বাক্য- ভাগ্যেও লেখন না যায় খ-ন। পাশ্চাত্যের বিজ্ঞান যদিও অথিকাংশ ক্ষেত্রে এ বিষয় একমত হতে চায় না। তথাপি মহান ¯্রষ্টার নির্ধারিত বিষয় উপেক্ষা করা মানবের সাধ্যের বাহিরে। এ কথা বাস্তব চিরন্তন সত্য। যার বাস্তব প্রমাণ আমাদের সমাজে পরিলক্ষিত হয়। সে এক পুরাতন কথা। আর বাস্তব হলে সাহিত্যিকগণের ক্ষেত্রে রচিত হয় গল্প ও উপন্যাস। তেমনি একটি গল্প এম, রহমান- পি-এইচ.ডি’র ডাইরী থেকে।
এম. ওহমান, পি-এইচ.ডি। সাং+পোঃ চন্দ্র প্রসাদ, ভোলা সদর, ভোলা।
ছোটবেলায় গ্রামে পড়াশুনায় হাতেখড়ি। এক পর্যায়ে কুষ্টিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে অনার্স মাষ্টার্স, এম.ফিল অ্যাওয়ার্ড ও বিশে^র সর্বোচ্ছ ডিগ্রী পি-এইচ.ডি।
মায়ের হাতে প্রথম প্রাথমিক জ্ঞান লাভ। পিতা-মাতার মধ্যে মায়ের অধিক ¯েœহে লালিত এম. রহমান। সর্বদা মায়ের ইচ্ছার প্রাধান্য দিতে কৃপণতা করেন না। বিশে^র সকল মানুষ মাতৃ ¯েœহে বড় হওয়ায় স্বভাবতঃ কারণে মাকে বেশী পছন্দ করে। আর এ কারণে সন্তানরা মা ভক্ত হয়ে থাকে। এম. রহমান ২০০৩ সালে কুষ্টিয়া ইউনিভার্সিটির অনার্স অধ্যায়নরত ছাত্র। বিশ^বিদ্যালয়ের রমরমা পরিবেশ হল জীবনে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে এক আনন্দঘন পরিবেশে অবস্থানরত। অনেক স্¦প্ন আর আশা নিয়ে সুদূর-প্রসারি পরিকল্পনায় কখনো কল্পনায় আসার কথা ছিল না।
পৃথিবীতে সবচেয়ে দ্রুত পরিবর্তনশীল যা ন্যানো সেকেন্ডকেও হার মানায় তা হচ্ছে মনের পরিবর্তন। যা খুব সহজে পরিবর্তনশীল। যা আবেগ ও আয়েশের দিকে ধাবিত করে। সেক্ষেত্রে পাশর্^ প্রতিক্রিয়ার সমর্থন আরো ত্বরান্বিত করে। মায়ের সর্মথন তো বলার অপেক্ষাই রাখে না। ২০০৩ সাল অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র, ৬ষ্ঠ সেমিস্টার পরীক্ষা সামনে। ঐ বছর তাঁর বাড়ীর সামনে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নব নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষিকা ‘‘মিস নিপা” যোগদান করেন। সেও ভোলা সরকারী মহিলা কলেজে অনার্স অধ্যায়নরত ছাত্রী। বাসা ভোলা শহরের মুসলমান পাড়া। দেখতে অতুলণীয় সুন্দরীদের সমকক্ষ না হলেও পছন্দ করার মত, সুদর্শন হালকা গঠন প্রকৃতির। প্রচলিত কথা আছে- ‘‘খাটো মানুষ ন্যাড়া আর লম্বা মানুষ বোকা’’। তবে এ দু’টোর একটার মধ্যে এছে সে। শহরের মেয়ে বলে চলাফেরা, পোষাক-পরিচ্ছদ অন্যান্য মেয়েদের তুলনায় একটু ব্যতিক্রম হওয়া স্বাভাবিক। যা সহজেই গ্রামের মহিলাদের পছন্দ হওয়া অস্বাভাবিকের কিছুই নয়।
এম. রহমানের বাড়ীর কাছে প্রতিষ্ঠান হওয়ায় স্কুল শিক্ষিকাদের তাদের বাড়ীতে আসা-যাওয়া ছিল। প্রথম দর্শনে ‘‘নিপা’’কে তাঁর মায়ের পছন্দ হয়ে যায়। তাঁর মা আবেগে আপ্লুত হয়ে ছেলে এম. রহমানের কাছে চিঠিতে জানায়।
চিঠির ভাষা ছিল-
‘‘এম’’, স্কুলে একটা মহিলা শিক্ষিকা আসছে। মেয়েটা খুব সুন্দর, সর্বদিক মিল করে এ রকম মেয়ে হয় না। মেয়েটা আমার খুব পছন্দ। ২০০৩ সাল জুন মাস।
এম. রহমান তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৩০২ নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র হিসেবে চার বন্ধু- মঈন, শাহিন, মোমিন, মিজান একই সাথে অবস্থান করছিল। মায়ের আবেগ প্রবণ লেখা নিয়ে বন্ধুমহলের সকলে মিলে হাসি রহস্যে ভরপুর এক মজার গল্প। সামনে গ্রীষ্মের বন্ধ। দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস ছুটি। বাড়ীতে যাওয়ার পালা।
কিন্তু মায়ের আবেগ তাঁকে কল্পনার জগতে নিয়ে গেল। আর সে আবেগে তাঁকে ছেড়ে দেয় নি। বাড়ী গিয়ে দরজায় বের হতেই প্রাথমিক বিদ্যালয় সামনে পড়ে যায়। তখন মায়ের লেখা চিঠি চোখের সামনে ভেসে উঠে। আর তাঁর মায়ের চিহ্নিত শিক্ষিকাকে অবলোকন করতে থাকে। কিন্তু বিষয়টা সম্পূর্ণ নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ। কারো সাথে শেয়ার করা হয় না। যে মায়ের পছন্দ তাকেও বুঝতে দেওয়া হয় নি। এভাবে একটি বছর শেষ হতেই মাস্টার্স শেষ পর্যায়ে। প্রথম সেমিস্টার শেষ হয়েছে। এ পর্যায়ে মায়ের ইচ্ছার ভিত্তিতে মায়ের আবেগে তাকে গ্রাস করেছে। যার প্রেক্ষিতে মায়ের ইচ্ছাটা পরোক্ষভাবে মিস নিপাকে জানায়।

(চলবে————)

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।