দৌলতখানে বিধবা নারীকে ঘর থেকে বের করে তালাবদ্ধ করলেন চেয়ারম্যান (!)

ভোলার দৌলতখানে বিধবা নারীকে ঘর থেকে ভয় দেখিয়ে বের করে দিয়ে বসত ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে সৈয়দপুর ইউপি চেয়ারম্যান জি,এস ভুট্টু তালুকদারের বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে ও ভুক্তভোগী নারীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সৈয়দপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন আঃ হাশিম মৌলভীর ৭ কন্যা সন্তান। আঃ হাশিম মৌলভী ঐ অঞ্চলের একজন বড় মাপের বুঝুর্গ মানুষ ছিলেন। তার মৃত্যুর পর ক্রয়কৃত ২০ শতাংশ জমি ৭ মেয়ের মধ্যে সমভাবে বন্টন করে দেওয়া হয়। ২০ শতাংশ জমি থেকে কবর স্থানের যায়গা ও বাড়ির সামনে একটি মাদ্রাসার জমি বাদ দিয়ে ২.২৫ করে মেয়েদের জমি দেওয়া হয়।
একই বাড়িতে আঃ হাশিম মৌলভীর সাথে তার ছোট মেয়ে বিলকিস জমি ক্রয় করে। বাবার মৃত্যুর পর ঐ জমির উপর নজর পরে বড় মেয়ে হালিমা বেগমের (৪০)। জমি নিজ কব্জায় নিতে এলাকার একটি প্রভাবশালী চক্রকে আয়ত্ব করে বোনদের উপর প্রভাব চালায়।
কোন ভাই না থাকার কারণে পরিবারটি অত্র স্থানে অসহায় হিসেবেই পরিচিত। বহুবার সালিশি বৈঠক হয়, কিন্তু দিনের রায় রাতে উল্টে যায়। মৌলভীর ছোট মেয়ে বিলকিস (৩৭)’র বিয়ে হয় নোয়াখালিতে। তার ৩ টি সন্তান রয়েছে। তার স্বামী মৃত্যুবরণ করে অনেক আগে। বড় ছেলে ১৪ বছর বয়স কোরাআনে হাফেজ, ছোট দুই বাচ্চা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে।
বাবার মৃত্যুর আট বছর পর নিজ অংশ বুঝে নিতে দৌলতখানে আসলেই বিপত্তির মধ্যে পরতে হয় তাকে। বাবার বাড়িতে বসবাস করা বড় বোন হালিমা বেগম তার জমি আত্মসাৎ করার পায়তারা করে। এক বোন রাশেদা অসহায় বিলকিসকে তার অংশ সহ বসতঘরটি দান করে। তাতেই আপত্তি প্রভাবশালীদের।
গত ৯ ফেব্রুয়ারী ঐ চক্রটি বিলকিসকে ঘর থেকে বের করে বসত ঘরে তালাবদ্ধ করে দেয়। পরে বিধবা মহিলাটিকে মারধর করতে তার গায়ের দিকে ছুটে আসেন। চেয়ারম্যান দাঁড়িয়ে থেকে ২ জন চৌকিদার ও তসলিম তালুকদার নামক জনৈক ব্যক্তি দিয়ে ঘরের মালামাল বাহিরে ফেলে দেওয়া হয়। এ সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বিধবা নারিকে ভয় দেখানো হয়। ভয়ে এক প্রকার পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পরবারটি।
তসলিম তালুদার অসহায় বিলকিসকে জানে মেরে ফেলারও হুমকি দেন। ঘটনাটি নিয়ে বারাবাড়ি না করার জন্য শাসায় চেয়ারম্যান। গত ১০ তারিখ ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে নিন্দার ঝড় উঠে। চেয়ারম্যান ও তসলিম তালুকদার কে আইনের আওতায় আনতে জোর দাবী উঠার পর ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার মিশন নিয়ে মাঠে নামে তারা। তা বাস্তবায়ন করার জন্য ব্যবহার করা হয় প্রাইমারী স্কুল মাষ্টার রুহুল আমিন সহ অনেক কে।
এ ব্যাপারে সৌয়দপুর ইউপি চেয়ারম্যান জি,এস ভুট্টু তালুকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘর তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সুষ্ঠ সমাধানের জন্য একাধিক বার শালিসি হয়েছে। উভয় পক্ষ মধ্যে রায় মানা নিয়ে জটিলতা রয়েছে, সমাধানের জন্য ঘরটি তালাবদ্ধ করা হয়েছে।
অসহায় পরিবারটি প্রশাসনের সকল সহায়তা কামনা করেছেন। প্রভাবশালী চক্রটির পায়তারা অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা জরুরী বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।