ভোলার চরফ্যাশনে ঝাড়-ফুঁক দিয়ে তন্ত্রমন্ত্রসাধনার মাধ্যমে অমূল্য গুপ্তধন দিবে এমন আশ্বাসে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া অভিযোগে শেখ ফরিদ নামের কথিত এক তন্ত্র সাধক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার পৌরসভার সদরের একটি বাসায় ঝাড়-ফুঁক এবং অমূল্য গুপ্তধন দিবে এমন আশ্বাসে দিয়ে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। চরফ্যাশন থানা পুলিশ স্থানীয়দের কবল থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। আটককৃত শেখ ফরিদ উদ্দিন উপজেলা ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মৃত সেকান্তর আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, ওই প্রতারক তন্ত্রসাধক শেখ ফরিদ উদ্দিন চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সহজ সরল মানুষকে জ্বীন-ভুতের আছর ও অমূল্য রতœ ও গুপ্তধন পাওয়াই দেয়া এবং অবাধ্যকে বাধ্য করে দেয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন অংকের টাকা ধার্য্য করে প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। ভুয়া তদবির দিয়ে পরে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে গা-ঢাকা দেন তিনি। প্রতারণার শিকার হওয়া পরিবারের সদস্যরা উৎ-পেতে ছিলেন ওই প্রতারক ফরিদকে আটক করার জন্য। শনিবার পৌরসদরের একটি বাসায় এমনই প্রতারণা করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছেন এমন খবররে স্থানীয়রা তাকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছেন।
প্রতারণার শিকার বিউটি নামের এক নারী অভিযোগ করেন, তার স্বামী চট্রগ্রামে ব্যবসা করেন। ব্যবসার মন্দা কাটানোর জন্য তদবির দিবেন এমন অজুহাতে প্রথম দফায় তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। পরে তার সন্তানের খারাপ জ্বীনের আছড় আছে এবং অমূল্য গুপ্তধন দিবে এমন অজুহাতে দু’দফায় ১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। ভন্ড কবিরাজের কথা জালে ফেঁসে সন্তানের মঙ্গলের জন্য তিনি অন্ধ বিশ্বাসের উপর তাকে টাকা দিয়েছেন। ওই প্রতারক টাকা কড়ি হাতিয়ে নিয়ে আতœগোপনে চলে যান।
দিল আফরোজ নামের এক নারী জানান, ওই প্রতারক তার পারিবারিক বিবাদ মিঠানো এবং তার সাথে জ্বীনের আছর আছে এমন অজুহাতে চিকিৎসার নামে তার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এবং তাকে জ্বীনের মাধ্যমে সোনার কাঠি এনে দিবে এমন আশ্বাস দিয়ে তদবির দেন। তদবিরে কোন কাজ না হওয়ায় তার টাকা ফিরিয়ে দিবেন বলে আশ্বাস দিয়ে গা-ঢাকা দেন তিনি। অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিউটি ও দিল আফরোজের মতো এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন চরফ্যাশন উপজেলার গ্রাম-গঞ্জের সহজ-সরল কয়েক শ’ মানুষ। কথিত তন্ত্রসধককে অন্ধ বিশ্বাস করে কথার ভুলির জালে ফাঁসিয়ে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আটককৃত তন্ত্রসাধক শেখ ফরিদ উদ্দিন জানান, তিনি তন্ত্রমন্ত্র কিছুই জানেন না। গ্রামের সহজ সরল মানুষকে কাথার ফাঁদে ফেলেই তিনি এই অপকর্ম করে যাচ্ছেন। ইতিপুবর্বে দিল আফরোজ নামের এক নারীর টাকা ফিরিয়ে দিবেন বলে ওই নারীকে জানিয়েছেন।
চরফ্যাশন থানার ওসি মোঃ মনির হোসেন মিয়া জানান, স্থানীয়রা তন্ত্রসাধককে আটক করে থানায় খবর দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করেন। আটককৃত তন্ত্রসাধক শেখ ফরিদকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।