ভোলায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

১০ই জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে ভোলায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল কাদের মজনু মোল্লার সভাপতিত্বে রবিবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় চিলি কনভেনশন সেন্টারে জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় ফজলুল কাদের মজনু বলেন, ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাঙালি জাতির মহান মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিক ইতিহাসের একটি অনন্য মাইলফলক। এদিন পূর্ণতা পায় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

১৯৪৭ সালে ভ্রান্ত দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে দেশভাগের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পূর্ব বাংলার মানুষকে নতুন করে পরাধীনতার নিকষ অন্ধকারে নিপতিত করে। ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথপরিক্রমায় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলে বাঙালি জাতি। বাঙালি জাতিকে মুক্তির মহামন্ত্রে উজ্জীবিত করে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের পথে এগিয়ে নিয়ে যান বঙ্গবন্ধু। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ খ্যাত বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের কালজয়ী আহ্বান এবং পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের চূড়ান্ত লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে বাঙালি জাতি।

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করলে ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি করে রাখে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে বাঙালি জাতি দখলদার পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে। বিশ্ব-মানচিত্রে অভ্যুদ্বয় ঘটে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটলেও স্বাধীনতার নায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখনও পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। স্বাধীন দেশে ওই সময় আরেকটি সংগ্রাম শুরু হয়, বঙ্গবন্ধুকে ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধু আদৌ বেঁচে আছেন কিনা কিংবা পাকিস্তান সরকার তাকে ফিরিয়ে দেবে কিনা- সেসব নিয়ে চলে নানান জল্পনা-কল্পনা।

স্বাধীনতার ২৩ দিন পর ১৯৭২ সালের এদিন অর্থাৎ ১০ জানুয়ারি বেলা ১টা ৪১ মিনিটে অবিসংবাদিত নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যদিয়ে জাতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করে।

তিনি বলেন, আমাদের দলীয় কিছু কুলাঙ্গার ও স্বাধীনতা বিরোধীরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে আবারও পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করতে চেয়েছিল কিন্তু আল্লাহর অসীম রহমতে সেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে অবস্থান করায় তারা এই এই হত্যাযজ্ঞ থেকে রেহাই পায়। আজ বঙ্গবন্ধুর সেই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমাদের বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ তরিকুল ইসলাম রনি’র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সহিদ তালুকদার, নলীদাস মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক শ্রী অসীম সাহা, রাজাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ ফরাজি, ধনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জাতীয় কমিটির সাবেক সদস্য ও যুবলীগ নেতা মাইনুর রহমান তুহিন মোল্লা, ভোলা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ আকতার হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা, আজিজ মেহেরাব মোল্লা, ইউসুফ আলী সোয়েব প্রমুখ।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।