চরফ্যাশন ইউএনও অফিস ঘিরে আবারও নাটকীয়তা !

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অফিস সহকারী মনির আলমের বিরুদ্ধে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ অনুসন্ধানে একটি মহলের ষড়যন্ত্রের প্রমান মিলেছে। অনুসন্ধানে যানা যায়, স্থানীয় একটি ষড়যন্ত্রকারী চক্র উপজেলা নির্বাহী অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ করতে লক্ষ টাকার মিশনে নামে। কয়েক মাস পূর্বেও একই ভাবে ষষড়যন্ত্রে অব্যর্থ হয়ে নতুন খেলায় আবার মাঠে নামে তারা। চরফ্যাশন বাজারের কতিপায় অসাধু ব্যবসায়ীর ডিলিং লাইসেন্স ও করোনাকালীন সময়ে অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রয় করার দায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে এই চক্রটি একের পর এক ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চরফ্যাশন উপজেলার ইউনিয়ন দফাদার-মহল্লাদারদের সরকারীভাবে ২২ মাসের যাতায়াত ভাতা ২৬ হাজার ৪ শত টাকা ইউএনও অফিসের মাধ্যমে উত্তলনেরকে কেন্দ্র করে অফিস সহকারী মনির আলমের বিরুদ্ধে ২ হাজার ৪ শত টাকা ঘুষ গ্রহণের মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে বেকায়দায় ফেলতে কয়েকটি মিডিয়ায় ষড়যন্ত্রকারীরা বক্তব্য প্রদান করেন।
ওই ঘটনা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা রুহুল আমিন এর নজরে আসলে তিনি তদন্ত শুরু করে। তিনি দফাদার ও মহল্লাদারদের ঘুষ কেলেঙ্কারির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলার ১৯ টি ইউনিয়নের সকল দফাদার ও মহল্লাদারগণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করে লিখিত দিয়ে সাক্ষর করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে সকল দফাদার ও মহল্লাদারগণের স্বাক্ষরিত লিখিত আবেদনটি নিম্নে হুবহু তুলে ধরা হলো:-


উপজেলা নিবার্হী অফিসার চরফ্যাশন ভোলা এর কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার অফিস সহকারী জনাব মো: মনির আলম এর বিরুদ্ধে আনিত ভিত্তিহীন অভিযোগের প্রতিবাদ প্রসঙ্গে।
জনাব, বিনীত নিবেদন এই যে, আমরা চরফ্যাশন উপজেলার ১৯ টি ইউনিয়নের দফাদার মহল্লাদারগন আপনার অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জানাইতেছি যে, আমাদের থানায় হাজিরার যাতায়ত ও দৈনিক ভাতা গত ০৫/১২/২০২০ ইং তারিখে অফিস সহকারী জনাব মো: মনির আলম স্যার এর নিকট হইতে ২২ মাসের ভাতা বাবদ ২৬,৪০০/- (ছাব্বিশ হাজার চার শত) টাকা হারে বুঝিয়া পাইয়া বেতন ভাতা রেজিষ্টারে স্বাক্ষর করিয়াছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় বিভিন্ন ভাবে জানতে পারি যে একটি কুচক্রী মহলের সহযোগীতায় অসাধু কয়েকজন সাংবাদিক বিভিন্ন প্রকার সংবাদ মাধ্যম ও ইন্টারনেটে সংবাদ প্রচার করেন। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখ জনক। মনির স্যারের সুনাম ও সততার প্রতি ইর্ষান্বিত হইয়া তার সুনাম নষ্ট করা ও হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এইরূপ মিথ্যা অভিযোগ ছড়াইয়াছেন। এই সব মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদ জানাইতেছি এবং আমাদের আরও দাবী মনির স্যারকে এখান থেকে বদলী করা না হয়। তা হলে আমাদের অপূরনীয় ক্ষতি হবে। বিগত দিন গুলোতে আমাদের অনেক ক্ষতি হইয়াছে বলে সকলেই লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে অফিস সহকারি মুনির আলম জানান, আমি নিয়ম মাফিক ভাবে দফাদার ও মহল্লাদারদের সরকারি যাতায়াত ভাতা ২২ মাসের ২৬ হাজার ৪ শত টাকা করে প্রতিজনকে দিয়েছি। এবং তারা প্রত্যেকে টাকা নেয়ার সময় ১০ টাকা দামের সরকারি রেভিনিউ স্টাম্প এর উপর স্বাক্ষর দিয়ে টাকা গ্রহন করেছে। আমি জন প্রতি ২ হাজার ৪ শত টাকা করে রেখেছি কথাটি সম্পূর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এটি একটি ষড়যন্ত্র। এই কথাটি যখন আমার উর্ধতন কর্মকর্তা ইউএনও স্যার শুনেছে, তখন ইউএনও স্যার সকল মহল্লাদার ও দফাদার দের ডেকে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করলে, সকলে এই বিষয়টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে স্বীকার উক্তি করে স্বাক্ষর সহ লিখিত প্রদান করেন।


তিনি আরো জানান, আপনারা জানেন যে, কিছুদিন আগে বাজারের কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীদের ডিলিং লাইসেন্স না থাকায় ইউএনও মহোদয় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করে। তখন আমি ইউএনও স্যারের সাথে থেকে আমি আমার কর্তব্য পালন করি। তখন তারা আমার উপরে অহেতুক সন্দেহ করে যে আমি তাদের মধ্যে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীদের আমার ব্যক্তিগত ক্ষোভ এর কারণে তাদেরকে ধরিয়ে দিয়েছি। তাই তারা অহেতুক আমার বিরুদ্ধে এই মিথ্যা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
মনির আলম একই কর্মস্থলে দীর্ঘ ২৩ বছর চাকরি করার অভিযোগ একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হলে ওই ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি গত ০৬/১০/২০২০ ইং তারিখে চরফ্যাশন নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে যোগদান করি। এখানে যোগদানের আগে আমি গত ১৪/০১/২০২০ ইং তারিখে চরফ্যাশন উপজেলা ভূমি অফিসে যোগদান পূর্বক কর্মরত ছিলাম।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, মনির আলম ২ হাজার ৪ শত টাকা করে আদায় করেছে বিষয়টি একজন সংবাদকর্মীর মাধ্যমে জানেছি। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য দফাদার ও মহল্লাদারদেরকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেছি বিষয়টি তারা আমার কাছে অস্বীকার করেন। তারা আমাকে জানিয়েছেন, ১০ টাকা করে রাজস্ব আদায় করে তাদের যাতায়াত ভাড়া বাবদ প্রাপ্য সবাইকে ২৬ হাজার ৪ শত টাকা মনির আলম দিয়েছে। এবং সকলের সাক্ষরিত লিখিত ভাবেও আমাকে জানিয়েছে। এর পরও যদি মনির আলম দোষী প্রমান পাওয়া যায় তাহলে আমি ডিসি স্যারকে লিখিত ভাবে জানানো হবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।