সর্বশেষঃ

সোলারের আলোয় আলোকিত হবে মনপুরার ৮শত পরিবার

রাতের বেলায় কুপি ও হারিকেনের আলো জ্বালিয়ে ঘরের কাজ করতে হয় বাসিন্দাদের। আবার কারও কেরোসিন ক্রয়ের টাকা না থাকায় কুপি ও হারিকেন জ্বালানোর ক্ষমতা নেই। এতে গত দুইযুগ ধরে রাতের বেলায় অন্ধকারে কাটিয়েছে দ্বীপের বেশিরভাগ পরিবার। এইভাবে গত ২৫ বছর ধরে দিনযাপন করছে দ্বীপের বাসিন্দারা। এটি ভোলার বিচ্ছিন্ন মনপুরা উপজেলারও বিচ্ছিন্ন মেঘনার বুকে জেগে উঠা দ্বীপ চর কলাতলীতে বসবাসরত ২০ হাজার মানুষের প্রতিদিনের চিত্র। তবে অন্ধকার এই দ্বীপে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ওয়েষ্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রেবিউশন ও ইডকলের অর্থায়নে ৮ শত পরিবারের মাঝে সোলার বিতরণ কার্যক্রম চালু রয়েছে। এতে ওই ৮শত পরিবারে অন্ধকার দূর হয়ে সোলারের আলো আলোকিত হচ্ছে পুরো দ্বীপে। তবে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিরা আরো চার হাজার সোলার দেওয়ার দাবী করেন।
সদ্য সোলার পাওয়া কলাতলীর বাসিন্দা হাসিনা, মরিয়ম, ফারজানা, কাইয়ুম, জামাল, জান্নাত সহ শতাধিক বাসিন্দা জানান, গত দুই যুগ ধইরা রাতে কুপি ও হারিকেন জ্বালাইছি। অহন আমাগোরে সোলার দিছে অনেক উপকার হইছে। আগে আন্ধারাই (অন্ধকার) ঘরে ভাত খাইছি। রাতে আন্ধারাইয়া (অন্ধকার) থাকছি। এহন রাতে লাইট জ্বালাইয়া ভাত খাই। রাতে পোলা-পাইন পড়া-লেহা করতে পারে। একইভাবে বলেন সোলার পাওয়া অধিকাংশ বাসিন্দারা।
তবে কলাতলী দ্বীপ উপজেলার ১ নং মনপুরা ইউনিয়নের অর্ন্তগত জনপ্রতনিধি ইউপি চেয়ারম্যান আমানত উল্লা আলমগীর জানান, দ্বীপের ইউপি সদস্যদের নিয়ে ওয়েষ্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রেবেশন ও ইডকলের কর্মকর্তারা তালিকা করে ৮শত হতদরিদ্র বাসিন্দাদের মাঝে সোলার বিতরন করছে। এতে কুপি ও হারিকেনের বদলে সোলারের আলোয় আলোকিত হচ্ছে পুরো দ্বীপ। তবে এই দ্বীপে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনতে হলে সোলার না পাওয়া দ্বীপে বসবাসরত অপর চার হাজার পরিবারের জন্য সোলারের ব্যবস্থা করতে হবে। একই দাবী করেন ওই দ্বীপের বর্তমান ইউপি সদস্য আবদুর রহমান ও ইউপি সদস্য মোঃ আমিন।
সরেজমিনে চর কলাতলী গিয়ে দেখা গেছে, আবাসন প্রকল্পের কিছু ঘর, আবাসন বাজারের পাশে ঘর, কবির বাজারে পাশে অনেকে ঘরের টিনের চালার উপর সদ্য বিতরণকৃত সোলার প্যানেল রয়েছে। এছাড়াও চরে এক ঘর থেকে এক ঘরের দূরত্ব অনেক। শীত মৌসুমে ওই সমস্ত ঘরের সামনে জোয়ারের পানি জমে রয়েছে। তবে রাতের বেলায় বিতরনকৃত সোলারের বাতির আলোয় পুরো দ্বীপে জোনাকি পোকার মত মিটমিট করে আলো জ্বলতে দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে দ্বীপে সোলার বিতরনে দায়িত্বে থাকা ইডকলের কর্মকর্তা মোঃ কামাল হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার উদ্যোগে চর কলাতলীতে অবস্থানরত বাসিন্দাদের শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনার লক্ষ্যে ৮ শত পরিবারের মাঝে সোলার বিতরন করা হচ্ছে। মুজিব বর্ষে দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার।

এ ব্যাপারে দ্বীপে সোলার বিতরণে দায়িত্বে থাকা ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোঃ লিমিটেডের আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মোঃ নরুল ইসলাম জানান, মুজিব বর্ষে ওজোপাডিকোর আওতাধীন মনপুরা বিদ্যুৎ সরবরাহের অধীনস্থ চর কলাতলীতে সোলার হোম সিস্টেমের মাধ্যমে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনার লক্ষ্যে ৮ শত জনের তালিকা করে সোলার বিতরন করা হচ্ছে।
ওই দ্বীপে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনার লক্ষ্যে আরো সোলার দরকার আছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি জানান, অব্যশই আরো সোলার দরকার আছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হচ্ছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।