ভূমধ্যসাগর প্লাস্টিক বর্জ্যের ভাগাড়

(ভূমধ্যসাগরে একটি প্লাস্টিক বোতলকে আকড়ে ধরে রেখেছে অক্টোপাস)

আগামী ২০ বছরে ভূমধ্যসাগরের জীববৈচিত্র্যের ভয়ানক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদেরা। প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্য কনজারভেশন অব নেচার’ (আইইউসিএন)-এর গবেষণায় নানা তথ্য উঠে এসেছে। জানা গেছে, প্রতি বছর ২ লাখ ৩০ হাজার টন প্লাস্টিক ভূমধ্যসাগরে ফেলা হয় ! আগামী ২০ বছরে এই পরিমাণ দ্বিগুণ হতে পারে।
জানা গেছে, মিশর, ইতালি ও তুরস্কই ভূমধ্যসাগরে সব চেয়ে বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলে। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, এই দেশগুলির বিপুল সংখ্যক মানুষ উপকূলের বাসিন্দা। এ ছাড়া বর্জ্য অব্যবস্থাপনা তো আছেই। তবে, জনসংখ্যার মাথাপিছু হিসাবে মন্টেনেগ্রো, আলবেনিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ও মেসিডোনিয়াই সব চেয়ে বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য ভূমধ্যসাগরে ফেলে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমধ্যসাগরে বছরে ২ লাখ ২৯ হাজার টন প্লাস্টিক ফেলা হয়। এর ৯৪ শতাংশই বর্জ্য অব্যবস্থাপনার অভাবে ভূমধ্যসাগরে ফেলা হয় বলে খবর। পরিবেশবিদেরা মনে করছেন, ২০৪০ সালের মধ্যে ভূমধ্যসাগরে প্রতি বছরে পাঁচ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলা হবে।
আইইউসিএনের সমুদ্রবিষয়ক প্রকল্পের পরিচালক মিনা এপস সতর্ক করেন, প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণে যে দূষণ হচ্ছে, তাতে বিপুল ক্ষতি হচ্ছে সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থানের। দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হচ্ছে জীববৈচিত্র্যের। সাগরে ফেলা প্লাস্টিক বর্জ্যে সামুদ্রিক প্রাণী আটকে পড়তে পারে। অনেক সময় সামুদ্রিক প্রাণীরা এ সব গিলেও ফেলে। এর ফলে তাদের মৃত্যুও হতে পারে।
আইইউসিএনের গবেষণা বলছে, বিশ্বের যেসব শহর সমুদ্রে প্লাস্টিক বর্জ্য দূষণের জন্য দায়ী, সেই সব শহরের মধ্যে প্রথম ১০০টি শহর যদি তাদের বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করে, তবে ভূমধ্যসাগর বাঁচতে পারে! এর ফলে অন্তত ৫০ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলা এড়ানো যাবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।