ভোলায় স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ
ভোলার সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নে যৌতুকের দাবিকৃত টাকা না পেয়ে দীর্ঘদিন ধরে গৃহবধূকে অমানবিক নির্যাতন ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে নির্যাতিতার স্বামী ও তার পরিবারের উপর।
নির্যাতিত গৃহবধূ ও তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পরিবারের সম্মতিতে প্রায় ১২ বছর আগে সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের নয়ার চর গ্রামের মৃত আনিচ মালের ছেলে আব্দুস সাত্তার এর সাথে বিয়ে হয় ভেলুমিয়ার ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের চরগাজী গ্রামের মৃত খোরশেদ আলমের মেয়ে ওই গৃহবধূর নাম লাইজু বেগম। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই বিভিন্ন কাজের কথা বলে বিভিন্ন সময় যৌতুকের টাকা দাবি করেন আব্দুস সাত্তার ও তার পরিবার এবং নানা সময়ে চাঁপ দিতে থাকে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ৭০ হাজার টাকা দেয় ওই নির্যাতিত গৃহবধূর পরিবার।
নির্যাতিত গৃহবধূর অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে নানা অযুহাতে টাকার দাবিতে এলোপাথাড়ি মারধর করে। বিয়ের পর থেকে কোন না কোন বিষয়ের কথা বলেই মারধর করতো।এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যক্তি চেয়ারম্যান মেম্বার সহ কয়েকবার ফয়সালা করে দিয়েছেন। কিছুদিন পর আবার তার কর্মস্থলে (চট্টগ্রাম) এক নারীর সাথে সম্পর্ক করে, আমি কিছু বলতে গেলে বাড়িতে কোন টাকা পয়সা পাঠায়না এবং বলে আমাকে নাকি সে রাখবেনা, তালাক দিয়ে দিবে। এমতাবস্থায় ২৪ অক্টোবর শনিবার রাতে আনুমানিক ১১ ঘটিকার সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমাকে এলোপাথাড়ি মারধর করে পিটিয়ে ফুলা যখম করে। সাথে তার দুই ভাই (আমার দেবর) ও আমাকে মারধর করে। এক পর্যায়ে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আমার ছেলে (১১ বছর) বড় ঘরে নিয়ে দরজা আটকিয়ে দেয়। আমি আর কিছুই বলতে পারিনা। পরে কোন রকমে আমার মা খবর পেয়ে আমাকে ২৫/১০/২০২০ইং তারিখ সকাল আনুমানিক ৮টার সময় ভোলা সদর হাসপাতালে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ৫ নং বেডে ভর্তি করে, সেখানে এখন চিকিৎসাধীন আছি।
লাইজু বেগম এর মা রাহিমা বেগম জানান, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে আসছে জামাই। মেয়ের সুখের জন্য আমি ১ টি গরু দেই, যার মূল্য ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা এবং তিনটি ছাগল দেই যার মূল্য আনুমানিক ২০ হাজার টাকা। এছাড়াও ৩২ শতাংশ জমি কিনে দেই তাদের নামে। তারপরও মেয়ের সুখ হয়নি। স্বামীর নির্যাতন অব্যাহত ছিলো। শনিবার রাতের ঘটনা আমি শুনে লোক মারফত আমার মেয়েকে নিয়ে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করাই।
অভিযুক্ত স্বামী আব্দুস সাত্তার এর সাথে টেলিফোনে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং বলেন সামান্য কিছু সংসারে হয়েই থাকে। এ ব্যাপারে ভোলা থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।