নুরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ॥ ছাত্র অধিকার পরিষদের নতুন কমিটি

ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে একই সংগঠন ২২ সদস্যবিশিষ্ট নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। এসময় আগের বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নামেই তারা নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং নতুন কমিটির আহ্বায়ক এ পি এম সুহেল বলেন, মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে সরে গিয়ে মানুষের আবেগ ও বিশ্বাস নিয়ে নোংরা রাজনীতি, আর্থিক অস্বচ্ছতা, স্বেচ্ছাচারিতা, অগণতান্ত্রিকভাবে সংগঠন পরিচালনা, ত্যাগী ও দুঃসময়ের সহযোদ্ধাদের মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে অবমূল্যায়ন করা এবং সম্প্রতি ঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণের মামলাকে নোংরা রাজনীতিকীকরণের অপচেষ্টার প্রতিবাদে ও সাংগঠনিক সংস্কারের উদ্দেশ্যে আজকের সংবাদ সম্মেলন।
তিনি বলেন, ডাকসুর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাড়াহুড়ো করে রাজনীতি করার অভিপ্রায়ে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ, শ্রমিক অধিকার পরিষদ ও প্রবাসী অধিকার পরিষদ নামে তিনটি অঙ্গ সংগঠন তৈরি করা হয় ছাত্র অধিকার পরিষদ এর উদ্যোগে, যেখানে এসব সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এখন পর্যন্ত অজানা আমাদের কাছে। এর ফলে সংগঠনের অভ্যন্তরে চাপা ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয় ও এর বিরোধিতা করে সংগঠনের তৃণমূল থেকে শীর্ষস্থানীয় নেতারা। কিন্তু একক সিদ্ধান্তে রাজনীতি করার প্রক্রিয়া শুরু হয় যা একপ্রকার স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত এবং সেই সাথে চরম বিরোধ সৃষ্টি করে সংগঠনের অভ্যন্তরে। বিভিন্ন কারণে তরুণদের রাজনীতি বিমুখতায় তারুণ্য নির্ভর এ দলের আত্মপ্রকাশ সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু গণমানুষের কথা বলে সাধারণ মানুষের আবেগকে পুঁজি করে, মুখের আড়ালে মুখোশ পরে আছে ভয়ঙ্কর কিছু সত্য, যা সংগঠনের প্রায় সবাই জানে কিন্তু প্রকাশ করতে চায় না।
কমিটির সদস্য সচিব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ইসমাইল সম্রাট বলেন, ভয়াবহতা এতটাই প্রকট হয়েছে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণের মামলাকে রাজনীতিকীকরণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিক্টিমকে নোংরাভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, যেখানে সংগঠনের ৮০ ভাগ সহযোদ্ধা এই বিষয়ে জানে এবং সমাধানের প্রক্রিয়ায় অনেকেই অংশ নিয়েছেন। এই মামলাটা তখনই রাজনৈতিক মামলা হতো যদি সংগঠনের সবাই এটা অনেক আগে থেকে না জানতো। এপিএম সুহেলকে বহিষ্কার ঢাবি সিন্ডিকেটের একক সিদ্ধান্ত ছিল, কেন্দ্রীয় কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। ঢাবি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে তখনই সবাই মিলে একত্রিত প্রতিবাদ জানিয়েছিল এবং সেই ষড়ন্ত্রমূলক বহিষ্কারাদেশকে বুড়ো আঙ্গুল দেখায়।
তিনি আরও বলেন, সবকিছু বিবেচনা করে নুর, রাশেদদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে আমাদের আগের নাম ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ এর মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে চলমান সব অনিয়ম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে একটি বৈষম্যমুক্ত সুখী, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে এবং সারা বাংলাদেশের ছাত্র সমাজকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করলাম।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।