সর্বশেষঃ

চরফ্যাশনে ধর্ষণ চেষ্টাকারীর গোপনাঙ্গ কেটে বিপাকে গৃহবধূ !

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ভাষানচর গুচ্ছ গ্রামে সর্বস্ব হারানো এক গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন মো. নইম নামের এক ব্যক্তি। পরে সম্ভ্রম বাঁচাতে তার গোপনাঙ্গ কেটে দেন ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় শশীভুষণ থানায় একটি ধর্ষণচেষ্টা মামলা হলেও আসামিকে গ্রেপ্তার করছে না পুলিশ। উল্টো ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন নইম। শুধু তাই নয়, পুলিশের চোখ এড়িয়ে তার লোকজন নির্যাতিত গৃহিণী ও ঘটনার সাক্ষীদের এলাকা ছাড়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। এতে নিরাপত্তহীনতায় ভুগছেন ওই গৃহবধূ ও তার পরিবার।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, নদী ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে এক বছর আগে ভাষানচর গুচ্ছ গ্রামে আশ্রয় নেন নির্যাতিত গৃহবধূ ও তার পরিবার। গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে ওই গৃহবধূর ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা নইম। এ ঘটনায় পরদিন তাকে শশীভুষণ থানায় মামলা করা হয়। কিন্তু প্রথমে চরফ্যাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়ও নইমকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।
পুলিশের ভাষ্য, নইম সুস্থ্য হয়ে ফিরে এলে গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। তবে জানা গেছে, আহত হলেও নইমের নির্দেশে তার বাবা আজম আলী সরদারের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা নির্যাতিতাকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে।
ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে হামলা চালিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন আজম আলী ও তার লোকজন। পাশাপাশি আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। মানুষের মল-মূত্র এনে ঘরের সামনে ফেলে যাতায়াতে বাঁধা সৃষ্টি করছেন। এতে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
নির্যাতনের শিকার ওই নারী জানান, হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানোয় তিনি শনিবার শশীভুষণ থানায় একটি সাধারণ ডায়রিও (জিডি) করেছেন। ধর্ষণচেষ্টার ঘটনার সাক্ষীদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে নইমের বাবা আজম আলী সরদারের বিরুদ্ধে।
সূত্রে আরো জানা গেছে, চরফ্যাশন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ১ অক্টোবর একটি মামলা দায়ের করেছেন আজম আলী। এতে তিনি নির্যাতিতা গৃহবধূ ও সাক্ষীসহ ৯ জনকে আসামি করেন। মামলার এজাহারে তিনি নইমকে ডেকে নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আসামিরা তার যৌনাঙ্গ কেটে দিয়েছেন, বলে উল্লেখ করেছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, নইমের বাবা আজম আলী যে মামলা দায়ের করেছেন, তা ভিত্তিহীন। নির্যাতিত গৃহবধূ ও ঘটনার সাক্ষীদের হয়রানি করতেই মিথ্যা অভিযোগে মামলা করা হয়েছে বলে দাবি তাদের।
এদিকে, ‘নইম সুস্থ্য হয়ে ফিরে এলে গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হবে’-এ বিষয়টি সম্পর্কে জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেছেন, আসামি পলাতক রয়েছেন। তাকে খুঁজতে ভোলা-বরিশালের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকের তথ্যাদি নেওয়া হয়েছে, কিন্তু পাওয়া যায়নি। ঢাকার হাসপাতাল ও ক্লিনিকে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। আসামি নইমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যহত আছে। পাশাপাশি হুমকিদাতাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ চেষ্টা করছে বলেও পুলিশ সুপার জানান।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।