ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ-স্লোগানে উত্তাল রাজপথ

দীর্ঘদিনের বিচারহীনতায় নারী-শিশু ধর্ষণ, নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির ঘটনা বেড়েই চলেছে। এসব ঘটনায় রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা লোকজন জড়িত। নোয়াখালীর ওই ঘটনা ৩২ দিন আগের। এতদিন রাষ্ট্র, এই সরকার কী করেছে? এভাবে আর চলতে পারে না। এবার রাস্তায় নেমে আসতে হবে। নোয়াখালীতে গৃহবধূকে নির্যাতনসহ সারাদেশে সংঘটিত ধর্ষণ-নিপীড়নের ঘটনায় বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন সম্মিলিত ছাত্র-জনতা। সেখানে বক্তারা এসব কথা বলেন। এদিকে রাজধানীর উত্তরা ও নারায়ণগঞ্জে বিক্ষোভ কর্মসূচির খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও খোদ নোয়াখালীতে বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করার খবর পাওয়া গেছে।
সোমবার (৫ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ও প্রগতিশীল ছাত্রজোটের আহ্বানে গণঅবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়ে শাহবাগ ও জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন তারা। জাতীয় জাদুঘরের সামনে ও শাহবাগ মোড় অবরোধ করে স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা।
জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সমাবেশে নেত্রকোনার নেত্রী মাকসুরা আক্তার বলেন, ‘রাস্তায় নেমে আসতে হবে। সরকারকে জানান দিতে হবে এভাবে আর চলতে পারে না। এই সরকারের কাছে মা-বোন সুরক্ষা পাচ্ছেন না। কেন আমার মা-বোনরা একে একে ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন, শ্লীলতাহানির শিকার হচ্ছেন। ধিক্কার ধিক্কার এই সরকারকে। এ সময় ‘এই ধর্ষক রাষ্ট্র, এই ধর্ষক সরকার চাই না’, ‘যে সরকার ছাত্রলীগ, যুবলীগ পালে সেই সরকার চাই না’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয় শাহবাগ।
বিক্ষোভ সমাবেশে শ্রমিক অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমরা ধর্ষিত হয়েছি ২০১৮ সালের নির্বাচনেও। সে সময় সুবর্ণচরে নারী ধর্ষণের ঘটনার বিচার হয়নি। দীর্ঘদিনের বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে এই রাষ্ট্রে ধর্ষণ-শ্লীলতাহানির বিচার হয় না।’

ছাত্র অধিকার পরিষদ নেতা শহীদুল হক বলেন, ‘প্রতিবারই আমরা বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামি, তারপর টনক নড়ে। এবার নোয়াখালীর নারী ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ৩২ দিন আগের। এতদিন কিছুই হয়নি জড়িতদের। যখন বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় আসে, প্রতিবাদ শুরু হলো তখন টনক নড়ল। ধর্ষক গ্রেফতার হলো। এই গ্রেফতারদের ছবি কাদের সাথে দেখা যায়, সরকারদলীয় লোকজন, স্থানীয় এমপির সাথে। আমরা মানবিক রাষ্ট্র চাই। মা-বোনের সম্ভ্রম রক্ষায় মানবিক পুলিশ চাই।’ তিনি বলেন, ‘এই ক্ষমতা বেশিদিন থাকবে না। ওয়াদা করছি, গুম-খুন-ধর্ষণের সরকারকে আমরা টেনে নামাব।’
ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক রহমান বলেন, ‘ধর্ষণের প্রোগ্রামে হামলা এর চেয়ে বড় দুঃখজনক আর হতে পারে না। আমরা ধর্ষণের প্রতিবাদ করি আর আমাদের বিভিন্ন মামলা-হামলার হুমকি দেয়। আজ নারায়ণগঞ্জে আমাদের প্রতিবাদ সমাবেশে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। যে জন্য সারাদেশের এমন কোনো গ্রাম নেই যেখানে কোনো ধর্ষকের বিচরণ নেই।
শাহবাগে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখছেন। ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীরা চার রাস্তার মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন। ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মুহুর্মুহু স্লোগান দিচ্ছেন তারা। তাদের অভিযোগ, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের দলীয় কর্মীরা এসব ধর্ষণের ঘটনা ঘটাচ্ছে। গত দুই মাসে সরকারদলীয় কর্মীরা কমপক্ষে ১৫টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে। বিচার না হওয়ায় তারা একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে চলছে।
এদিকে শাহবাগ মোড়ে ধর্ষণবিরোধী গণসমাবেশ অবস্থান করায় গণপরিবহন চলাচলে বিঘœ ঘটে। গণপরিবহন চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়নি। গণসমাবেশের আশপাশে পুলিশ অবস্থান গ্রহণ করলেও বাধা দিচ্ছে না। সুত্র : জাগো নিউজ।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।