বন্যার ক্ষতি কাটাতে সাড়ে ৮২ কোটি টাকার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে- কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক

তিন দফা বন্যায় গত কয়েক মাসে এক হাজার ৩২৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে এবং এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ৮২ কোটি ৫৪ লাখ টাকার পুনর্বাসন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আজ বুধবার (১৯ আগস্ট) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কৃষিমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, গত কয়েক মাসে তিন দফার বন্যায় ৩৭টি জেলায় সবমিলিয়ে এক হাজার ৩২৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। দুই লাখ ৫৭ হাজার ১৪৮ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। এর মধ্যে এক লাখ ৫৮ হাজার ৮১৪ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় ১২ লাখ ৭২ হাজার ১৫১ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবছর বর্ষা ঋতুতে খরিপ-১ ও খরিপ-২ মৌসুমে অতিঝড়, বন্যা, পাহাড়ি ঢলের কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন ধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এবার বন্যায় ফসলের জমি প্লাবিত হয়। এ বছর বন্যার পূর্বাভাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাসহ সকলেই ছিলেন সতর্ক। ফসলের ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য কৃষককে দেওয়া হয়েছিল প্রয়োজনীয় পরামর্শ।’
ড. রাজ্জাক বলেন, এবার ৩২ হাজার ২১৩ হেক্টর জমির ৩৩৪ কোটি টাকার আউশ ধান, ৭০ হাজার ৮২০ হেক্টর জমির ৩৮০ কোটি টাকার আমন ধান এবং সাত হাজার ৯১৮ হেক্টর জমির আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ২৩৫ কোটি টাকার সবজি এবং ২১১ কোটি টাকার পাটের ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষকদের মধ্যে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি বিভিন্ন সবজি চাষের জন্য বিনামূল্যে বীজ বিতরণ, কমিউনিটি ভিত্তিক বীজতলা তৈরির মাধ্যমে চারা উৎপাদন ও বিনামূল্যে বিতরণ, ভাসমান বেডে ধানের চারা উৎপাদন ও বিনামূল্যে বিতরণ, রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে রোপণের জন্য ট্রেতে নাবী জাতের আমন ধানের চারা উৎপাদন ও বিনামূল্যে বিতরণ এবং মাসকলাই বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, এরইমধ্যে প্রায় ১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচি হিসেবে দুই লাখ ৩৯ হাজার ৬৩১ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে বিতরণ শুরু হয়েছে জানিয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আরো প্রায় ৬৫ কোটি টাকার কর্মসূচি প্রক্রিয়াধীন। এই অর্থ দিয়ে ৯ লাখ ২৯ হাজার ১৯৪ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে গম, সরিষা, চিনাবাদাম, সূর্যমুখী, খেসারি, পেঁয়াজ, মরিচ, টমেটো ইত্যাদি ফসল আবাদের জন্য বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা হবে।