বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা বসারত উল্ল্যা চৌধুরীর পুত্র সাবেক সচিব নাজিমউদ্দিন চৌধুরীর বিষয়ে অপপ্রচারকারীদের শাস্তি দাবি করেছে ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলা ও ঢালচর গ্রামের বাসিন্দারা। ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে ঢালচর গ্রামে জনদরদী বলে পরিচিত নাজিম চৌধুরীর পরিবারের প্রতি ঈর্ষার বশে সম্প্রতি একটি মহলের কাল্পনিক অপপ্রচারের বিরুদ্ধে জোর প্রতিবাদ জানান তারা।

মনপুরা এক নম্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন হাওলাদার জানান, নাজিমউদ্দিন চৌধুরীর বাবা মরহুম বসারত উল্ল্যা চৌধুরী ঢালচরে ১৯৫৬ সালে ডেম্পিয়ার এগ্রিকালচার ও ডেইরী ফার্ম লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। তখন থেকেই এ প্রতিষ্ঠান উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও পশুপালন করে আসছে। নাজিমউদ্দিনের বিরুদ্ধে চর দখলের অভিযোগ যে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, তার প্রমাণ মনপুরা উপজেলার ভূমি অফিসে রক্ষিত সরকারি রেকর্ডেই পাওয়া যায়।

ঢালচরের অধিবাসী বেলায়েত সরকার বলেন, ‘আঙগো বড়ো ছার (নাজিমউদ্দিন চৌধুরী) ম্যালা ভালা মানুষ, স্কুল করছে, ডাক্তারখানা করছে। আঙগো ছার সোনার পদক পাওইন্যা মানুষ। মাছ পালে, মহিষ পালে, ওহানে আঙগো ম্যালা লোক কাম করে। হেইরাম মাইনষেরে যারা খারাপ কয়, হ্যাগো বিচার হওনের কাম।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায় নাজিম চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলটিই ঢালচরের একমাত্র স্কুল যা গত কয়েক বছর ধরে সমগ্র মনপুরা উপজেলার পিইসি ও প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় সবচেয়ে ভালো ফলাফল করে আসছে।

এ প্রসঙ্গে নাজিমউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্যকর্মী ছিলেন, তিনি একজন স্বনদপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। পাাকিস্তানি সমর্থকেরা মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের অধিকাংশ সম্পত্তি ধ্বংস করে দেয়। কাজেই ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের সহায়তায় ঢালচরের জমি দখল করার যে কাহিনী কেউ প্রচার করছেন, তা একইসাথে অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ২০১৫ সালে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানী বিভাগের সচিবের দায়িত্ব পাওয়ার পর আমি এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর সাথে কাজ করেছি, যিনি যোগ্যতার বিচারে আমার চাকুরীর মেয়াদও বৃদ্ধি করেছেন।

এদিকে মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুব আলম নিরব মোল্লা বলেন, নাজিমুদ্দিন চৌধূরীর বাবা বশরতউল্যা চৌধূরী মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছেন, যার সাক্ষ্যি মুজিব বাহিনীর সকল নেতাগণ। আমি টাকি ক্যাম্পে ট্রেনিং নিয়ে তোফায়েল ভাইর সাথে কিছুদিন ক্যালকাটার ভবানীপুর সানি ভিলার চিত্তরঞ্জন সুতারের বাসায় অবস্খান কালীন সময়ে জনাব চৌধূরী সাহেবকে সেখানে তোফায়েল ভাই, রাজ্জাক ভাই, সিরাজুল আলম খান সাহেবদের সাথে একই রুমে অবস্খান করতে দেখি . তিনি তার নিজস্ব জিপ এবং নগদ অনেক টাকা দেশের মুক্তির কাজে ব্যাবহার করার জন্য দিয়ে দেন। অথচ কি মিথ্যাচার তার সম্পর্কে কালেরকন্ঠ নামক একটি পত্রিকায় তার সম্পর্কে করা হয়েছে যা অত্যন্ত দু:খ ও লজ্জা জনক। বরশতউল্যা চৌধূরী ব্যাক্তিগত ভাবে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ একজন মানুষ ছিলেন ১৯৭০ ভয়াল জলোশ্যাসের পর বঙ্গবন্ধু মনপুরায় বরশতউল্যা চৌধূরীকে খালিগায় দেখে, তার নিজের গায়ের চাদর দিয়ে জড়িয়ে ধরেন। নাজিমুদ্দিন চৌধূরীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করতে গিয়ে এই মহান মৃত মানুষটির সম্পর্কেও মিথ্যাচার করা হয়েছে যা অত্যন্ত কষ্টদোয়ক। মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী জননেত্রি শেখহাসিনা ও তাদের পারিবারিক আত্বীয় বলে জানি। আমরা এহেন ঘৃনিত মিথ্যাচারের প্রতিবাদ জানাই।

উল্লেখ্য, নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বর্তমানে বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্ট ফেডারেশনের সভাপতি এবং বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।