চরফ্যাশনে এক শিক্ষককে অব্যহতি না দিয়ে নতুন শিক্ষক নিয়োগের পায়তারা
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলাধীন নীলকমল ইউনিয়নের চর যমুনা গ্রামের শ্রী শ্রী হরি মন্দির শিক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র শিক্ষক নুপুর রানীকে না জানিয়ে, অব্যহতি না দিয়ে এবং জোড়পূর্বক নতুন শিক্ষক নিয়োগ করার পায়তারা চলছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষক নুপুর রানী গত ১লা জানুয়ারী ২০১২ইং থেকে চরফ্যাশন উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের চর যমুনা গ্রামের শ্রী শ্রী হরিমন্দির শিক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। গত মার্চ মাসে করোনার প্রভাবের কারণে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ওই শিক্ষা কেন্দ্রটিও এখনও বন্ধ রয়েছে। এরই মধ্যে কেন্দ্র শিক্ষক নুপুর রানী’র বিয়ে হয়। এরই সুযোগে কর্তৃপক্ষ গত মে ও জুন মাসের ভাতা বন্ধ করেন দেন। তিনি এডি বাপ্পি দেবনাথ এর কাছে অনুরোধ করার পর তার দু’মাসের সম্মানি ভাতা ফিরে পান। কিন্তু নুপুর রানী’র বিয়ে হয়েছে এই অযুহাত দেখিয়ে ওই মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক সুমন চন্দ্র নুপুরকে না জানিয়ে তাঁর স্ত্রীকে নুপুরের স্থানে চাকুরী দেওয়ার সকল বন্দবোস্ত করেন। বিষয়টি নুপুর জানতে পেরে এডিকে অবহিত করলে তিনি বলেন, মন্দির কমিটির রেজুলেশনে আপনাকে বাদ দেয়া হয়েছে, তাই নতুন করে শিক্ষক নিচ্ছি।
উপায়ন্তর না পেয়ে গত ১৬ আগষ্ট ২০২০ইং তারিখে প্রকল্প পরিচালক মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ১/আই, পরিবাগ, শাহবাগ, ঢাকা বরাবর একখানা দরখাস্ত করেন, যার অনুলিপি জেলা প্রশাসক এবং ভোলার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রেরণ করেন।
এদিকে মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুমন চন্দ্র (০১৭১৯-০১৭১৮৪) জানান, নুপুর রানী’র বিয়ে হয়ে গেছে। তাই তিনি শিক্ষকতা করতে পারছেন না। যার কারণে আমরা কমিটির সকল সদস্যদের উপস্থিতিতে রেজুলেশনের মাধ্যমে তাকে (নুপুর) কে বাদ দিয়ে নতুন শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া করছি।
একজনকে অব্যহতি না দিয়ে আপনার স্ত্রীকে কিভাবে নিয়োগ দিচ্ছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, নিয়ম প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তাকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এক দিন টানিয়েছি।
মন্দির কমিটির সভাপতি অটল কবিরাজ (০১৭৪২-৫৭৩৩৬২) বলেন, অফিস এবং সাধারণ সম্পাদক কি করেন তা আমি জানি না। নুপুর রানী কি চাকুরী ছেড়ে দিয়েছে, না কি অব্যাহতি দিয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি কিছুই জানি না, সবকিছু সাধারণ সম্পাদক জানেন। নুপুর রানী বিয়ের কারণে এলাকায় অনুপস্থিত ছিলেন কি না এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কখনও অনুপস্থিত ছিলেন না। সব সময়ই এলাকায় উপস্থিত ছিলেন।
মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম ভোলা শাখার এডি বাপ্পি দেবনাথ (০১৭২৩-২৮৭৮৮৮) জানান, মন্দির কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। কে অব্যাহতি দিবে, আর কে নিবে এটা কোন বিষয় না। কমিটির রেজুলেশন পেলেই আমরা পরবর্তী কার্যক্রম নিতে পারি। কেন্দ্র শিক্ষক নুপুর রানী অব্যহতি নিয়েছেন কিনা সেটা মন্দির কমিটি জানে। আমরা যথারীতি গত শুক্রবার ১৪/০৮/২০২০ইং তারিখে শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে পরীক্ষাও নিয়েছি। এ ব্যাপারে আরো কিছু জানার থাকলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করতে পারেন।