সর্বশেষঃ

জলদস্যু আতংকে পারমিশন কার্ড সংগ্রহ করছে হাজারো জেলে

মনপুরার ঢালচরের পুলিশ ক্যাম্প সরিয়ে নেওয়ার গুঞ্জন

ভোলার মনপুরার ঢালচরের পুলিশ ক্যাম্প সরিয়ে নেওয়ার গুঞ্জনে হাজার হাজার ইলিশ জেলেদের মধ্যে জলদস্যু আতংক বিরাজ করছে। এই ক্যাম্প উঠিয়ে নেওয়ার গুঞ্জনকে পুঁজি করে হাতিয়ার জলদস্যু মহিউদ্দিন বাহিনী জেলেদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে নদীতে মাছ ধরার পারমিশন কার্ড সংগ্রহ করতে। এতে জেলেরা দিশেহারা হয়ে কার্ড সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এনিয়ে জেলে ও আড়তদাররা স্থানীয় নের্তৃবৃন্ধসহ চেয়ারম্যানদের কাছে ধরনা দিচ্ছে প্রতিনিয়ত।
জলদস্যুদের ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভিন্ন মৎস্য ঘাটের কমপক্ষে ৫০ জন জেলে জানান, শুনেছি ঢালচরের পুলিশ ক্যাম্প সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ ক্যাম্প সরিয়ে নেওয়া হলে মেঘনায় মাছ শিকার করা যাবেনা। তাই বাধ্য হয়ে হাতিয়ার জলদস্যু মহিউদ্দিন বাহিনীর কাছ থেকে মেঘনায় মাছ ধরার কার্ড সংগ্রহ করেছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, অনেকে নিজেদের মাছ ধরার নৌকায় মহিউদ্দিন বাহিনী থেকে সংগ্রহ করা পারমিশন কার্ড ‘আল্লাহর দান’ নৌকার সামনে বুটপিন দিয়ে আটকিয়ে রেখেছে। আবার অনেকে ‘আল্লাহর দান’ কার্ডটি ল্যামেনেটিং করে নিজেদের কাছে রাখছে।
জেলেদের তথ্যে জানা যায়, হাতিয়ার জলদস্যু মহিউদ্দিন নিজেই ফোন করে কার্ড সংগ্রহ করতে বলে। এতে স্থানীয় কিছু জেলে ওই দস্যু বাহিনীকে সহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ সাধারন জেলেদের। বড় মাছ ধরার নৌকা দশ হাজার টাকা ও ছোট মাছ ধরার নৌকার জন্য পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে দস্যু বাহিনীর কাছ থেকে পারমিশন কার্ড সংগ্রহ করতে হয়। রাতে-দিনে মেঘনায় মাছ শিকারের সময় ওই কার্ড দেখালে দস্যু বাহিনী ছেড়ে দেয়।
অনেক জেলে টাকার অভাবে জেলে কার্ড সংগ্রহ করতে না পারায় ভয়ে ভয়ে মাছ শিকার করছে। তাদের ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে প্রতিনিয়ত হুমকী দিচ্ছে বলে জানান তারা। জলদস্যুদের কাছ থেকে জেলে কার্ড সংগ্রহ করবে কিনা এমন প্রশ্নে দরিদ্র অসহায় জেলেরা জানান, পুলিশ ক্যাম্প নিয়ে যাচ্ছে, কি আর করার সুদের উপর টাকা নিয়ে পারমিশন কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। তানাহলে পরিবার-পরিজন নিয়ে কি খাবো।
মৎস্য আড়তদার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান অলি উল্লা কাজল ও আড়তদার হাজিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান শাহরিয়ার চৌধুরী দীপক জানান, ঢালচরের পুলিশ ক্যাম্প সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এমন গুঞ্জনে জেলেরা আতংক হয়ে পড়েছে। এই সুযোগে জলদস্যু বাহিনী জেলেদের চাপ দিয়ে কার্ড সংগ্রহ করতে বলছে। জেলেরাও জলদস্যুদের কাছ থেকে কার্ড সংগ্রহ করছে। পুলিশ ক্যাম্প উঠিয়ে নিলে জলদস্যুরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠবে। এতে বিপদে পড়বে হাজার হাজার জেলেরা।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান শেলিনা আকতার চৌধুরী জানান, ঢালচরের পুলিশ ক্যাম্প সরিয়ে নেওয়া হলে জলদস্যু আতংকে থাকবে জেলেরা সহ ঢালচরের বসবাসরত জনগণ। তাই ঢালচরে পুলিশ ক্যাম্প না সরানো দাবী করছেন তিনি।
এ ব্যাপারে ভোলা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, জেলেদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আপাতত ঢালচরের পুলিশ ক্যাম্প সরানো হচ্ছে না।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।