ভোলায় জমি ক্রয় করে বাড়ি তৈরী করায় সংখ্যালঘুর নির্যাতনের শিকার এক স্কুল শিক্ষক

ভোলা সদর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড আবহাওয়া অফিস সড়কে এক সংখ্যালঘুর জমি ক্রয় করে বাড়ি তৈরী করায় নানা পন্থায় নির্যাতনের শিকার হয়ে পড়েছে স্কুল শিক্ষক দম্পতি। এক হিন্দু পরিবারের জমিতে বাড়ি করায় অপর হিন্দু পরিবারের প্রতিহিংসার আক্রোশের কবলে পড়েছে ওই শিক্ষক পরিবারটি। সংখ্যালঘু বলে কথা ! টাকা দিয়ে ক্রয় করা জমিতে বাড়ি করে প্রকাশ্যে হুমকী ধামকী ও নানা অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করতে হচ্ছে। প্রতিবাদ মূলক উচ্চ বাচ্চ্য করলেই সংখ্যালঘু নিপীড়নের অভিযোগের তীর তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে তাদেরকে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভোলা সরকারি বালক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আহসান কবির ও তার স্ত্রী জিয়া আদর্শ বালিকা স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষিকা নূরুন নাহারের কাছে, ২০০৯ সালে আবহাওয়া অফিস রোড, জিয়া স্কুল এন্ড কলেজ সংলগ্ন সাধন বাড়ির মনোবিলাস চন্দ্র দে’র পুত্র জনৈক কার্তিক চন্দ্র দে তার পৈত্রিক সম্পত্তির বাড়ির ৩/১ অংশে থাকা মোট ২৮ শতাংশ জমি বিক্রি করে। শিক্ষকদ্বয় বাড়ির মধ্যে ৪ শতাংশ জমিতে বাড়ি করতে গিয়ে ওই সাধন বাড়ির অপর হিন্দু পরিবার নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। এ নিয়ে স্থানীয় কমিশনার ও এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিগন কয়েক দফা বিচার শালিশের মাধ্যমে মাপ ঝোপ করে তারা জমির বাড়ির কিছু অংশ বুঝিয়ে দেয়।


অপরদিকে, ক্রয়কৃত ২৮ শতাংশ জমির মধ্যে কার্তিক চন্দ্রের ২০ (কুড়ি) শতাংশ জমি ক’ তালিকায় থাকায় সম্পূর্ন জমি বুঝিয়ে দিতে পারেনি কার্তিক চন্দ্র দে। পরবর্তিতে ক্রেতা দুজন ভোলা যুগ্ম জেলা জজ আদালতে অংশ গ্রহন করে অর্পিত মোকদ্দমা নং ২১৩/১৪ এ ২৯/০১/২০১৮ ইং তারিখে রায় প্রাপ্ত হয়। পরে ২৫/১০/১৮ ইং তারিখে অর্পিত আপীল নং ১৬/২০১৮ এ ট্রাইব্যুনাল আপীল আদালতে রায় প্রাপ্ত হয়। উক্ত রায়ের ডিক্রি অনুবলে ভোলা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রেভিনিউ শাখার আদেশ ক্রমে উপজেলা ভূমি সহকারী কমিশনার ১৭.৫০ শতাংশ জমি তাদের (ক্রেতাদের) নামে রেকর্ড করে তার প্রতিনিধি দ্বারা সরেজমিনে বাপ্তা শক্তি সংঘ প্রাইমারী স্কুল সংলগ্ন উত্তর পাশের পুকুরটি মেপে বুঝিয়ে দিয়ে যান। যার স্মারক নং ৩১.১০.০৯১৮.০০০০.০০১.০২.১৯ -৮৯৫ তারিখঃ ২৩/০৯/২০১৯। পরে রায় অনুবলে শিক্ষক আহসান কবির ওই পুকুরে দির্ঘদিন ধরে মৎস্য চাষ করেন এবং পুকুরের পারে গাছ লাগিয়ে বেড়া দিয়ে পরিচর্যা করেন।


এদিকে শিক্ষক আহসান কবির বাড়ির জমির উপর আংশিক দ্বিতল ভবন নির্মান করে বসবাস করে আসছে। কিন্ত সাধন বাড়ির মধ্যে মুসলিম পরিবারের বসবাস কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারেনি হিন্দু পরিবারগুলো। শুরু করে নানা ফন্দিফিকির। জমি ক্রয়ে বাঁধা, বাসা তৈরীতে বাঁধা, চলাচলের রাস্তা ব্যবহারে প্রতিবন্ধকতা। এ যেনো প্রতিহিংসার খড়গ পোহাতে হচ্ছে তাদেরকে। বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ করতে গেলে তেরে এসে প্রকাশ্যে গালমন্দসহ হুমকী ধামকী দিয়ে আসছে।


গত ১৪ জুলাই মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ইর্ষান্নিত হয়ে অজ্ঞাত ব্যাক্তিরা রাস্তার পাশের পুকুর পারের গাছ গুলো বেড়া সহ ভেঙ্গে ফেলে। ইতিপূর্বেও অজ্ঞাত ব্যাক্তিরা পুকুর পাড়ের গাছ ভেঙ্গে তছনছ করে। এ ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় কমিশনারকে অবহিত করলে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ওই শিক্ষক পরিবারটি এ ধরনের হয়রানিমুলক ঘটনার প্রতিকার ও ক্রয়কৃত সম্পূর্ন জমির অংশ বুঝিয়ে পেয়ে শান্তি শৃঙ্খলা ভাবে বসবাস করতে পারে তার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেছেন ওই শিক্ষক দম্পতি।
এ বিষয়ে প্রতিপক্ষ হিন্দু পরিবারের সদস্যরা বলেন, তাদের সাথে আমাদের এমন কোন ঘটনা ঘটেনি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।