সর্বশেষঃ

জিজ্ঞাসাবাদে সদুত্তর দিতে পারেননি ডা. সাবরিনা

করোনা ভাইরাস পরীক্ষার নামে মনগড়া রিপোর্ট তৈরি করে সরবরাহের অভিযোগের বিষয়ে কোনো সদুত্তর মেলেনি জেকেজির চেয়ারম্যান ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জন সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর কাছে। জেকেজির সঙ্গে তার সম্পৃকতাসহ কোনো বিষয়েই আশানুরূপ উত্তর না পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। রোববার (১২ জুলাই) তাকে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে তেজগাঁও থানায় পাঠানো হয়েছে।

তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশিদ জানান, তদন্তে জেকেজির প্রতারণার সঙ্গে ডা. সাবরিনা আরিফের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। সোমবার (১৩ জুলাই) তাকে আদালতে পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, সাবরিনা একজন সরকারি কর্মকর্তা। তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জন। করোনা ভাইরাসের ভুয়া রিপোর্টের অভিযোগে জেকেজির গ্রেফতার করা কর্মকর্তারা সাবরিনার সংশ্লিষ্টতা আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন। আমরা বেশকিছু তথ্য-প্রমাণের অপেক্ষায় ছিলাম। আমাদের তদন্ত কর্মকর্তা তার সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিচ্ছিলেন। সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

হারুন অর রশিদ আরো বলেন, এর আগে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার নামে জালিয়াতির অভিযোগে জেকেজির যেসব সদস্য গ্রেফতার হয়েছেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের সবাই বলেছেন সাবরিনাই জেকেজির চেয়ারম্যান। তাছাড়া তিতুমীর কলেজে জেকেজির বুথে হামলার অভিযোগ উঠলে সাবরিনাই প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র হিসেবে সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য দেন। অভিযানের একদিন আগে তিনি নিজে প্রতিষ্ঠান থেকে সরে যান। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তিনি কখনই কোনো প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। আবার সরে যেতেও পারেন না। এসব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্যও দিতে পারেন না।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কী তথ্য দিয়েছেন সাবরিনা জানতে চাইলে হারুন অর রশিদ বলেন, জেকেজির সঙ্গে সম্পৃকতার কথা অস্বীকার করেন। আমরা জিজ্ঞাসা করেছিলাম তিতুমীর কলেজে জেকেজির বুথে হামলার বিষয়ে গণমাধ্যমে আপনি প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র হিসেবে বক্তব্য দিয়েছিলেন কেন? তখন তিনি জানান, আমার স্বামী বলতে বলেছিল।

ডিসি হারুন বলেন, আবার তিনি ফেসবুকে স্বামীর সঙ্গে আলাদা থাকছেন দুই মাস ধরে এসবও লিখেছেন। আসলে আমাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে সাবরিনা তার দায় এড়াতে পারেন না। সোমবার সাবরিনাকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড আবেদন করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদের পর এ ঘটনায় আর কে কে জড়িত রয়েছেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানা সম্ভব হবে।

স্বামী আরিফুল গ্রেফতারের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের নাম বদলে রাখেন সাবরিনা মিষ্টি চৌধুরী। তাকে স্বামী আরিফুল নির্যাতন করতেন এমন অভিযোগও তোলেন।

জানা যায়, চিকিৎসা পেশার বাইরে তিনি ওভাল গ্রুপ লিমিটেড নামে একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মেরও চেয়ারম্যান ছিলেন। এর প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন সাবরিনার স্বামী আরিফুল হক চৌধুরী।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে করোনা ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করতো জেকেজি হেলথকেয়ার। কিন্তু তারা কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই ‘করোনার মনগড়া পজিটিভ-নেগেটিভ রিপোর্ট’ তৈরি করতেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।