ভোলার ঢালচরে বন বিভাগের জমি লীজ দেয়ার নামে চেয়ারম্যানের কোটি টাকা বানিজ্য

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচরের চর তাড়ুয়ার বনবিভাগের বিরান ভূমি চলছে লিজ দেয়ার চক্রান্ত। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোটি টাকা বানিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সর্বশান্ত হচ্ছে দরিদ্র পরিবার।
অভিযোগকারীদের অভিযোগে জানা যায়, সাগড়ের বুকে জেগে ওঠা এক নৈসর্গিক লিলাভূমি চর তাড়–য়া। চরটি জেগে উঠার পর থেকেই চরফ্যাশনের বন বিভাগ দুর্যোগ মোকাবেলায় চরটিতে বনায়ন প্রকল্প বাস্তায়ন করে। এক দিকে নদী, অপরদিকে বঙ্গপসাগর বেষ্টিত চরের বনায়নে বাসা বাধে নানা প্রজাতির পাখী। বনে আর ঢালুতে চিররণ করে লাল কাঁকড়া। দিনভর পাখিদের কলকাকলি আর লাল কাকড়ার সমারোহে প্রাকৃতিক এক নৈশ্ব্যর্গীক লীলাভূমি তৈরী করেছে তাড়ুয়া দ্বীপে। প্রাকৃতিক এই দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য্য যা দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভ্রমনে আকৃষ্ট করে তুলছে।

অপরদিকে ঝড়-দুর্যোগেও বিশেষ ভূমিকা রাখছে এই বন সম্প্রতি বন বিভাগের আওতাধীন চর তাড়ুয়ায় প্রায় ৪শ’ একর জমির বনায়ন বিভিন্ন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে বিরান ভূমিতে পরিনত হয়েছে। বনের ওই বিরান ভূমির উপর অশুভ দৃষ্টি পরে ওই এলাকার আব্দুস ছালাম চেয়ারম্যানের। তিনি বনের ওই জমিকে সরকারি খাস জমি হিসেবে চাউর করে। ওই চেয়ারম্যান অসহায় জেলেসহ বিভিন্ন মানুষকে জমি লীজ দেয়ার নামে কয়েক শত মানুষের কাছ থেকে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগীরা।


অপরদিকে চর নিজামের বাসিন্দারা অভিযোগ করে জানান, চর নিজামে ছালেম চেয়ারম্যনের নেতৃত্বে একটি ছালাম বাহিনী গড়ে উঠেছে। ওই বাহিনীর নেতৃত্বে চর তাড়ুয়ার মত একইভাবে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বনের জমি জোর দখল দেয়। তারা বিভিন্ন সময়ে অবৈধ ভাবে বনের ভিতর ঢুকে মাছ ও কাঁকড়া শিকার করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করছে। ফলে মারাত্মক ভাবে নষ্ট হচ্ছে বনের পরিবেশ।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান ছালাম অর্থ আদায়ের বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, সাবেক পরিবেশ, বন ও ভূমি উপমন্ত্রী ও বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার চর তাড়ুয়াটি পরিদর্শন করেছিলেন। তাড়ুয়া বনের ওই জমি সরকারি খাস জমি। আমি এসিল্যান্ড স্যারকে কাগজপত্র দিয়েছি। শীঘ্রই ওই জমির ম্যাপ তৈরী সহ আনুসাঙ্গিক কার্যক্রম শুরু করবে ভূমি অফিস। তিনি বলেন, বন কর্মকর্তাসহ আমরা এসিল্যান্ড অফিসে কাগজপত্র নিয়ে বসেছি। আমরা আমাদের কাগজপত্র দেখিয়েছি কিন্ত বন কর্মকর্তা প্রমান করতে পারেনি এটা তাদের জমি।
এ বিষয়ে বন কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, এই জমি বনের এবং সংরক্ষিত বন। বন্দোবস্ত দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা এ ব্যপারে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আপত্তি দিয়েছি।


জমি লীজ দেয়ার ব্যপারে চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, চর তাড়ুয়া বন কর্মকর্তারা ৩৪০ একর জমিতে কোনো গাছ লাগায় নাই। আমরা বন বিভাগের বাহিরে নই। বন নষ্ট হোক এটাও আমরা চাইনা। তবে নদী ভাঙ্গা দরিদ্র পরিবারদের পূনর্বাসনের জন্য ২৪০ একর জমি আমরা বন্দোবস্ত দেয়ার উদ্যেগ নিয়েছি। জমি দেয়ার নামে দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে চেয়ারম্যানের টাকা নেয়ার ব্যপারে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগই শুনি, কিন্ত কেউ স্বাক্ষী প্রমান নিয়ে আসেনা।
এ বিষয়ে ভোলা জেলা প্রশা সক মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, বনের জমি বন্দোবস্ত দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। সুষ্পষ্ট ও সঠিক অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।