সর্বশেষঃ

এমপির সাঙ্গোপাঙ্গর ছড়ানো মাদকে সয়লাব মানিকগঞ্জের তিন উপজেলা

মাদকের মদদদাতা এমপি দুর্জয়

বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন আব্দুল কুদ্দুস। ওই সময়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব চালিয়েছেন তিনি। কুদ্দুসের ভয়ে এলাকায় ঢুকতে পারত না আওয়ামী লীগের কেউ। পান থেকে চুন খসলেই তাদের ওপর চলত নির্যাতন। এরপর ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দলটির এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের আশীর্বাদ পেয়ে আব্দুল কুদ্দুস বনে যান দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। হয়ে ওঠেন আরো বেপরোয়া। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও গ্রামে ক্যাডার বাহিনী নিয়ে শুরু করেন মাদকের কারবার।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কয়েক বছর আগেও শান্ত পরিবেশের দৌলতপুর খেলাধুলা আর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে মুখর ছিল। আর এখন উপজেলার তরুণরা মাদকে বুঁদ হয়ে থাকে, সন্ধ্যা নামতেই এলাকার পাড়া-মহল্লায় বসে মাদক ও জুয়ার আড্ডা। আর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস নিজেই মাদক ও জুয়ার হোতা। পুলিশ গত ১২ মে মাদকসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে আব্দুল কুদ্দুসকে। দৌলতপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তানিয়া সুলতানাসহ পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে কুদ্দুসসহ এমপি দুর্জয়ের ক্যাডারদের আটক করে। কিন্তু কুদ্দুস আটকের পরই বিচলিত হয়ে উঠেন এমপি দুর্জয়। তাঁর সুপারিশে এবং তদবিরের কাছে অসহায় হয়ে কুদ্দুসকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দৌলতপুর থানা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আব্দুল কুদ্দুস একজন মাদক কারবারি এবং জুয়া খেলার কারিগর। তাঁকে হাতেনাতে মাদকসহ আটক করা হলেও ওপর মহলের চাপে থানা থেকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হই।’

এমপির তদবিরে ছাড়া পেয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন নব্য আওয়ামী লীগ নেতা কুদ্দুস। উপজেলায় এখনো জুয়া ও মাদকের রমরমা কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর ভাতিজা সুমন এবং ভাগ্নে রিপনও সরাসরি ইয়াবার কারবারে জড়িত। জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীদের দলে ভিড়িয়ে এলাকায় রমরমা মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছে এমপির লোকজন।

এমপি দুর্জয়ের শিবালয় উপজেলায় মাদক সন্ত্রাসে তাঁর আরেক ‘সৈনিকের’ নামও মো. আব্দুল কুদ্দুস। ওই দুজনের নামে যেমন রয়েছে মিল, রয়েছেন আওয়ামী লীগের একই পদে। তিনি শিবালয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। মাদক কারবার এবং সন্ত্রাসের অভিযোগ শিবালয়ের কুদ্দুসেরও বিরুদ্ধে। তাঁর ছেলে শিবালয় উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান মীমকে দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চালান মাদকের কারবার। বিশেষ করে গ্রামের বাড়ি অন্বয়পুরে মাদকের আস্তানা গেড়েছেন কুদ্দুস ও মীম। সেখান থেকেই পাইকারি বিক্রিসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন এবং গ্রামে চলে যাচ্ছে মাদক। শুধু দৌলতপুর আর শিবালয়ই নয়, ঘিওর উপজেলাও চলছে একইভাবে মাদকের কারবারি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এমপি দুর্জয়ের চাচা তায়েবুর রহমান টিপু, চাচাতো ভাই মাহাবুবুর রহমান জনি ও মাফুজুর রহমান অনি এবং শিবালয় উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আলী আহসান মিঠু ও জেলা যুবলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবুল বাশার সিন্ডিকেট তিনটি উপজেলায় মাদক কারবারসহ সব অপকর্ম নেপথ্যে থেকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। উপজেলার সাধারণ মানুষই নয়, আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ, এমপি দুর্জয়ের প্রত্যক্ষ মদদে চাচা, চাচাতো ভাইসহ ঘনিষ্ঠরাই মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ করছেন এবং সেই টাকার ভাগ যায় এমপির পকেটে। দুর্জয়ের এসব কর্মকাণ্ডে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ।

মানিকগঞ্জে, বিশেষ করে শিবালয়, ঘিওর ও দৌলতপুরে মাদক যে কত ভয়ানক রূপ ধারণ করেছে সেটা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের এক বছরের তথ্য দেখলেই পিলে চমকে যায়। তথ্য বলছে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এক হাজার ৪৯টি মাদকের মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে এক হাজার ৫২৯ জনকে। উদ্ধার করা হয়েছে ২৮ হাজার ২২ পিস ইয়াবা, ৮০ লিটার মদ, দুই হাজার ৯৮৮ বোতল ফেনসিডিলসহ বিপুল পরিমাণ গাঁজা ও হেরোইন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ-১ আসনের এমপি এবং জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের বিরুদ্ধে পাহাড়সম অভিযোগ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের। একটি এলাকাকে অধঃপতনের দিকে ঠেলে দিতে যা যা প্রয়োজন তার সবই করেছেন তিনি। ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের দলে ভিড়িয়ে মাদক ও জুয়ার কারবার, চাঁদাবাজি, দখলদারি, মাটি কাটা এবং চর নিঃশেষ করে দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে দুর্জয়ের বিরুদ্ধে। আর এসব সমাজবিধ্বংসী কাজে তিনি তাঁর ঘনিষ্ঠদের মোতায়েন করেছেন। বিনিময়ে প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতাচ্ছেন দুর্জয় ও তাঁর স্ত্রী ফারহানা রহমান হ্যাপি।

দুর্জয় এই মাদক কারবারের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দিয়েছেন তাঁর চাচাতো ভাই জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান জনি ও মাহফুজুর রহমান অনিকে। এ ছাড়া জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রাজা, জেলা যুবলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবুল বাশার এবং শিবালয় উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আলী আহসান মিঠু তিন উপজেলায় মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ করছেন। আর চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করেন মিরাজ হোসেন লালন এবং শিবালয় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম রেজা। পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন প্রণোদনা পাইয়ে দিয়ে রাতারাতি কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা উপার্জন করেছেন সেলিম রেজার খালা উপজেলা মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শিউলি আক্তার। তাঁদের ছত্রচ্ছায়ায় ঘিওর, দৌলতপুর এবং শিবালয় উপজেলায় রয়েছে অর্ধশত মাদক কারবারি। তাদের মাধ্যমে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা যায় এমপি দুর্জয়ের কাছে। কোনো মাদক কারবারি গ্রেপ্তার হলে ছাড়িয়ে নেন দুর্জয়। সম্প্রতি এলাকার কয়েকজন মাদক কারবারি গ্রেপ্তার হওয়ার পর এমপি তাঁদের ছাড়িয়েছেন।

এমপির স্ত্রীর আশীর্বাদপুষ্ট উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিরাজ হোসেন লালন কয়েক বছর আগে উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক পদ বাগিয়ে নেন। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার পর তিনি আরো বেপোরয়া হয়ে ওঠেন। ট্রলারঘাট, অটোস্ট্যান্ড, শিবালয় বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু ব্যবসার সিন্ডিকেট তাঁর নিয়ন্ত্রণে। এমপির স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে পোড় খাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারা লালনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পান না। গত বছর পাটুরিয়া ঘাটের ট্রাক টিকিট বুকিং কাউন্টারে তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী চাঁদাবাজি করলে বিআইডাব্লিউটিসি থানায় একটি অভিযোগ করে। পরে অদৃশ্য কারণে সব অভিযোগ রাতারাতি উঠে যায়।

এ বিষয়ে পাটুরিয়া ঘাটের বিআইডাব্লিউটিসির উপমহাব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘সরকারি ফি অনুযায়ী গাড়িপ্রতি টিকিটের মাধ্যমে টাকা তোলার সময় বাধা দেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিরাজ হোসেন লালন। ওই সময় আমরা প্রশাসনকে বিষয়টি জানাই। তারপর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সমাধান হয়।’ আরেক কর্মকর্তা বলেন,‘ ওই ঘটনার পর এমপি দুর্জয় সাহেবও ফোন করেছিলেন। তিনি ফোন করে বলায় ১৫ই আগস্টের অনুষ্ঠানের জন্য টাকা দিয়েছিলাম তার পরও কেন লালন এখানে এসেছিলেন, তা বলতে পারছি না।’ পরিবহন থেকে চাঁদাবাজি করার অভিযোগে চলতি মাসের ৬ তারিখ শিবালয় থানায় কাইয়ুম শেখ, লালন খানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। কিন্তু এমপি দুর্জয়ের হস্তক্ষেপে বিষয়টি এগোয়নি। তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে লালনকে রক্ষা করেন।

এ ছাড়া এমপির আরেক মাদক কারবারি তেওতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল করিম শেখের প্রশ্রয়ে ইয়াবা কারবার প্রকাশ্যে চলছে। কয়েকবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে আটক করলেও এমপির সুপারিশে বারবার ছাড়া পেয়ে যান। তিনি, তাঁর স্ত্রীসহ পুরো পরিবারের প্রকাশ্যে মাদক কারবারের বিষয়টি এখন সবার মুখে মুখে। করিম চেয়ারম্যান ৬০০ পিস ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁকে দুর্জয় ছাড়িয়ে নেন। তিনি নিয়মিত মাসোহারা দেন এমপিকে।

জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির শাওন, তাঁর ছোট ভাই শামীম, ছাত্রলীগ নেতা পলাশ হোসেন এবং নাসির চিহ্নিত মাদক কারবারি। ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার এবং ইয়াবা কারবারিদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পরও এমপির মদদ থাকায় তাঁদের আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না। ঘিওর, দৌলতপুর এবং শিবালয় ছাড়াও পাটুরিয়া ঘাট এখন মাদকের অন্যতম বড় হটস্পট। এই রুট নিয়ন্ত্রণ করেন জনি, অনি, মিঠু, বাশার ও রেজা। এ ছাড়া নদীপথে পাটুরিয়া ঘাট থেকে অন্যান্য জেলায় ইয়াবা পাচার হয় তাঁদের মাধ্যমে।

তিন উপজেলায়ই মাদক কারবারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দুর্জয়ের লোকজন। মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একাধিকবার পুলিশের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন শিবালয় উপজেলা চেয়ারম্যান। গত ২৫ জুন উপজেলা পরিষদের সভায়ও মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শিবালয় থানার ওসিকে অনুরোধ করেন তিনি। কিন্তু এমপির মদদ থাকায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করছে না পুলিশ।

দৌলতপুরের চকমিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান শফিক বলেন, ‘এলাকায় সব চিহ্নিত মাদক কারবারি এমপির শেল্টারে চলেন। তাঁরা গ্রেপ্তার হলেও অদৃশ্য ইশারায় ছাড়া পেয়ে যান।’ দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এক নেতা ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘মাদকসহ গ্রেপ্তার হওয়ার পরও এমপি তাঁদের ছাড়িয়ে আনেন। তাই তাঁরা নির্বিঘ্নে মাদক ও জুয়ার কারবার চালিয়ে যেতে পারেন। এমপি নিয়মিত তাঁদের কাছ থেকে মাসোহারা নেন। একসময় এই এলাকার তরুণরা খেলাধুলা আর সাংস্কৃতিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে মেতে থাকত। এখন মাদকে বুঁদ হয়ে থাকে তারা।’

শিবালয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউর রহমান খান (জানু) বলেন, ‘মাদক কারবারিদের তালিকা পুলিশের কাছে আছে। এর আগে মাদক কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করেছে। কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য কারণে পুলিশ তাঁদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। মূলত এমপির আশীর্বাদ থাকার কারণে পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না।’

শিবালয় বাসস্ট্যান্ড এবং পদ্মার ট্রলারে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং শিবালয় উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মিরাজ হোসেন লালন এবং ছাত্রলীগ সভাপতি সেলিম রেজা। তাঁদের দুজনের মাধ্যমে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করেন দুর্জয়। ঘিওর, শিবালয় এবং দৌলতপুর—এই তিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসজি জমির মাটি কেটে নিয়ে ইটভাটায় বিক্রি করছে দুর্জয়ের লোকজন। এ ছাড়া এমপির লোকজনদের টাকা না দিয়ে কেউ জমি বিক্রি করতে পারে না। এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে আছে দুর্জয়ের চাচা তায়েবুর রহমান টিপুর। এসব ভাগ-ভাটোয়ারার অর্থ চলে যায় দুর্জয়ের স্ত্রী হ্যাপির কাছে। এ ছাড়া লালন ফকিরের চাঁদাবাজির একটা বড় অংশ হ্যাপি নেন বলে জানা গেছে। এই অর্থে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

দৌলতপুর উপজেলা যুবলীগের কর্মী জুয়েল বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে যুবলীগের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আমি নির্বাচন করার সময় এমপি দুর্জয় তাঁর লোকজন দিয়ে ভোট ছিনতাই করে জাতীয় পার্টির একজনকে পাস করিয়ে দেন। অনি-জনি-মিঠু আর বাশার শিবালয়ের মাদক নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন। তাঁদের ছত্রচ্ছায়ায় দৌলতপুরের কুদ্দুসসহ আরো অনেকে মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ করেন। বিনিময়ে নিয়মিত মাসোহারা দেন এমপিকে।’

মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বলেন, ‘মাদকের বিষয়ে পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে। মাদকের আস্তানা গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে এক বছরে এক হাজারের বেশি মাদকের মামলা হয়েছে। এ ছাড়া বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। চাঁদাবাজদেরও আমরা ছাড় দিচ্ছি না। চলতি মাসেও চাঁদাবাজির অভিযোগে তিনটি মামলা করা হয়েছে।’

পটুরিয়া ঘাটে জনপ্রতিনিধির চাঁদাবাজির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঘটনা অবগত হওয়ার পরপরই আমরা অভিযান পরিচালনা করি। এর পর থেকে ঘাটে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি হচ্ছে না। তবে চাঁদাবাজির কোনো অভিযোগ থাকলে আমাদের সরাসরি জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব।’ ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধি মাদক কারবারিদের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুত্র : কালের কণ্ঠ।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।