২৭ দিন ধরে বিদ্যুৎ সমস্যা

মনপুরায় রাতের বেলায় অন্ধকারে হাসপাতাল, ভুগছে রোগিরা

ভোলার মনপুরার দেড় লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে রাত হলেই অন্ধাকার নেমে আসে। গত ২৭ দিন ধরে রাতে বিদ্যুৎ নেই হাসপাতালটিতে। এতে ভর্তিরত দুই করোনা রোগি সহ সাধারণ ওয়ার্ডের রোগিদের পৌহাতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ। এতে ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয়রা।

এদিকে পাওয়ার হাউসের বিদ্যুৎ সরবরাহের মেশিনের যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য শুধু হাসপাতাল নয় ভোগান্তিতে রয়েছে উপজেলার ৮ শত আবাসিক গ্রাহক। কোন গ্রাহকই রাতের বেলায় ১ ঘন্টার বেশি বিদ্যুৎ পাচ্ছেনা। তবে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করে গ্রাহক সহ হাসপাতালের ভোগান্তি লাগবে এমপি জ্যাকবের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয়রা।

আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) এর গাফলতির কারনে চরম দূর্ভোগে পৌহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মাহমুদুর রশীদ জানান, ফোনে ও চিঠিতে একাধিকার বিদ্যুতের প্রকৌশলীসহ উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পর আজ পর্যন্ত রাতের বেলায় হাসপাতালে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিচ্ছে না। এতে ভর্তিকৃত করোনা রোগি সহ সাধারন রোগি আরও অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে। এছাড়া রাতের গরমে কর্তব্যরত ডাক্তার, নার্সরা অতিষ্ট হয়ে পড়ছে।

এদিকে, করোনরোগি আবদুল মতিন, ব্যবসায়ী গ্রাহক সুমন, মামুন, হেলাল, মহিউদ্দিন, আবাসিক গ্রাহক বেলাল, সুমনদাস, শামসু, মতিন সহ অনেকে জানান, রাতের বেলায় পাওয়ার হাউসের মাধ্যমে যে কারেন্ট পাই তা গত ২৭ দিন ধরে পাচ্ছিনা। বিদ্যুতের আড়ি (প্রকৌশলী) এর জন্য আমরা বিদ্যুৎ পাচ্ছিনা। রাতের গরমে অতিষ্ট হয়ে পড়ছি। রাতে বিদ্যুৎ না থাকায় ছেলে-মেয়েরা পড়ালেখা নষ্ট হচ্ছে। গত ২৭ দিন ধরে মেশিন নষ্ট আড়ির ( প্রকৌশলী) গড়িমসির জন্য মেশিন ঠিক হচ্ছেনা। আমরা এমপি জ্যাকবের হস্তক্ষেপ কামনা করছি, তিনি যেন দ্রুত এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেন।

বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে ও সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গত ২৬ মে বিদ্যুৎ সরবরাহের বড় দুইটি মেশিনে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে পড়ে গ্রাহক সহ সবাই। পরে মেসার্স ডেটা টেক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে টেন্ডারের মাধ্যমে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়া বড় মেশিন দুইটি মেরামতের কাজ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠান কাজ পাওয়ার পর থেকে মেশিন দুইটি মেরামতে গড়িমসি করছে। ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মাত্র দুইজন লোক দিয়ে বড় দুইটি মেশিনের মেরামতের কাজ করছে।

জানা যায়, উপকূল ঘূর্নিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচীর আওতায় ১৯৯১ সালে ৪ শত কিলোওয়াটের ২টি মেশিনের মাধ্যমে রাতের বেলায় উপজেলা পরিষদ সহ বাজারে অল্প কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। পরে সাবেক উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এম.পি’র প্রচেষ্ঠায় এক মেঘাওয়াটের ১টি এবং ৫ শত কিলোওয়াটের আরো ১টি মেশিন সংযুক্ত হলে বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা বাড়তে থাকে। পরে সন্ধ্যা থেকে বিরতিহীনভাবে রাত দেড়টা পর্যন্ত হাট-বাজার, আবাসিক ৮ শত গ্রাহক, হাসপাতাল, সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহ চলে।

এব্যাপারে মনপুরা উপজেলা আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মোঃ নুরুল ইসলাম অভিযোগ অ-স্বীকার করে বলেন, করোনার জন্য নষ্ট হওয়া মেশিনের যন্ত্রপাতি আনতে দেরী হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মেশিনের এসেমব্লির কাজ চলছে। জনবল আরো আসবে। চলতি মাসের মধ্যেই এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন তিনি।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস জানান, বড় দুইটি মেশিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেকদিন ধরে বিদ্যুতের সমস্যা। বিষয়টি বিদ্যুতের আবাসিক প্রকৌশলীসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়াও নষ্ট মেশিনের কাজ চলছে। দ্রুত বিদ্যুতের সমস্যা সমাধান হবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।