সর্বশেষঃ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রী দয়াকরে পত্রিকাগুলো বাঁচান

ফাইল ছবি

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,বিশ্বমানবতার মা, বিশ্বরত্ন শেখ হাসিনা ও আমাদের অভিভাবক মাননীয় তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ আপনাদের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং আপনাদের কাছে কিছু কথা তুলে ধরছি। আপনারা সবই অবগত। তারপরেও আমাদের কিছু দুঃখের কথা আপনাদের কাছে আবেদন আকারে জানাচ্ছি। বর্তমান বিশ্বে করোনা পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশে যে উদিয়মান অর্থনীতি ছিলো তাতে আজ ভাটা পড়েছে। ৬৭ দিন টানা লকডাউনের কারণে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কিছুটা অস্থিরতা ও স্থবিরতা কাজ করছে। এমন অবস্থায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি সবার কথা মাথায় রেখে ১ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্রনোদনা ঘোষণা করেছেন। পাশাপাশি সেক্টর ভিত্তিক প্রনোদনা প্যাকেজ , সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। ব্যাক্তিগত ভাবেও নানা শ্রেণী পেশার মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। একমাত্র অবহেলিত ও বঞ্চিত আমাদের সংবাদপত্র শিল্পটি। এই শিল্পটি এখন পর্যন্ত কোন প্রনোদনা পায়নি। আমার ক্ষুত্রমতে প্রনোদনার প্রয়োজনও নেই। যদি আমাদের সারা বাংলাদেশে সরকারি যে বিজ্ঞাপন বিল গুলো রয়েছে বিশেষ করে তথ্যমন্ত্রনালয়ের অধিন ডিএফপির কাছে পত্রিকা গুলো যে লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকা পাওনা আছে তা পরিশোধের মাধ্যমে সংবাদপত্র শিল্পের যে বিরাজমান পরিস্থিতি চলছে তা থেকে কিছুটা হলেও উত্তরন ঘটানো সম্ভব ।

পত্রিকার মালিকরা সংবাদপত্র চালিয়ে যাচ্ছে,বিজ্ঞাপনের আয় দিয়ে। কিছু সংবাদপত্রের মালিকরা লস দিচ্ছে ,বেশিভাগ পত্রিকা সরকারি বেসরকারি বিজ্ঞাপন দিয়ে চলছে। গত ৬৭ দিন লকডাউনের কারণে পত্রিকা গুলোর বিজ্ঞাপণ অনেকাংশে কমে গেছে , কালেকশান হচ্ছে না। যার কারণে বেশিরভাগ পত্রিকায় বেতন হচ্ছে না, ঈদে বোনাস দেওয়া হয়নি, অনেক পত্রিকায় ছাটায় শুরু হয়েছে। একটি অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে। এমন অবস্থায় তথ্যমন্ত্রনালয়ের অধিনে ডিএফপির কাছে প্রতিটি পত্রিকা সর্বোমোট যে ৬০-৭০ কোটি টাকা পাওনা আছে সেই বিল গুলো পরিশোধ করার জন্য অনুরোধ রইলো। এছাড়াও সারা বাংলাদেশে এলজিডি ,রোডস্ এন্ড হাইওয়ে, রেলওয়ে, গণপূর্ত, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন, ওয়াসা, পানি, বিদ্যুৎ, আদালত,স্বাস্থ্য সহ এইভাবে যত প্রতিষ্ঠান আছে সবগুলো প্রতিষ্ঠানের কাছে লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপনবিল বকেয়া পড়ে আছে। এই বকেয়া বিল গুলোর মধ্যে এমন বকেয়া রয়েছে যেগুলো দুই- তিন বছরও হয়ে গেছে। সরকারি বিজ্ঞাপন গুলো বিল প্রদানে বিলম্ব করার কারণে সংবাদপত্র শিল্পটি আজ এক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং তথ্যমন্ত্রীর প্রতি আকুল আবেদন, আপনারা তৎপর হয়ে বিশেষ ১ হাজার অথবা ৫ শত কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে এই সংবাদপত্র শিল্পের সাথে সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান বিল গুলো অনতি বিলম্বে পরিশোধ করলে, তাহলে এই সংবাদপত্র শিল্পটি বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতেও ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে এবং প্রাণ ফিরে পাবে। আর্থিক জনিত কারণে বেশ কিছু পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো অনেক পত্রিকা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে প্রকাশ করে যাচ্ছে। তাদের তালিকা করে মালিকপক্ষ এবং পত্রিকার সম্পাদকদের ধন্যবাদ দেওয়া উচিৎ এবং এমন পরিস্থিতিতে দেশের এই অবস্থার মধ্যেও যেসকল পত্রিকা নিরবিচ্চিন্ন ভাবে প্রকাশ করে যাচ্ছে তার তালিকা ডিএফপি এবং তথ্যমন্ত্রনালয়ের কাছে আছে। তারা নিয়মিত পত্রিকার কপি পাচ্ছেন। তাই সেই পত্রিকা গুলোর মালিক এবং সম্পাদকদের ডেকে একটি বৈঠক করে অতিদ্রুত সরকারি বিল গুলো দিলেই সংবাদপত্র শিল্পটি এই যাত্রায় বেঁচে যাবে। ইলেকট্রনিক্স মিড়িয়া অনেক ভালো আছে । তাদের বিজ্ঞাপনে কোন ঘাটতি হয়নি। তাদের বিজ্ঞাপন বর্তমানে আরও বেড়েছে। কিন্তু সংবাদপত্র শিল্পে সরকারি বেসরকারি বিজ্ঞাপন একেবারেই কমে গেছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা কালেকশান বন্ধ হয়ে গেছে।

তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের মা এবং আমাদের অভিভাবক সাংবাদিক বান্ধব মাননীয় তথ্যমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন অতিদ্রুত পত্রিকাগুলোর সরকারি বিল পরিশোধ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করুন। সম্প্রতি ডিএফপি থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে যেখানে তারা বলেছেন আমরা আপনাদের বকেয়া গুলো পরিশোধ করে দিবো। আপনারা পত্রিকা কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের বেতন পরিশোধ করুন। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের বিষয় ১৬ ডিসেম্বর থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত অনেক বিল ডিএফপিতে বকেয়া যা ডিএফপি বিল প্রসেস করে রাখলেও আর্থিক সংকটের কারণে সে বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে না। এমত অবস্থায় অনতিবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমাদের অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

লেখক,গণমাধ্যম শ্রমিক, কলামিষ্ট ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।