সর্বশেষঃ

সুপার সাইক্লোন আম্পানের প্রভাব শুরু : আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চায় না বাসিন্দারা

মনপুরা উপকূলের বিচ্ছিন্ন চরে ৩-৪ ফুট জোয়ারে প্লাবিত, বইছে দমকা ও ঝড়ো বাতাস

ভোলার মনপুরা উপকূলের নিন্মাঞ্চল সহ মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন কলাতলীর চর ও চরনিজামে সুপার সাইক্লোন আম্পানের প্রভাবে ৩-৪ ফুট জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। চরনিজাম ও কলাতলীর চরে আশ্রয়কেন্দ্রের সামনে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও বেড়ীরবাহিরে ও বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে থাকা মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে পারছেনা প্রশাসন। তবে দুপুরের দিকে বেড়ীর বাহিরে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হওয়ায় ধীরে ধীরে মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে আসা শুরু করেছে।


এদিকে প্রশাসনের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বেড়ীবাঁধের বাহিরে অবস্থান করে থাকা মানুষকে নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্র আসার জন্য মাইকিং করছেন। মানুষজন ঘর-বাড়ি, গরু-ছাড়ল ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চাচ্ছেনা। তারপরও প্রশাসনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসার জন্য তৎপরাতা চালাতে দেখা গেছে।
বুধবার সকাল ১০ টা থেকে দমকা ও জড়ো বাতাস বইতে শুরু করেছে। এর আগে মঙ্গলবার রাত ১০ টা থেকে থেমে বৃষ্টিসহ জড়ো বাতাস বইছে। এদিকে মেঘনায় জোয়ার প্রবাহিত থাকায় ও আম্পানের প্রভাবে বাতাসের গতিবেগ বৃদ্ধি পাওয়ায় মনপুরা উপকূলের বেড়ীর বাহিরে নিন্মাঞ্চল ৩-৪ ফুট জোয়ারে পানিতে ডুবে গেছে।


সরেজিমেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের বেড়ীর বাহিরে আন্দিরপাড় গ্রাম ৩-৪ ফিট জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও চরনিজাম ও কলাতলীর চরে ৩-৫ ফুট জোয়ারে পানিতে ডুবে গেছে মুঠোফোনে জানিয়েছে চরনিজামের ইউপি সদস্য নুরনবী ও সিপিপি কর্মী মাকছুদ সর্দার ও কলাতলীর চরে ইউপি মেম্বার ও সিপিপি কর্মী আমিন। এছাড়াও পূর্বপাশে ঢাকার লঞ্চঘাট এলাকায় এলজিইডির নতুন নির্মিত রাস্তা জোয়ারের তান্ডবে ভেঙ্গে নদীতে পড়ে গেছে। উত্তর সাকুচিয়া মাষ্টারহাট এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়েছে। এদিকে বেড়ীর বাহিরে জোয়ারে পানি প্রবাহিত হওয়ায় লোকজন ছাগল ও পরিবারপরিজন নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আসা শুরু করেছে।


মনপুরার বেড়ীর বাঁধের বাহিরে থাকা সাইফুল, করিম, হোসেন, ফাতেমা, কামাল সহ অনেকে জানান, সিগন্যাল এখনও ভাল করে টানে নাই, হাঁস, মুরগী, গরু-ছাগল সব বাহিরে এগুলো ঠিকঠাক না কইরা কেমনে আশ্রয়কেন্দ্রে যামু। সিগন্যাল ভাল কইরা টানলে তারপর আশ্রয়কেন্দ্রে যাইমু। তবে রামনেওয়াজ এলাকায় নদীর সাথে থাকা পারুল বেগম বলেন, আমার ঘর-দুয়ার সব নদীতে লইয়া যাইবো, এছাড়াও আশ্রয়কেন্দ্রে তো পানি উডে, তই হেয়ানে গিয়া লাভ কি।


এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস জানান, ১০ নম্বর বিপদ সংকেত চলছে। ৭৪ টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রস্তুত করা হয়েছে। ্ইতিমধ্যে ৭২৯জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে। সিপিপির সদস্যরা ব্যাপক প্রচারনা চালাচ্ছে। ইতি মধ্যে চরকলাতলী ও চরনিজামে পানি উঠে গেছে। সেখানকার আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজনদের খাবার দেওয়ার জন্য চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি শেলিনা আকতার চৌধুরী জানান,আমাদের ত্রান সেন্টার গুলো রেডি আছে। ৭২৯ জনকে ত্রান সেন্টারে নিয়ে এসেছি। অনেকে বাকি আছে ত্রান সেন্টারে আসার। ত্রানে সেন্টারে আসা লোকজনকে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। আমাদের ডাক্তাদের টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আমাদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ওসি সহ প্রশাসনের সকলকে আমরা আম্পান মোকাবেলা করবো।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।