সর্বশেষঃ

স্থান পাচ্ছে করোনাসহ নানা ইস্যু

জনস্বার্থে ভার্চুয়াল কোর্টে নানা বিষয়ে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি

ভাইরাসের প্রকোপে দুই মাস বন্ধ ছিলো দেশের সবোর্চ্চ আদালত। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক আদালতে আইনি প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ ছিলো না। এমতাবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ফুল কোর্ট সভায় তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় উচ্চ আদালতে বিচারকাজ পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেই মোতাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন হাইকোর্টের চারটি বেঞ্চকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে মামলা শুনানির এখতিয়ার প্রদান করেছেন। এর মধ্যে একটি একক বেঞ্চ রয়েছে রিট মামলার শুনানি গ্রহণ ও নিষ্পত্তির জন্য।

ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয়ে আইনি প্রতিকার চেয়ে জনস্বার্থে রিট মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছেন। এর আগে এসব বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থাকে আইনজীবীরা পৃথক পৃথক লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন। কিন্তু ওইসব নোটিশের জবাব না পেয়ে তারা হাইকোর্টের ভার্চুয়াল কোর্টে রিট দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছেন। এর মধ্যে হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ থেকে মঙ্গলবার চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের একাধিক আইনজীবী জানিয়েছেন, উচ্চ আদালত বন্ধ থাকার কারণে আইনি প্রতিকার চেয়ে রিট মামলা করার সুযোগ ছিলো না। এখন স্বল্প পরিসরে ভার্চুয়াল কোর্ট চালু হয়েছে। ফলে রিট মামলা দায়েরের পথ উন্মুক্ত হয়েছে।

মার্চ মাসের শুরুতে দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পায় আইইডিসিআর। পরবর্তী দুই মাসে দেশে নানা ধাপে বেড়েছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। কিন্তু করোনা আক্রান্ত নয় এমন রোগীরা বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুবরণ করছেন এমন সংবাদ প্রায়শই বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। প্রকাশিত ওইসব প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রিট দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কয়েকজন আইনজীবী। একই বিষয়ে রিট দায়েরর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। কমিশন বলছে, করোনাকালীন সময়ে জনগণ চিকিৎসার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মর্মে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদের বিষয়ে আলোচনা হয়। জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে সরকারের নির্দেশনা এবং বারবার কমিশনের সুপারিশ পাঠানো সত্ত্বেও কোনও কোনও প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির উদাসীনতা এবং দায়িত্বহীনতার কারণে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত না হওয়ায় কমিশন রিট দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার পাশাপাশি দেশের প্রত্যেক উপজেলায় টিসিবির পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নিতে সরকারকে উকিল নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু ওই নোটিশের জবাব না পেয়ে রিট দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন নোটিশ প্রদানকারী আইনজীবী হুমায়ন কবির পল্লব।

এ ছাড়া প্রতি জেলায় করোনা টেস্টের জন্য পিসিআর ল্যাব স্থাপন চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু জবাব না পেয়ে রিট করবেন আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন। এছাড়া করোনা ভাইরাস চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে নানা অব্যবস্থাপনার বিষয় তুলে ধরে রিটের প্রস্তুতি চলছে। এর মধ্যে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার জন্য সরবরাহকৃত মাস্ক নিয়ে গতকাল সরকারকে উকিল নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে এন-৯৫ মাস্ক এর প্যাকেটে নকল মাস্ক সরবরাহের জন্য ওই মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জেএমআই গ্রুপের বিরুদ্ধে তদন্ত, তাদের সঙ্গে সমস্ত প্রকার চলমান চুক্তি বাতিল, সরকারি দরপত্র আহবানের ক্ষেত্রে ব্ল্যাকলিস্ট, ক্ষতিপূরণ আদায় এবং তাদের বিরুদ্ধে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা দায়েরের কথা বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে ই-মেইল যোগে এ নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোঃ হুমায়ুন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোঃ কাওছার। এতে বলা হয়েছে, নোটিশ প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে হবে। নইলে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে।

এ ছাড়া ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের এডিস মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে স্থানীয় সরকার সচিব ও সিটি মেয়রদের উকিল নোটিশ দেয়া হয়েছে

সূত্র- ইত্তেফাক

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।