ভোলা জেলা বিএনপির সমাবেশে নবগঠিত স্বেচ্ছাসেবক দলের বিশাল মিছিল
শতাব্দীর মহানায়ক অনন্য মুজিব : পর্ব-১৭

ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন),
(গত সংখ্যার পর), তার দু’দিন পর বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করতে গেলাম এর মধ্যে অবজারভারে আমাদের প্যারেডের স্যালুডিনের ছবি, বঙ্গবন্ধুকে স্যালুড করার ছবি, বিরাট আকারে বেরিয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধু আমাকে দেখে হেসে উৎসাহে বলে উঠলেন, আরে আমার কম্যান্ডার ইন চীফ্ বাংলাদেশ। আমি হেসে ফেললাম।
আজ আমার মনে পড়ে তখন জুলাই এর প্রথম কি দ্বিতীয় সপ্তাহে আওয়ামীলীগ অফিসের সামনে বিরাট প্যান্ডেল ঠিক করা হয়েছে। সেখানে এক বিচিত্রানুষ্ঠানের আয়োজন করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তখন নুতন বাকশাল গঠিত হয়েছে। অনেক গন্যমান্য ব্যক্তি নতুন বাকশালের গভর্নিং বডির সদস্য হয়েছেন। কেউই তখন এসে পৌছান নি। আমি মহিলা আওয়ামীলীগের সেন্ট্রাল কমিটির মেম্বার হয়েছিলাম, ছিলামও একাত্তর, বাহাত্তর, তিয়াত্তর, চুয়াত্তর পর্যন্ত। কিন্তু বাকশালে আমার নাম জাতীয় পর্যায়ে দেওয়া হয়নি। তাতে আমি একটুও দুঃখিত হইনি।
মেজর জেনারেল শফিউল্লাকে দেখলাম সামনের সারিতে বসে আছেন। তারপর দেখলাম খালেদ মোশারেফ এসেছেন, তিনিও সামনের সারিতে বসা। উনিও বোধ হয় বঙ্গবন্ধুর বাকশালে যোগদান করেছেন। মেজর জেনারেল জিয়া সাহেবও কিছুক্ষণ পর এলেন। ওনার নাম বাকশাল কমিটিতে নেই মনে পড়ে।
আমি ঐ অনুষ্ঠানে আমার লেখা একটি কমিতা পড়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। কবিতাটির নাম, অনেক অনেক স্বপ্ন আমি দেখেছিলাম। লোকজন খুব ধীর গতিতে আসছেন। আর আমরা সবাই জানি আমাদের সময়জ্ঞান খুব কম। আর একটি প্রশংসা আমি আজ না করে থাকতে পারছি না। আর্মিদের সময়জ্ঞান খুব প্রখর, ডিসিপ্লিনের জন্য ওনারা শ্রেষ্ঠত্ব দাবী করতে পারেন।
বঙ্গবন্ধু এলেন ধবধবে সাদা মকমল এর পাঞ্জাবী গায়ে, গায়ে মুজিবকোট, চাদর জড়ানো সেটা তার আভিজাত্যের নমুনা। এর মধ্যে সকলেই এসে গেছেন। বঙ্গবন্ধুকে দেখে সম্ভ্রমে দাঁড়িয়ে পড়ল। অনুষ্ঠানের সূচনা ঘোষণা করা হল। আমার সোনার বাংলা গান শুরু হবার সাথে আমরা সবাই যে যেখানে ছিলাম দাঁড়িয়ে পড়লাম। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উড়তে লাগল। অসংখ্য ফুলে পুলে স্টেজ সাজানো হয়েছিল। রজনীগন্ধা, জুই এবং বকুলের মন মাতানো গন্ধে স্টেজে অংশগ্রহণকারীরা সেদিন খেঁই হারিয়ে ফেলেছিল। লায়লা সরোয়ার তার লালন গীতি গেয়ে শ্রোতাদের আপ্লুত করল। আমিও আমার কবিতা পড়লাম। সভামঞ্চ কিছুক্ষণ হাততালি দিয়ে স্তব্ধ হয়ে থাকল।
(চলবে———–)