বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ১০ মে থেকে শপিংমল বা দোকানপাট খোলা বাধ্যতামূলক নয়। কেউ চাইলে নাও খুলতে পারেন। ঈদের আগে মার্কেট খুলবেন কিনা সে সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ীরা নিজেরাই নেবেন। তবে কেউ মার্কেট বা দোকানপাট খুললে অবশ্যই কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। আর মূল সড়কের পাশের দোকান খোলা যাবে না।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি ক্রেতাদের যে এলাকায় বসবাস করেন, সেই এলাকার মার্কেট থেকে কেনাকাটা করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখার অংশ হিসেবে সরকারি বিপণন প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) আগামীকাল শনিবার থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করবে বলে ঘোষণা দেন বাণিজ্যমন্ত্রী। টিসিবি বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫ টাকা দরে বিক্রি করছে।
করোনা সংক্রমণের কারণে বন্ধ শপিংমল ও দোকানপাট আগামী ১০ মে থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে বলে গত মঙ্গলবার সরকারি নির্দেশনা জারি হয়। তবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় দোকান খোলা ঠিক হবে কিনা তা নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে উদ্বেগ আছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স ও যমুনা ফিউচার পার্ক কর্তৃপক্ষ ঈদের আগে শপিংমল না খোলার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, দোকান মালিক সমিতি সীমিত পরিসরে দোকান ও মার্কেট খুলে দেওয়ার আবেদন করলে মন্ত্রণালয় তা বিবেচনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে মার্কেট খোলার সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এখন ব্যবসায়ীরা চাইলে তাদের দোকান খুলতেও পারেন, নাও পারেন। বড় বড় কয়েকটি সুপার মার্কেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা ঈদের আগে খুলবে না।
গণপরিবহন বন্ধ থাকলে ঈদে শপিং করতে যাওয়া ক্রেতারা কীভাবে যাতায়াত করবেন- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরকে কয়েকটি শপিং জোনে বিভক্ত করা হবে। ক্রেতাদের বলা হবে নিজের বাড়ির কাছাকাছি মার্কেট থেকে ঈদ শপিং করতে। এ বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। ‘ঈদে অনেক ক্রেতা মার্কেটে যাবেন, তা নয়। যাদের খুব প্রয়োজন, তারাই যাবেন। আর বিক্রেতারা নিজেদের অবস্থান থেকে খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন’- যোগ করেন মন্ত্রী।
নিত্যপণ্য সরবরাহে সংকট হবে না জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, দেশে এখনও চার মাসের পণ্য মজুদ আছে। টিসিবি কেজিতে ১০ টাকা কমিয়ে শনিবার থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করবে। ভারতের নাসিক থেকে পেঁয়াজ ট্রেনে লোড হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে ওই পেঁয়াজ দেশে পৌঁছবে। পণ্যমূল্য এখন মোটামুটি সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। তবে এখনও এলাচ ও জিরার দাম নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। এ বিষয়ে একজন অতিরিক্ত সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তিনি কাজ শুরু করেছেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু অসৎ ব্যবসায়ী ও টিসিবির ডিলার ভোক্তাদের জিম্মি করে অবৈধভাবে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নেওয়ায় এক সপ্তাহ ধরে এ ধরনের ঘটনা কমেছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে রাজধানীসহ দেশের উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রাখবে।
সূত্র- সমকাল