মনপুরায় করোনা জয় করে বাড়ি ফিরলেন যুবক

ভোলার বিচ্ছিন্ন মনপুরা উপজেলার করোনা আক্রান্ত একমাত্র রোগী ঢাকা ফেরত যুবক সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তিনি উপজেলার মনপুরা সরকারি ডিগ্রী কলেজের প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন সেন্টারে ১১ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মাহমুদুর রশীদ ছাড়পত্র দিলে সুস্থ হওয়া যুবক বাড়ি ফিরেন।

এই সময় ফুলেল শুভেচ্ছা ও হাতে তালি দিয়ে বিদায় জানান উপজেলা চেয়ারম্যান শেলিনা আকতার চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মাহমুদুর রশীদ, ডাঃ মশিউর রহমান, ডাঃ সাব্বির আহমেদ, ওসি সাখাওয়াত হোসেন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ইলিয়াস মিয়া।

এছাড়াও একটি ফল ভর্তি ব্যাগ, ইফতার ও ঈদের খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়। এরপর উপজেলা প্রশাসন উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের ১০ বাড়ির ৪১টি ঘরের লকডাউন প্রত্যাহার করে নেয়।

সুস্থ্য হয়ে বাড়িতে ফেরা যুবক হলেন, উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ সেলিমের ছেলে নুর আলম (২২)। তিনি ঢাকার বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সদরঘাট শাখার ফুড পান্ডায় চাকরী করতেন।

হাসপাতাল ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত ২১ এপ্রিল সুস্থ্য হওয়া যুবক নুর আলম ঢাকা থেকে বাড়িতে ফেরেন। খবর পেয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও মেডিকেল টিমের প্রধান ডাঃ মাহমুদুর রশীদ নুর আলমসহ আরো তিনজনের নমুনা সংগ্রহ করে বরিশালে শেরে-বাংলা মেডিকেল কলেজে পরীক্ষার জন্য পাঠান। ২৩ এপ্রিল রাতে ঐ যুবকের করোনা পজেটিভ আসে। অপর তিনজনের পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ। রাতেই ইউএনও, ওসি ও হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সরা নুর আলমকে উত্তর সাকুচিয়া গ্রামের বাড়ি থেকে এনে মনপুরা সরকারি ডিগ্রী কলেজের প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরদিন ২৪ এপ্রিল সকালে উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের ১০ বাড়ির ৪১ টি ঘর লকডাউন করে প্রশাসন। এছাড়াও আক্রান্ত যুবকের পরিবারের ৬ সদস্যসহ ১৪ জনের করোনা নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠালে রির্পোট নেগেটিভ আসে।

করোনা থেকে সুস্থ্য হওয়া যুবক নুর আলম জানান, সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরতে পারায় মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া। এই দুঃসময়ে সবচেয়ে বেশি সাহস জুগিয়েছেন ইউএনও স্যার। তিনি এখানে ( আইসোলেশন সেন্টার) এসে আমার সাথে আড্ডা দিতেন ও রাতে মোবাইলে কথা বলতেন। আমার মোবাইলে ফ্লাক্সিলোডসহ ফল দিতেন। এছাড়া হাসপাতালে ডাক্তার-নার্সরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করায় আল্লাহ আমাকে সুস্থ্য করে দিয়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও মেডিকেল টিমের প্রধান ডাঃ মাহমুদর রশীদ জানান, পরপর দুইবার করোনা আক্রান্ত যুবকের নমুনার পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ আসায় তাকে মেডিকেল ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস জানান, করোনা আক্রান্ত যুবক সুস্থ হওয়ায় সবার মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের ১০ টি বাড়ির ৪১ টি ঘরের লকডাউন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।