সর্বশেষঃ

শতাব্দীর মহানায়ক অনন্য মুজিব : পর্ব-১৬

ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন),

(গত সংখ্যার পর), বঙ্গবন্ধ এলেন এক নবীনতার স্বপ্ন নিয়ে, বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন, সুন্দর ক্ষমা সুন্দর মন নিয়ে, দৃঢ়তার কঠিন ছাপ তার চোখে মুখে। ঢাকা বিমান বন্দরে কোটি কোটি জনতার হর্ষধ্বনিতে তাজউদ্দিন বঙ্গবন্ধুকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁধে হাত রাখলেন।

একদিন আমি ভীরু হৃতয়ে, দুরু দুরু বুকে বঙ্গবন্ধুর সানমে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমাকে বাংলার বঙ্গবন্ধুর মহাজয়ী মহানায়কের সাথে দেখা করতেই তিন আমাকে চিনলেন। আমি বঙ্গবন্ধুকে বললাম, আপনি আসছেন শুনে আমিি একটি কবিতা লিখে ফেললাম। আপনি যদি অনুমতি করেন, তবে কবিতাটি আমি আপনাকে পড়ে শোনাব। বঙ্গবন্ধু বললেন, পড়ুন। আমি পড়লাম, বঙ্গবন্ধু খুব খুশি হলেন। এমনিতে বঙ্গবন্ধু কবিতা পড়তে, শুনতে  খুব ভালবাসতেন। কবিতাটি শুনে বঙ্গবন্ধু আমার আনন্দমুখর মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিলেন। সেদিনটির কথা আমার আজও মনে আছে।

বঙ্গবন্ধু এসে মিনিষ্টি ফরম করলেন বিভিন্ন জনকে বিভিন্ন জায়গায়। মনসুর আলীকে প্রধানমন্ত্রী করলেন। উনাকে দলের লোকেরা প্রেসিডেন্ট করল। বঙ্গবন্ধ কোনদিনই ক্ষমতার জন্য লালায়িত ছিলেন না। পদ, মান, মর্যাদা, টাকা-পয়সার জন্য বঙ্গবন্ধু উন্মাদ ছিলেন না। খালি সারা জীবন বাংলাদেশ বাংলাদেশ করে জীবনটাকে উৎসর্গ করলেন।

বাংলাদেশের নতুন নাম বহন করে গৌরবে, আনন্দে, দর্পে নিজ শালীনতা বজায় রেখে আপন মনে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছিল, বঙ্গন্ধুর সোনার বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু নেতৃত্বে। সবেমাত্র দেশ স্বাধীন হয়েছে। কাপড় চোপড়ের দাম অসম্ভব রকম বেড়ে যাচ্ছিল, আস্তে আস্তে কোথায় যেন একটা শিথিলতা নেমে আসছিল। একাত্তরে দেশ স্বাধীন হল, কত ওলট-পালট, দেশের আইন কানুনের মত পরিবর্তন। সবকিছুর জন্য জনসাধারণ অসুবিধায় ছিল, তবু বঙ্গবন্ধুর ভালবাসায়, ত্যাগ, তিতীক্ষা ও আদর্শে অভিভূত হয়ে জনসাধারণ টু শব্দটিও করেননি।

এসেম্বিলির পথ পরিবর্তন হতে লাগল। সংসদ সদস্য ও সদস্যগণ গুন গুন করছিল। বাকশাল নামে কি যেন একটি হবে। কত মিটিং, কত প্রশাশন, কত ওলট-পালট রাজনীতির জটিল চক্রে ঘুরছে, তার ভিতরের ঘোর প্যাচ আমি উপলব্ধি করতে পারিনি। আমি তখন বঙ্গবন্ধুর সেন্ট্রাল কমিটির মেম্বার ছিলাম। মহিলা আওয়ামীলীগের মেম্বার ছিলাম। অথচ ১৯৫৪ সালে খুলনায় মহিলা আওয়ামীলীগের আমি প্রেসিডেন্ট ছিলাম।

(চলবে————)

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।