ভোলার বিভিন্ন দাবী নিয়ে চট্টগ্রামস্থ ভোলা জেলা ছাত্র ফেরামের সংবাদ সম্মেলন
শতাব্দীর মহানায়ক অনন্য মুজিব : পর্ব-৯

ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন),
(গত সংখ্যার পর) বাংলা একাডেমীতে ১লা ফেব্রুয়ারী থেকে একটি বইমেলার বিরাট উৎসব হয়। এই মেলা দীর্ঘ ১ মাস ধরে চলে। স্বনামধন্য লেখিকা ও সাধারণ লেখক লেখিকাদের লেখা এই মেলায় শোভা পায়। দেশের প্রধানমন্ত্রী এই মেলা উদ্বোধন করে। সাহিত্য সম্বন্ধে বক্তৃতা করে। ভার্সিটির ছেলেরা মহাপরিচালক (মনসুর মুসাকে) আগেভাগেই বলে রেখেছিল যেন প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়াকে উদ্বোধন করতে ডাকা না হয়। তবু তিনি তাকে উদ্বোধন করার জন্য সাদর সম্ভাষন জানালেন। বাংলা একাডেমীর সদস্য ও আজীবন সদস্যদের বাংলা একাডেমী থেকে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বি.ডি.আর, পুলিশ, আর মিলিটারীর সহায়তায় বহু ছেলেকে হত ও আহত করে মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়ে বাংলা একাডেমীতে এলেন। প্রত্যেক বৎসর ১লা ফেব্রুয়ারী এই বই মেলার উদ্বোধনে ভিতরে, বাইরে, অনেক বইয়ের সমারোহ ও হরেক রকম চুরি, ফিতা, বেলুন, দাও, বঠি, ছুরি-কাঁচি, নানা বিখ্যাত গায়ক, গায়িকার গানের ক্যাসেটের দোকানের সমারোহ হয়। হাজার হাজার নর-নারী, যুবক-যুবতীর আবির্ভাব হয়। মাটির ফুলের টব, মাটির নতুন ডিজাইনের হাড়ি। আর এবার কোন জনমানবের সাড়া শব্দ নেই। যেন এক মৃত শ্বশ্মান পুরী।
এমনকি বাংলা একাডেমীর সদস্য-সদস্যা, জীবন সদস্যরাও উপস্থিত থাকেন নি। বি.ডি.আর, পুলিশ আর মিলিটারীরা কাঁধে রাইফেল ঝুলিয়ে ঠ্যাং ছড়িয়ে দর্শকের চেয়ারে বসে তার ভাষণ শুনেছেন। মুখে ছিল তার আত্মগরিমার হাসি। শিফনের পাতলা শাড়ীতে তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ শোভা পাচ্ছিল। চুল ফুলিয়ে, শ্যাম্পু করে তার শোভা বর্ধন করার প্রয়াস চালিয়েছিলেন। আর বাহিরে, গোলা-গুলির আওয়াজে কান ফেটে যাচ্ছিল। ছেলেরা গুলি খেয়ে আর্তনাদ করছে, তাদের আর্তনাদে আকাশ-বাতাস ব্যথিত।
প্রধানমন্ত্রী একজন মা হয়ে, সন্তানের মা হয়ে< কেমন করে এতগুলো ছেলেকে গুলি করে তাদের দেহ ক্ষত-বিক্ষত করে বাংলা একাডেমীতে গেলেন, ওনি ক্ষতার এত অপব্যবহার করলেন। ১৫ জানুয়ারী রোজার মধ্যে ওনি জনসাধারনের হাজার নিষেধ সত্ত্বেও নির্বাচন করলেন। নির্বাচন স্থগিত রাখার জন্য বুদ্ধিজীবী, গায়ক, গায়িকা, কবি, সাহিত্যক ও রাজনীতিবিদদের হাজার বাধা উপেক্ষা করলেন। কত প্রহসন চলল, কত অনুনয় বিনয় হল। কত শিল্পী, গায়ক, গায়িকার অনুনয়-বিনয় রাখলেণ রোজার মধ্যে নির্বাচন বন্ধ করার জন্য। গ্রামে-গঞ্জে, থানায়-মহকুমায়, শাখা-প্রশাখায়, নগরে-মহানগরে, কোন ভোটের বাক্স গিয়ে পৌছাতে পারেনি। ভোট কেন্দ্রে কোন প্রিজাইডিং অফিসারও যায়নি। শুনেছি ভোটের বাক্স যাওয়া মাত্রই গ্রামের লোকেরা পুকুরের পানির মধ্যে ডুবিয়ে রেখেছে। ছেলেরা প্রিজাইডিং অফিসারদের বলেছে, চাচা বাড়ী গিয়ে খেয়ে দেয়ে ঘমান।
(চলবে———–)