চরফ্যাশন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হলেন প্রফেসর মোহাম্মদ উল্যাহ স্বপন
শতাব্দীর মহানায়ক অনন্য মুজিব
ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন)
(গত সংখ্যার পর) : মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার ঘোষক, বঙ্গবন্ধু, এ ৩টি বিষয় রাজনীতিকে উত্তেজিত করে। এটি জাতীয় সংসদের আলোচনায়ও উত্তেজনা দিয়েছে। এতে অবাক হবার কিছু নেই। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা হবেই। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্ব, বাঙালীর ইতিহাস। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এদেশের স্থপতি। শতাব্দীর মহানায়ক বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে যেমন বাংলাদেশের কথা বলা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধকে বাদ দিয়ে যেমন বাংলাদেশের কথা বলা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বাদ দিয়ে যেমন রাজনীতি করা যাবে না। তেমনি মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস বিকৃত করে এ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা যারা করেছে, তারাও ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। বাংলাভাষা, বাংলাদেশ, আর বঙ্গবন্ধু এ ৩টি একই সুত্রে গাঁথা। সারা দুনিয়া জানে, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু।
সারা দুনিয়া জানে এদেশে ১৯৭১ সালে এ মুক্তিযুদ্ধ হয়। ৩০ লাখ বুকের তাজা রক্ত আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় এদেশে একটি গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলার সময় মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বানিয়ে বিবৃতি প্রচার করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে ৭৫ এর পরবর্তী সামরিক জান্তারা রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে নিষিদ্ধ করেছে।
অবাক হওয়ার বিষয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নাম জেনারেল জিয়া গর্বের সাথে উচ্চারণ করেছে ৭৫ এর আগস্টের আগে পর্যন্ত। জেনারেল জিয়া একটি জাতির জন্ম নিবন্ধে লিখেছিলেন, ১৯৭২ এর স্বাধীনতা দিবসে তখন সাপ্তাহিক বিচিত্রায় জিয়াউর রহমান যে নিবন্ধনটি লিখেন তাতে পরিস্কার ভাষায় লিখেছিলেন—– তারপর এল মার্চ। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যাপক আহ্বানে সারাদেশে শুরু হল অসহযোগ আন্দোলন। ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা আমাদের কাছে এক গ্রীন সিগন্যালের মত মনে হল।
মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ওই নিবন্ধের আরোক জায়গায় লিখেছেন—- একাডেমীর ক্লাশগুলোতে সব সময় শেখানো হত আওয়ামীলীগ হল ভারতের দালাল। পাকিস্তানের সংহতি নষ্ট করতে আওয়ামীলীগ সচেষ্ট। এমনকি উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবেই ক্যাডেটদের শেকানো হত, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হল ওদের রাষ্ট্রের বড় শত্রু।
জিয়াউর রহমান ৭৫ সালে একটি জাতির জন্ম শীর্ষক নিবন্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলে গেছেন। শুধু তাই নয় তার জীবদ্দশায় তিনি নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে দাবী করেননি। মজার ঘটনা হলে বি. এন. পি’র জনক নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে পরিচয় দেয়ার সাহস না পেলেও জিয়াবাদীরা কয়েক বছর যাবত জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বানাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। কিন্তু কেন তা বলছে বা করছে তার দুটো কারণ তাকতে পারে, মিথ্যা বলা এদের জাতীয় চরিত্র।
(চলবে——)