ভোলার তজুমদ্দিনে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা ॥ কৃষকের মুখে হাসি
ভোলার তজুমদ্দিনে সূর্ষমুখী চাষ করে বেশ সাড়া জেগেছেন চাঁদপুর ইউনিয়নে চাষী মোঃ জাহাঙ্গির। তার ক্ষেতে সূর্যমুখী ফুলে বাম্পার ফলন দেখে এলাকার অনেকের মনে আশার আলো জাগিয়েছে। পুরো মাঠে হলদে ফুলের মোহনীয় রূপ দেখতে প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে অনেক প্রকৃতি প্রেমীরা ছুটে আসছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, তজুমদ্দিন উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রনোদনার আওতায় কৃষি অফিস থেকে ৫০ জন চাষীকে সার ও হাইব্রীড জাতের বীজ প্রদান করা হয়। এতে ৫টি ইউনিয়নে প্রায় ১২ হেক্টর সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ হয়েছে। যার উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১২০ মেঃ টন। আবহাওয়া অনূকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের আশাবাদি কৃষকেরা।
চাষী জাহাঙ্গির বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে সার ও বীজ সংগ্রহ করে সাড়ে ৬ কড়া (৫৪ শতাংশ) জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ করি। জমি চেষ দেওয়া থেকে শুরু করে রোপন, সার কীটনাশকসহ প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রথমবার বৃষ্টিতে সব নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও আশা ছাড়িনি। দ্বিতীয়বার একই জমিতে পুনরায় রোপন করি যার কারণে খরচ একটু বেশি হয়েছে। প্রতিটি গাছে ফুল এসেছে। ফুল দেখে মনে হচ্ছে বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অল্প খরচে এ ফুলের চাষ করে বেশ লাভবান হওয়া যায়। পাশাপাশি এ ফুলের সুন্দর্য দেখতেও অনেক লোকজন আসে।
এদিকে সূর্যমুখী ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে চাঁদপুর ইউনিয়নের মধু চাষী মোঃ জিহাদ গত কয়েকদিন পূর্বে ক্ষেতের চারপাশে ১০ টি মৌমাছির বাক্স বসিয়েছে। জিহাদ বলেন, এ ফুলের মধু অনেক ভালো। মৌমাছি গত কয়েকদিনে মৌচাকে বেশ ভালোই মধু সংগ্রহ করেছে। আশা করি আগামি ১ সপ্তাহ পরে প্রায় ২ মন মধু পাওয়া যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন বলেন, সূর্যমুখী হচ্ছে বাংলাদেশের তৈল ফসলের উৎপাদনের যে লক্ষমাত্র তার জন্য একটি সম্ভাবনাময় ফসল। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ডাল তৈল ও মসলা জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের সূর্যমূখীর বীজ ও সার সহায়তা এবং পরামর্শ দিয়ে থাকে। এই মৌসুমে তজুমদ্দিনে ৫টি প্রদর্শনীর মাধ্যমে কৃষদের উৎসাহ বৃদ্ধির চেষ্টা করা হচ্ছে।
এই ফসলে অল্প খরচে মুনাফা অনেক বেশি এবং রবি মৌসুমে পরিত্যক্ত জমি ব্যবহার করে অধিক মূনাফা অর্জন সম্ভব। এছাড়া এ জাতীয় ফসলে মৌ বক্স স্থাপনে মৌপোকার দ্বারা ফসলের কোন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। বরং মৌপোকার মাধ্যমে পরাগায়নের সহায়তা হবে এতে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।