লালমোহনে দাফনের ৯ দিন পর প্রতিবেশির মারধরে বৃদ্ধের মৃত্যুর অভিযোগ
ভোলার পশ্চিম ইলিশায় ডেকে এনে লালমোহনের মাদ্রাসা শিক্ষককে গলা কেটে হত্যার চেস্টা
(অভিযুক্ত আলাউদ্দিন মুরাদার)
![](https://bholarbani.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
ভোলার লালমোহনের মাদ্রাসা শিক্ষক মোঃ ননজরুলকে ভোলার পশ্চিম ইলিশা চরপাতা গ্রামে ফেইজবুকে পরিয়ের মাধ্যমে মোবাইলেফোনে ডেকে এনে গলা কেটে হত্যা চেস্টা অভিযোগ উঠে স্থানীয় আলাউদ্দিন মুরাদার গংদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে ভোলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ চরপাতা গ্রামের হিরন হাওলাদারের বাড়ির পিছনে সদুরচর নামক বিলের মধ্যখানে গম ক্ষেতের ভিতর রাত আনুমানিক ১১ টার সময়।
স্থানীয় হিরন হাওলাদার জানান, ২৩/০৩/২০ ইং তারিখ রাত আনুমানিক ১১ টার সময় হঠাৎ দেখি আমার ঘরের পিছনের একজন চিৎকার করে বলে আমাকে বাঁচাও বাঁচাও এই কন্ঠ শোনার পর আমি আর আমার স্ত্রী টর্চ লাইট নিয়ে বিলের ভিতরে টর্চ লাইট মারলে সামনের দিকে এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা মাদ্রাসা শিক্ষক নজরুলকে হাত পা বাধা অবস্থায় রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। তারপর আমরা এলাকাবাসিরা মাদ্রাসা শিক্ষক নজরুলকে ক্ষেতের ভিতর এ অবস্থা থেকে উদ্ধার করে রাস্তায় নিয়ে আসলে সেখানে শত শত মানুষের সমগম হয়। তারপর আমি আমার এলাকার স্থানীয় ২ নং ওয়ার্ডের কামাল মেম্বারকে বিষয়টি অবগত করলে তিনিও সাথে সাথে ঘটনাস্থলে চলে আসেন।
এদিকে ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার খবর শোনার পর ঘটনাস্থলে এসে পশ্চিম ইলিশার চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবগত করলে চেয়ারম্যান ইলিশা ফাঁড়ির ইনচার্জ রতনকে ফোনে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে ফোর্স নিয়ে এসে মাদ্রাসা শিক্ষক মোঃ নজরুলকে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে যান।
অভিযোগকারি মাদ্রাসা শিক্ষক মোঃ নজরুল জানান, আমি দীর্ঘ তিন বছর ভোলার পশ্চিম ইলিশার গুপ্তমুন্সি মাদ্রাসায় চাকরি করতাম। তারপর সেখান থেকে আমি লালমোহন বদলী হয়ে চলে আসি। তিনি আরো জানান, দীর্ঘদিন চাকরি করার সুবাদে করোনার বন্ধ পাওয়ায় আমি বন্ধুদের সাথে দেখা করতে ভোলা পরানগঞ্জ যাই। সেখানে গিয়ে ফেইজবুকে পরিচয় বন্ধু আলাউদ্দিন মুরাদারের সাথে এক বছর ফেইজবুক মেসেন্জারে কথা হয় বিভিন্ন কুশলাদি হয় একে অন্যের সাথে একটি বন্ধুর তৈরির সৃস্টি হয়।
তাই আমি ভোলার পরানগঞ্জে বাজারে এসে ফেইজবুক বন্ধু আলাউদ্দিন মুরাদারকে ফোন দিলে তিনি আমাকে তার মোটর সাইকেল দিয়ে পরানগঞ্জ বাজার থেকে তার এলাকায় নিয়ে যায় এবং তারপর তার বাসার সামনে সৌরাভের দেকানে গিয়ে ১ প্যাক সিগারেট কিনে তারপর আমাকে বলে বন্ধু চল আমরা আমাদের বিলের ভিতর থেকে একটু ঘুরে আসি। এই কথা বলে বিলের ভিতর গম ক্ষেতের ভিতর অনেক দূরে সেখানে নিয়ে যায় আমাকে। রাত ১১ টার সময় বিলের ভিতর গিয়ে দেখি দুইটি ছেলে দাড়িয়ে আছে। তখন আমি আলাউদ্দিন মুরাদারকে জিজ্ঞাসা করি ভাই এরা কারা ? তখন তিনি বললো এরা আমার বন্ধু একজন আকবর আর একজন শামিম।
আলাউদ্দিন আমাকে তার বন্ধুদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পর দেখি আকবর আর শামিমকে ইশারা দিল। ইশারার পর আকবর আর শামিম আমাকে আলাউদ্দিন মুরাদারের নির্দেশে হাত পা বেধে টাকা পয়সা ও একটি টাচ ফোন নিয়ে যায় এবং সমস্ত শরির উলঙ্গ করার চেস্টা করলে আমি চিৎকার করি। আমার ডাক চিৎকার স্থানীয় হিরন নামক এক ব্যাক্তি দৌড়ে আসলে আলাদ্দিন গংরা দৌড়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। তার পুলিশ আমাকে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে।
মাদ্রাসা শিক্ষক নজরুল বলেন, আমার ডাক চিৎকারে কেউ না এগিয়ে আসলে আমাকে মেরা ফেলা হত। মো. নজরুল ইসলাম (২৫) লালমোহন উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে এবং স্থ্ানীয় একটি মাদরাসার মুহতামিম হিসেবে চাকরি করছেন।
এদিকে অভিযুক্ত আলাউদ্দিন মুরাদার মাদ্রাসা শিক্ষক নজরুলকে হাত পা বেধে রাতে বিলের ভিতর নিয়ে যাওয়া ও মাইর পিটসহ মাদরাসাকে লাঞ্ছিতসহ টাকা পয়সা ছিনতাই সাথে থাকা মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন।
দক্ষিণ চরপাতা ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার কামাল জানান, বিষয়টি সত্য এবং খুব দুঃখ জনক। আলাউদ্দিন মুরাদার মোবাইলে মাদ্রাসা শিক্ষককে ডেকে এনে বিলের ভিতর রাত ১১ টার সময় নিয়ে যে কাজটি করেছে এটা মোটেই ঠিক করেনি। তার এই রকম অপরাধের উপযুক্ত বিচার দাবি করছি যেহেতু অদুর ভবিষৎ এই ধরনের কাজ না করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, আলাউদ্দিন এর আগে তা স্ত্রীকে মাদক খেয়ে বাসায় ডিকে মাইর পিট করায় তার স্ত্রী তার নামে নারি শিশু নির্যাতনের মামলা করে সেই মামলায় তিনি জেল খেটেছেন। আলাউদ্দিন মুরাদারের আচার আচারণ এলাকায় এলাকার মুরুব্বিরা ক্ষিপ্ত।
পশ্চিম ইলিশা ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস জানান, আমাকে স্থানীয় ২নং ওয়ার্ডের আমার ইউনিয়নের ইউপি সদস্য কামাল ২৩ তারিখ রাত ১১.৩০ মিনিটের সময় আমাকে ফোনে জানান, যে মালের হাটের আলাউদ্দিন মুরাদার নামে একটি ছেলে লালমোহন মাদ্রাসা শিক্ষককে মোবাইলফোনে ডেকে এনে রাতে দক্ষিণ চরপাতা সদুরচর নামক হিরনের বিলের ভিতর গম ক্ষেতের ভিতরে হাত পা বেধে নাকি হত্যা করার চেস্টা করছে। তার ডাক চিৎকার শুনে নাকি তাকে উদ্ধার করে আমাকে জানালে আমি ফাঁড়ির ইনচার্জ রতনকে ফোন করলে রতন সাব এসে মাদ্রাসা শিক্ষককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এই বিষয় জানতে ফাঁড়ির ইনচার্জ রতন এ প্রতিবেদক জানান, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থান থেকে মাদ্রাসা শিক্ষক নজরুলকে উদ্ধার করি এবং পরে নজরুলের কাছ থেকে জানতে পাড়ি ফেইজবুক মেসেন্জারের মাধ্যমে পরিচয় হয় আলাউদ্দিন মুরাদারের সাথে। পরে তাদের ভিতর এক ধরনের খারাপ কথা বার্তা হয় এক পর্যায়ে মাদ্রাসা শিক্ষক ভোলায় আসলে তাকে সেই সুযোগে হয়তো এই আচারন করা হয়েছে।