সর্বশেষঃ

প্রান্তিক-নিম্ন আয়ের মানুষদের ভাতা প্রদানের দাবি ফখরুলের

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আতঙ্ক না ছড়িয়ে দলমত-নির্বিশেষে সকলকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে প্রান্তিক-নিম্ন আয়ের মানুষদের ভাতা প্রদানের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান ফখরুল। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠকটি বসে। এতে লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও যোগ দেন।

প্রান্তিক-নিম্ন আয়ের মানুষদের ভাতা প্রদানের দাবি করে ব্যবসায়, গার্মেন্টস ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং দৈনিক কর্মীর উদাহরণ টানেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ‘নিম্ন আয়ের মানুষদেরকে সরকারের তরফ থেকে ভাতা প্রদান করা উচিৎ। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আপদকালীন পারিবারিক ভরণপোষণ ও বিশেষ ভাতা-বীমার ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে। এটা করা অত্যন্ত জরুরি।’

ফখরুল বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করছি, এই ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ যদি সরকার না করে, যদি একমাস এরকম অবস্থা চলে তাহলে মেবি এ সিচুয়েশন লাইক ফেমিন। কারণ, সাধারণ মানুষ তো খাবার পাবে না। এরপরে দাম বাড়তে শুরু করেছে। চালের দাম তো বেড়ে গেছে, পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। কারণ, সরকারের আগে কোনো প্রস্তুতি ছিল না।’

চীনের উদাহরণ দিয়ে ফখরুল আরও বলেন, ‘চীনের যখন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে, তারা যখন জরুরীভিত্তিতে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বার বার বলা হচ্ছে এই বিষয়টি তখনও। কিন্তু আমাদের সরকার বিষয়টাকে হালকা করে দেখেছে, হালকা করে কথা বলেছে। আজকে যখন এক্সপ্রেস ট্রেন উপরে এসে পড়ে গেছে। এখন এটার বিষয়ে দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা করা যদি না যায় তাহলে প্রচণ্ড রকমের বিপর্যয় আসতে পারে বলে আমরা মনে করি।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দলের পক্ষ থেকে আমরা মনে করি, এটা (করোনাভাইরাস) একটা জাতীয় ও বৈশ্বিক বিপর্য্য়। সেজন্য আমরা দলমত-নির্বিশেষ, জাতি ধর্ম-নির্বিশেষ সকল মানুষের প্রতি আহ্বান জানাই; আসুন আতঙ্কগ্রস্থ না হয়ে আমরা এটাকে মোকাবিলা করি।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের যা যা কাজ করা দরকার সেই কাজগুলো আমরা যেন করি। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই- জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে এই বৈশ্বিক বিপর্যয়কে মোকাবিলা করতে হবে।’

দেশের জনগণকে সচেতন হতে আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আপনারা ঘরে থাকুন।’ এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকে বলা উচিত- ‘তোমরা হোম কোয়ারেনটাইনে চলে যাও’, মন্তব্য করেন তিনি।

ব্যবসায়ীদে আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি অনুরোধ জানাবো ব্যবসায়ীদের প্রতি- দয়া করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম বৃদ্ধি করবেন না। মানুষের এই দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন।’

সংবাদ সম্মেলনে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রাক-প্রস্তুতি না থাকার জন্য ‘সরকারের ইচ্ছাকৃত উদাসীনতা ও ব্যর্থতা’ কে দায়ী করেন মির্জা ফখরুল। সরকারের কাছে করোনাভাইরাস সনাক্তকরণ কিট, চিকিৎসকদের বিশেষ পোষাক সরবারহ, তাদের প্রশিক্ষনসহ হাসপাতালে এই রোগের আক্রান্তদের স্বাস্থ্য সেবার বিষয়ে সরকারের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবিও জানান ফখরুল।

বৈঠকে ও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়. নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।