সর্বশেষঃ

ভোলার রাজাপুরে জেলেদের চাল বিতরণে চালবাজি

ভোলার রাজাপুরে জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চালের সুসম বন্টন না করে চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠে রাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানকার চালের গোডাউনটি তালাবদ্ধ করে দিয়েছেন প্রশাসন। ২১ মার্চ শনিবার এ ঘটনা ঘটে। রাজাপুরের ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বার আঃ সালাম জানান, জেলেদের জন্য দুবারে বরাদ্দকৃত মোট ২২৪ মেট্রিক টন চাল উত্তলন করা হয়। রাজাপুরে নিবন্ধনকৃত জেলের সংখ্যা ৪০৪৭ জন। যাদের প্রতিজনকে ৪০ কেজি করে চাল প্রদান করার কথা থাকলেও তা সুসমভাবে প্রদান করা হয় নাই। প্রত্যেককে ৪০ কেজির স্থলে ২ থেকে ৪ কেজি কমে প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও কিছু জেলেদেরকে একেবারে চাল দেয়া হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান্যানের বিরুদ্ধে।


এদিকে রাজাপুরের সকল ইউপি সদস্য বরাদ্দকৃত চালের হিসাব চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলে ২১ মার্চ শনিবার সকল ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে চালের হিসেব করার কথা থাকলেও তা না করে চেয়ারম্যান্যান তার আত্মীয়-স্বজদের চাল বিতরন করেছেন। মেম্বারগন সকলে মিলে চেয়ারম্যান্যানের নিকট চাল বিতরণের কথা জানতে চাইলে এটা তার একান্ত ব্যাপার বলেই প্রকাশ করেন তিনি এমনটাই জানান মেম্বার সালাম। পরে চেয়ারম্যানসহ মেম্বারগন সকলে চালের হিসেব করতেই মোট বরাদ্দের উত্তোলিত চালের ২২৪ মেট্রিক টনের মধ্যে ৩২ মেট্রিক টন চালের ঘাটতি দেখা দেয়। উপস্থিত ইউপি সদস্যবৃন্দ জানান, জেলেদের সুসম বন্টনের জন্য ২২৪ মেট্রিক টন চাল ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার হেলাল উদ্দিন গোডাউন থেকে উত্তোলন করেন। কিন্তু উত্তোলনের পরে ৩২ টন চালের হিসেব মিলেনা বলে জানান তারা।


হিসেবে কারচুপি হয়েছে কিনা মর্মে ইউপি সচিব গোলাম সারোয়ার এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, ৩২ মেট্রিক টান চালের ঘাটতি নয়, বরং ২২৪ মেট্রিক টন চাল সম্পূর্ণ উত্তোলন করা হয় নাই। কিছু চাল গোডাউনে থাকতে পারে, তবে আমি কনর্ফ্রাম না। কারন চাল উত্তোলনের দায়িত্ব রয়েছেন হেলাল মেম্বারের নিকট। তিনি আরো জানান, আজ (২১ মার্চ) বিতরণর কথা ছিলনা। আজ পরিষদে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় করনীয় বিষয়ক আলোচনা ছিল। কিন্তু কেন আবার চাল বিতরণ শুরু হলো তা আমি নিশ্চিত না। তবে বিতরনের এক পর্যায়ে হৈ চৈ হয়েছে বলে জানান তিনি। হৈ চৈ এর কিছুক্ষণ পরেই চেয়ারম্যান মহোদয় চলে গেছেন। আমিও তার পিছ দিয়ে পরিষদ থেকে চলে এসেছি।


আপনাদের পরিষদে ম্যাজিস্ট্রেট এসেছিল মর্মে আপনি কি জানেন এমন প্রশ্নে সচিব সারোয়ার বলেন, আমাকে এডিএম স্যার ফোন করে জানিয়েছে আমাদের পরিষদের চাবির দরকার। তখন আমি পরিষদের প্রাক্তন চৌকিদার আবুল বাশারের মাধ্যমে চাবি স্যারের নিকট পাঠাই। কিন্তু চাবি কেন প্রয়োজন আমি তা তার কাছ থেকে জানতে পারিনাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে রাজাপুরের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি বিধায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে অভিযোগস্থল পরিদর্শনকারী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মামুন আল ফারুক এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইউপি মেম্বারদের অভিযোগের ভিত্তিতে রাজাপুরে গিয়ে চালের গোডাউনটি তালাবদ্ধ করে দিয়ে এসেছি। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।