অপহরনের ২ মাস পর ভোলার ছেলে রাসেল বরিশাল থেকে উদ্ধার
অপহরণের ২ মাস পর ভোলার ছেলে রাসেল বরিশালের বাবুগঞ্জ থেকে উদ্ধার হয়েছে। ৩ মার্চ মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান পিবিআইর এর কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান এ প্রতিবেদককে তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ২ মাস ৮ দিন পর তাকে উদ্ধার করা হয়। তার বাড়ী ভোলা সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নে। দুই মাস আট দিন পর অপহরন হওয়া রাসেলের উদ্ধার হওয়ার খবর শুনে রাশেলের মা বকুল বেগম, বোন, ইয়াসমিন খুশিতে আবেগ আপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন।
রাশেলের মা বকুল বেগম জানান, আমার ছেলেকে ২ মাস ৮ দিন আগে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী খাইরুল আমার বাসা থেকে সকাল ভোর ৬ টার সময় গরু কেনার কথা বলে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর থেকে আমার ছেলেকে আর পাই নাই। তখন আমি খাইরুলকে আমার ছেলে রাসেলের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, রাসেলকে আমি লক্ষ্মীপুর মজু চৌধুরি হাট পাঠাইছি। সে এসে পরবে, সেই হইতে আর রাসেল আসে নাই এবং কোথাও খুঁজেও পাইনাই। তাই আমার ছেলে রাসেলকে না পাওয়া এবং খাইরুলকেও না পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি ও স্থানীয় গন্যমান্যদেরকে জানাইলে আসামিরা গাঁ ডাকা দেয়। তখন আমি বাধ্য হয়ে ভোলা থানায় অপহরণ মামলা করতে গেলে মামলা করতে না পেরে ভোলা জজ কোর্টের সরনাপন্ন হয়ে খাইরুলকে আসামী করে একটি অপহরন মামলা করি। মামলাটি করলে বিজ্ঞ আদালত বরিশাল পিবিআই এর কাছে মামলাটি হস্তান্তর করেন। মামলাটির ২ মাস ৮ দিন পর ৩ মার্চ মঙ্গলবার আসামি খাইরুলের চাচাতো ভাই অসিম রাসেলের বাড়ি এসে রাসেলের মা বকুল বেগমকে ফোনে কথা বলার জন্য রাসেলেকে ফোনটি ধরিয়ে দেন।
রাসেল এর মা আরো বলেন, খাইরুলের চাচাতো ভাই অসিম আমার কাছে এসে বলে রাসেলকে পাইছে। তাই আপনার সাথে খাইরুল ভাই’র কথা বলাইয়া দেয়ার জন্য এসেছে। রাসেলের উদ্ধারের খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সাবেক হোসেন মেম্বার বরিশাল পিবিআইর কাছে গিয়ে উপস্থিত হন।
রাসেলের মা বকুল বেগম জানান, আমার রাসেলকে যারা বাসা থেকে ডেকে নিয়ে অপহরণ করছে তারাই আজ আমাকে রাসেলের উদ্ধারের খবর জানিয়েছেন। পরে খবর শুনি আসামিরা বরিশাল। আমরা না যাইতে আসামি পক্ষের লোকজন কিভাবে বরিশাল গেল আমি অবাক। রাসেলকে খুজে পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, বাবা কি বলবো আমি আবেগে এখন ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। তাই কিছু বলতে পারছিনা। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি যে, আমার ছেলে রাসেলকে পাওয়া গিয়েছে। রাসেলের খবর পেয়ে ভোলা থানার এএসআই আরিফ হোসেনকে অবগত করি।
খাইরুলের বোন জামাই সুমন, রাসেল এর বোন জামাই মোঃ হানিফকে ফোন দিয়ে সন্ধ্যায় বলেন, তোরা রাসেলকে ২ মাস ৮ দিন আগে যেখানে রাইখা আসছেন; সেখানে থেকেই রাসেলকে পাওয়া গেছে এই বলে হুমকি দেন।
এদিকে রাসেলের মা বকুল বেগম ছেলেকে না পেয়ে পাগল। আসামি খাইরুল স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে শালিসে বসলে তখন রাসেলের মা বকুলকে খাইরুল বলেন, আমরা একটা সমাধানে বসি। রাসেলের মা বলেন, আমার ছেলে জীবিত না মৃত কোন হিসেবে আপনারা বসবেন ? তখন খাইরুল বলেন, মৃত হিসেবে আপনাকে ২ লাখ টাকা দিয়ে দেই। তখন ওই সমাধানে রাসেলের মা রাজি হননি। রাজি না হওয়া আসামিরা মামলাবাজ ও মাদককারবারী এবং এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন।