গ্রেফতার বাঙালি অধ্যাপক

উত্তপ্ত মেঘালয়ে সংঘর্ষে মৃত্যু : কারফিউ জারি

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে মেঘালয়ে খাসি ছাত্র সংগঠন (কেএসইউ) এবং অ-জনজাতি সম্প্রদায়ের সংঘর্ষে একজন প্রাণ হারিয়েছেন। প্রচুর সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে। তার জেরে মেঘালয়ের ৬টি জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারফিউ জারি হয়েছে শিলংসহ একাধিক জায়গায়।

সীমান্ত সংলগ্ন জনজাতিপূর্ণ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে বাইরে থেকে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিশেষ অনুমতি লাগে, আক্ষরিক অর্থে যা ইনার লাইন পারমিট বা, আইএলপি হিসেবে পরিচিত। সেখানকার বাসিন্দাদের আশঙ্কা, সিএএ চালু হলে এই ইনার লাইন পারমিট প্রথার উপর প্রভাব পড়বে। পূর্ব খাসি পার্বত্য অঞ্চলের ইছামতী এলাকায় তা নিয়ে বিশেষ বৈঠক চলছিল কেএসইউ এবং অ-জনজাতি প্রতিনিধিদের মধ্যে। তখনই দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।

জানা গেছে , সংঘর্ষ চলাকালীন বাজার সংলগ্ন বেশ কয়েকটি বাড়িও জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। ভাঙচুর চালানো হয় একাধিক গাড়িতেও। সংঘর্ষ চালকালীন লুরশাই হাইনিউতা নামের এক কেএসইউ সদস্যের মৃত্যু হয়। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আহত হয়েছেন একাধিক পুলিশকর্মীও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শিলংসহ একাধিক এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পূর্ব জয়ন্তিয়া,পশ্চিম জয়ন্তিয়া, পূর্ব খাসি, রি ভই, পশ্চিম খাসি এবং দক্ষিণ-পশ্চিম খাসি পার্বত্য এলাকায়। মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার নির্দেশে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলার বিষয়ে নজর রাখতে একাধিক জায়গায় নামানো হয়েছে সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্স বা, সিএপিএফ।

এদিকে দিল্লি হিংসা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে ফেসবুকে পোস্ট করায় আসা,রে শিলচরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে কলেজ শিক্ষককে। ধৃত ওই অধ্যাপকের নাম সৌরদীপ সেনগুপ্ত। শিলচরে গুরুচরণ শীল কলেজের অতিথি অধ্যাপক। সৌরদীপ কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সহকারী সম্পাদক। খবর, সম্প্রতি দিল্লিতে হিংসার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে তিনি একটি ফেসবুক পোস্ট করেন। তার পরিবারের অভিযোগ, এরপর কলেজে গেলে তাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এরপর তিনি ওই পোস্ট ফেসবুক থেকে সরিয়ে নেন। পরে ক্ষমাপ্রার্থনা করে আরও একটি পোস্ট করেন সৌরদীপ সেনগুপ্ত।

তার পরিবারের আরও অভিযোগ, এরপর বাড়িতে চড়াও হয়ে ফেসবুক লাইভে তাকে ক্ষমা চাওয়াতে পরিবারের সদস্যদের চাপ দেওয়া হয়। সেই সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। এরপর বাড়ি ফিরতেই তাকে গ্রেফতার করে আসাম পুলিশ।শিলচর সদর থানায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সন্ধ্যায় পুলিশ অভিযুক্ত সৌরদীপ সেনগুপ্তকে গ্রেফতার করে।

এখানেই শেষ নয়, কলেজ থেকে সৌরদীপকে বরখাস্তেরও দাবি করেছেন পড়ুয়ারা। তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভেদাভেদ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টাসহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। সৌরদীপের পোস্ট প্রসঙ্গে উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।