চরফ্যাশন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হলেন প্রফেসর মোহাম্মদ উল্যাহ স্বপন
প্রেমিকাকে হত্যার পর সাত টুকরা: কলেজ শিক্ষকের ফাঁসির আদেশ
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মালাকে ধারালো বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে এবং লাশ সাত টুকরো করে ড্রামে ভরে ঘরের মধ্যে লুকিয়ে রাখে পলাশ
বরগুনায় চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্রী ফারিয়া আক্তার মালা হত্যা মামলার প্রধান আসামি কলেজ শিক্ষক আলমগীর হোসেন পলাশকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন বরগুনার নারী-শিশু নির্যাতন দমন আদালত।
মামলার অপর আসামি অ্যাডভোকেট বিপ্লব তালুকদারকে যাবজ্জীবন ও রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজকে সাত বছর কারাদণ্ড এবং ইভা রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে বরগুনার নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান ২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এই আদেশ দেন। এ সময় আদালতে আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বিশেষ পিপি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল এবং আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট কমল কান্তি দাস, আবদুর রহমান নান্টু ও হুমায়ুন কবির।
আলমগীর হোসেন পলাশ পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার বাসন্ডা গ্রামের মৃত লতিফ হাওলাদারের ছেলে। এ ছাড়াও বিপ্লব ও তার স্ত্রী ইমা রহমান এবং রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ আমতলী পৌর শহরের হাসপাতাল সড়কের বাসিন্দা।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর মালাকে নিয়ে পলাশ তার ভাগ্নিজামাই আমতলীর হাসপাতাল রোডের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট মো. মাঈনুল আহসান বিপ্লব তালুকদারের বাসায় বেড়াতে আসেন। ২৪ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে বিপ্লবের স্ত্রী তার ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যায়। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মালাকে ধারালো বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পলাশ। পরে লাশ সাত টুকরো করে ড্রামে ভরে ঘরের মধ্যে লুকিয়ে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ বিপ্লব তালুকদারের বাসার ড্রাম থেকে নিহত মালারটুকরো টুকরো মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং পলাশকে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় ২৫ অক্টোবর পুলিশ বাদি হয়ে আমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ঘটনার পরের দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন পলাশ। তদন্ত শেষে পুলিশ এ মামলায় পলাশ, বিপ্লব, রিয়াজ ও বিপ্লবের স্ত্রী ইমা রহমানকে আসামী করেঅভিযোগপত্র দাখিল করে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, বরগুনার চাঞ্চল্যকর ফারিয়া আক্তার মালা হত্যা মামলায় প্রধান আসামি আলমগীর হোসেন পলাশের বিরুদ্ধে ধর্ষণ শেষে হত্যা করায় ফাঁসির আদেশ এবং হত্যার পরে লাশ গোপন করায় ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ১ লক্ষ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার ২ নম্বর আসামি মাইনুল আহসান তালুকদার বিপ্লব মালাকে ধর্ষণ করায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও লাশ সাত টুকরো করে গোপন করার চেষ্টা করায় ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে মামলার তিন নম্বর আসামি রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ লাশ গোপনে সহযোগিতা করায় সাত বছরের কারাদণ্ড এবং বিপ্লবের স্ত্রী ইমা রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
এ বিষয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী হুমায়ুন কবির বলেন, “এ মামলায় বিজ্ঞ ট্রাইবুনাল যে রায় দিয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই। আলমগীর হোসেনের যে স্বীকারোক্তির উপর ভিত্তি করে রায় দিয়েছেন সেখানে পলাশ খুনের কথা স্বীকার করেনি। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ এবং উচ্চ আদালতে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো।”