সর্বশেষঃ

দ্বীপক নাগের চেহারা দেখে টাকা দেই নাই ॥ নিঃস্ব শত শত লোক

প্রতারণার মাধ্যমে নাগ অলংকার নিকেতন দখলে নিলো ভূমি অফিসের নাজির ইউসুফ গংরা

(এটা নাগ অলংকার নিকেতন দোকানের বর্তমান ছবি)

ভাই আমরা দ্বীপক নাগের পাওনাদাররা এই দোকানটি (নাগ অলংকার নিকেতন)’র দিকে তাকিয়ে আছি। যদি কোনদিন তার ওয়ারিশরা এসে দোকানটি খোলে, তাহলে অন্তত কিছুটা টাকা পাব। যখন দেখলাম দোকানটিতে কে বা করা রং করছে তখন পথে বসা ছাড়া উপায় নাই। এভাবে মনের দুঃখে, কষ্টে ক্ষোভের সুরে কথাগুলো বললেন দ্বীপক নাগের কাছে ১০ লাখ টাকা পাওনাদার আরিফ হোসেন।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে দেখা যায়, দ্বীপক নাগের দোকান (নাগ অলংকার নিকেতন) এর সাইনবোর্ড মুছে ফেলা হয়েছে। সার্টারে পরিস্কার করে রং করা হয়েছে। মনে হচ্ছে যে কোন দিন দোকান খুলে বসবে। অথচ কিছু দিন আগেও দেখেছি দোকানের সামনে ময়লার স্তুপ এবং প্রতিটি সার্টারে ডাবল তালা।
পাওনাদার অফিসার পাড়ার আসমা আক্তার বলেন, এই দোকান দেখেই আমরা টাকা দিয়েছি। দ্বীপক নাগের চেহারা দেখে টাকা দেই নাই। কাজেই যেই দোকান নিবে সে আমাদের প্রত্যেকের পাওনা টাকা দিয়েই দোকান খুলতে হবে।

(এটা নাগ অলংকার নিকেতন দোকানের আগের ছবি)

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পাওনাদার বলেন, দ্বীপক নাগকে টাকা দেয়ার কিছুদিন পর সে পালায়। এই খবর শুনে আমার স্ত্রী স্টোক করে। আজো সে বিছনায়। আমার জানা মতে, শতে শতে মানুষ কোটি কোটি টাকা তার কাছে পাবে। সে চলে যাওয়াতে তারা এখন নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে।
দ্বীপক নাগের (নাক অলংকার নিকেতন) জায়গাটি ভিপি সম্পত্তি। বহু বছর ধরে নাগ পরিবার লিজ নিয়ে ব্যবসা করে আসছে। গত ২১ এপ্রিল ২০১৮ সালে প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে ভারতে চলে যান দ্বীপক নাগ। ২২ এপ্রিল ২০১৮ “ভোলার স্বর্ণ ব্যবসায়ী দ্বীপক নাগ ৩ কোটি টাকা নিয়ে উধাও ॥ ব্যবসায়ীদের মাঝে আতঙ্ক” শীর্ষক শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে ২৪ এপ্রিল জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা নাগ অলংকার নিকেতন দোকানটি পরিদর্শনে গেলে সেখানে পাওনাদাররা জড়ো হয়। প্রশাসন তাদেরকে সকল ধরনের সহযোগীতার আশ্বাস দেন। তারপর থেকেই দোকানটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কিছুদিন যেতে না যেতেই ভোলা সদর উপজেলা ভূমি অফিসের নাজির মোঃ ইউসুফের ভাই তানভিরের নামে নাগ অলংকার নিকেতন জায়গাটি লিজ নেন। জানা যায়, ইউসুফ গংরা নিজেরাই ৩টি দরখাস্ত করেন। ২টি কে প্রত্যাহার করে নিয়ে তার ভাইটির নামে লিজ আনেন।
এ ব্যাপারে নাজির ইউসুফকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, হ্যাঁ, ৩টি দরখাস্ত পড়ছে, ২টি প্রত্যাহার হওয়ায় তানভিরেরটি-ই টিকেছে। সার্ভেয়ার রিপোর্ট দেয়ার পর এসিল্যান্ড ও ইউএনও স্যারের সম্মতির ভিত্তিতেই করা হয়েছে। দখল বা পূর্বের মালিকানা না থাকলে ভিপি সম্পত্তি লিজ নেওয়া যায় না। কিন্তু আপনার ভাই এ সম্পত্তিটি কিভাবে লিজ নিলেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অফিসের দায়িত্বশীল আব্দুস সালাম বলেন, ৩টি দরখাস্ত পড়েছিল, এরমধ্যে ২টি প্রত্যাহার করায় বাকি যে ১টি ছিল তার নামেই লিজ হয়েছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।