তজুমদ্দিনে সাড়ে সাত হাজার হেক্টর জমিতে রবিশস্য অনাবাদি থাকার আশংকা
ভোলার তজুমদ্দিনে অসময়ে বৃষ্টিপাাতের কারণে শুষ্কমৌসুমে রবিশস্য চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। বৃষ্টিতে ক্ষেতে পানি জমে রোপণ করা কিছু কিছু বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। পানি জমে থাকার কারণে এ উপজেলায় এবছর প্রায় সাড়ে সাত হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি থাকার আশংকা করছে কৃষি অফিস।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, এবছর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে সরিষা, আলু, বাদাম, মরিচ, সয়াবিনসহ ৭ হাজার ৪শত হেক্টর জমিতে শুষ্কমৌসুমে রবিশস্য আবাদের লক্ষমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে। সারের দাম ও বীজ নিয়ন্ত্রনে এবং পরিবেশ অনুকূলে থাকায় কৃষকরা রবিশস্য আবাদ শুরু করেছিল। অসময়ে অতি বৃষ্টিপাাতের কারণে জমিতে পানি জমে থাকায় বিপাকে পড়েছে কৃষক।
একাদিক কৃষকের সাথে আলাপকালে জানা যায়, এসব এলাকার অধিকাংশ কৃষকেরা অধিক ফলনের আশায় ডায়মন্ড জাতের আলুর চাষ করে। এবছর তারা মৌসুমের শুরুতেই সার বীজ সংগ্রহ করে জমি প্রস্তুত করে। কিন্তু বীজ রোপনের পর চারা গজানোর আগেই বৃষ্টি হয়ে সম্পন্ন বীজ নষ্ট হয়ে যায়। পানি শুকানোর পর পুনরায় এসব জমিতে অন্য ফসলেরও চাষ করাও সম্ভব নয়। যার কারণে এসব জমি এবছর খালি পড়ে থাকার আশংকা রয়েছে। এতে লোকসানের মুখে হতাশা হয়ে পড়েছে কৃষকেরা।
শম্ভুপুর ইউনিয়নের কৃষক আঃ মান্নান বলেন, বুক ভরা আশা নিয়ে ধার দেনা করে প্রায় সাড়ে ৩ একর জমিতে আলুর বীজ রোপণ করি। প্রতি একর জমিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। বীজতলা থেকে চারা গজানোর আগেই বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে যায়। পানি সরানোর চেষ্টা করেও কোন লাভ হয়নি। সম্পন্ন বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। এতে প্রায় দেড় লক্ষ টাকার বেশি ক্ষতি হয়। এখন কীভাবে ধার কর্জ করা এসব টাকা পরিশোধ করবো তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ি।
চাঁচড়া ইউনিয়নের কৃষক শাহে আলম বলেন, ৮০ শতাংশ জমিতে উন্নত মানের বাদাম, মরিচ বীজ সংগ্রহ করে চাষ শুরু করেছি। জমি প্রস্তুত থেকে শুরু করে সার, বীজ সংগ্রহ ও রোপন করা পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। বিগত বছরের লোকসান কাটিয়ে লাভবান হওয়ার আশায় আবাদ করলেও বৃষ্টির কারণে সম্পন্ন বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সকল আশাই মাঠিতে মিশে যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন বলেন, হঠাৎ বৃষ্টির কারণে প্রায় ২শ হেক্টর জমির আলুর বীজতলা নষ্ট হয়েছে। এছাড়া জমি ভিজা থাকার কারণে কৃষকরা সময় মতো ফসল বুনতে পারছেনা। পুনরায় বৃষ্টি হলে চাষাবাদের সময় না থাকায় প্রায় ৭ হাজার ৪শত হেক্টর জমি এবছর অনাবাদি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ধারণ করে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে।