ভোলার বোরহানউদ্দিনে পাষণ্ড ছেলের অত্যাচারে মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা

ভোলা বোরহানউদ্দিনের কাচিয়া ইউনিয়ন এর ৬ নং ওয়ার্ড মিরাকান্দি সৈয়দ মুন্সি বাড়িতে ছেলে মোঃ শাহাজাহান এবং ছেলের স্ত্রী নারগিস বেগম এর অত্যাচারে গর্ভধারীনি মাতা হনুফা বিবি (৭০) কয়েক বার নিজেই অপমানের শোকে গলায় ফাঁস দিতে গেলে ঐ এলাকার লোকজন দেখতে পেলে তাকে উদ্ধার করে।
গর্ভধারীনি মায়ের এই অত্যাচারের কথা সংবাদ কর্মীরা শুনতে পেয়ে ঘটনা স্থানে গেলে তার ছেলে শাহজাহান (৩৫) এবং তার স্ত্রী নারগিস বেগম (৩০) কে জিজ্ঞেস করলে তারা বলে, আমার মা আমাকে অনেকগুলো বিয়ে করিয়েছে এবং আমার বর্তমান স্ত্রী নারগিস বেগমকে ছাড়ার জন্য আমাকে বলে। তাই মাঝে মাঝে একটু ঝগড়া বিবাদ হতো। তার মাকে মাইর দোর করতো এবং তার মা অপমানের শোকে গলায় ফাঁস দিতে চেষ্টা করছে, এমন প্রশ্নের ব্যাপারে জানতে চাইলে, সে চুপ করে থাকে। অনেক্ষণ পরে বলে তার মাথায় সমস্যা আছে।
ঐ এলাকার কয়েকজন গন্যমান্য লোকদের এই ঘটনার কথা জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন, শাহাজাহান এবং তার স্ত্রী নারগিস বেগম প্রায়ই তার মাকে মারধর করে এবং ছেলে এবং ছেলের স্ত্রী অপমানের শোকে কয়েকবার সে গলায় ফাঁসও দিয়েছে। এই ঘটনার ব্যাপারে চেয়ারম্যান আব্দুর রব গাজী কাছেও বিচার দেয়া হয়েছে। তারা আরো বলেন, শাহাজাহান প্রায় ৭ টি বিয়ে করেছে, সে অশ্ব ও পাইলসের নকারি কবিরাজি করে, তার এই ভুল চিকিৎসায় অনেকেরই ক্ষতি হয়েছে। ভুক্তভোগীরা হলেন, মোঃ শাহিন, মোস্তাফ আরো নাম অজানা অনেকে। এলাকাবাসী লোক জন আরও বলেন কিছুদিন আগে তার ভুল চিকিৎসার কারণে তার তিনটি গরু কে সাদা সার খাওয়াইয়া মেরে ফেলছে।
শাহাজাহান এর মাকে সংবাদ কর্মীরা কয়েকদিন যাবত খোজাখুজি করার পর, মঙ্গলবার ৯ ঘটিকার সময় ভাইদের বাড়িতে আছে বলে জানতে পেরে সেখানে যায়। এবং শাহাজাহান এর মাকে এই ঘটনার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে, সে প্রথমে কিছু বলতে চায়না এবং অনেক্ষন পর হু-হু করে কেঁদে ভেঙে পরেন এবং বলেন, আমার স্বামী আাজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে মারা যায়। আমার ২ ছেলে এবং ২ মেয়ে। আমি অনেক কষ্ট করে ছেলে এবং মেয়েদের বড় করি। আমার বড় ছেলে অহিদ মুন্সি চট্টগ্রাম কাজ করে, সে সেখানেই থাকে। আমি আমার ছোট ছেলে শাহাজাহান এর কাছেই থাকতাম। সে এক এক করে অনেকগুলো বিয়ে করেছে। আমি তাকে এর কারনে প্রায়ই রাগ করতাম। তার বর্তমান স্ত্রী নারগিসের সাত আটটি বিয়ে হয়েছে। তাকে আনার পড় আমার ছেলে আমার সাথে প্রায়ই খারাপ ব্যাবহার করতো। এমনকি আমাকে তারা কয়েকবার মাইর-দোরও করেছে। আমি এই অপমান সহ্য না করতে পেয়ে কয়েকবার গলায় ফাঁসও দিয়েছি। এবং আমার ছেলে শাহজাহান এর বিরুদ্ধে স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুর রব গাজী কাছে বিচার দিয়েছিলাম। সে বিচার করেছে। তিনি কেঁদে আরো বলেন, আপনেরা শাহাজাহানকে কিছু বইলেন না। আল্লাহই তার এবং তার স্ত্রীর বিচার করবে।
আপনার ছেলে এবং ছেলের বৌ এসে যদি আপনাকে নিতে চায় তখন আপনি কি করবেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার একজনই মাত্র ছেলে সে চট্টগ্রাম থাকে। শাহাজাহান নামে আমার কোন সন্তান নাই, আর সে আসলেও আমি সেখানে যাবনা। আল্লাহ যেন সেখানে আমাকে না নেয়। সে আমাকে ঘরবাড়ি ছাড়া করছে। আমি আমার এই ভাইদের বাড়িতেই অনেক ভালো আছি, এখানের সবাই আমাকে খুব ভালোজানে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুর রব গাজী’র সাথে এ ঘটনার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি এর আগে বিচার করে মিল করিয়ে দিয়েছি। আর বর্তমানের ঘটনার ব্যাপারে আমাকে জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করবো।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।