ভোলার শিশু ডাক্তার সুব্রত রায় হাসপাতালের ডিউটি রেখে চেম্বার করছেন চরফ্যাশনে
দ্বীপজেলা ভোলার ২০ লক্ষ মানুষের একটি মাত্র চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র ভোলা সদর হাসপাতাল। এই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা চলছে কোন রকম জোড়া-তালি দিয়ে। এখানে রয়েছে ডাক্তার সংকট। আর এর সংকটের মধ্যেও সরকারী নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে সদর হাসপাতালের শিশু রোগীদের চিকিৎসক সুব্রত রায় শিশু রোগীদের খোঁজ-খবর ও চিকিৎসা সেবা না দিয়ে চলে যান নিজের প্রাইভেট চেম্বার চরফ্যাশনের মজুমদার ল্যাবরেটরিতে।
শিশু রোগীদের স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ভোলার বাণীর একটি টিম সদর হাসপাতালে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পান। ডাক্তার সুব্রত রায়কে হাসপাতালে পাওয়া যায়নি। তিনি কোথায় সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে কেউ বলছে স্যারে ছুটিতে; আবার কেউ বলছে স্যারে চেম্বারে।
ভুক্তভোগী শিশু রোগী নিলয়ের বাবা মোঃ শাহিন শিকদার জানান, গত ৭ দিন ধরে আমার অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে সদর হাসপাতালের শিশু ডাক্তার সুব্রত রায়কে দেখানোর জন্য হাসপাতালে গিয়ে একদিনও তার দেখা পাইনি। আরেক শিশু রোগী শাখাওয়াত শরীফের মা রাবেয়া বেগম বলেন, আমিও হাসপাতালে আমার ছেলেকে ডাক্তার দেখানোর জন্য আসি, কিন্তু ডাক্তার সুব্রত রায়কে পাইনি। ডাক্তাররা যদি আমাদের চিকিৎসা সেবা না দিয়ে তাদের খাম-খেয়ালিপনার মাধ্যমে, নিজেদের লাভের আশায় প্রাইভেট চেম্বারে কাজ করেন, তাহলে আমরা কোথায় যাব। শুধু উপরোক্ত ভুক্তভোগীরাই নয়, এমন অভিযোগ তুলে ধরেন একাধিক রোগীর স্বজনরা। তারা অভিযোগ করে বলেন, আমরা হাসপাতালে সেবার জন্য আসলেও সুব্রত স্যারকে নিয়মিত পাইনা।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের একাধিক রোগীর স্বজনরা বলেন, আজকে একজন মহিলা এসে রোগী দেখে গেছে ওয়ার্ডে। তবে তিনি কি ডাক্তার, নাকি নার্স তা কেউ বলতে পারেন নাই। তার পরিচয় সম্পর্কে কর্তব্যরত নার্সদেরকে জিজ্ঞাসা করা হলে তারাও তার সঠিক পরিচয় দিতে পারে নাই।
এদিকে সুব্রত রায়ের ব্যাপারে তাঁর প্রাইভেট চেম্বার চরফ্যাশন মজুমদার ল্যাবরেটরির এক কর্মমর্তার কাছে সুব্রত রায় কখন আসবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্যার আগামীকাল বেলা ১১ টায় (আজ বৃহস্পতিবার) আসবে রোগী দেখতে।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য ডাক্তার সুব্রত রায়ের ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অভিযোগের বিষয়ে সদর হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার তৈয়বুর রহমান স্বীকার করেন ডাক্তার সুব্রত রায় মাঝে মধ্যে চরফ্যাশন গিয়ে চেম্বার করেন।