উন্নয়নের বক্তব্য দিতে দিতে আইয়ুব খানেরও পতন হয়েছে : ড. কামাল
সংবিধান প্রণেতা গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। এই বিজয়ের মাসে সবার সঙ্গে আমি উৎসাহিত হয়ে বলব, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর তো হতে চলছে। এইবার আসুন, যে জিনিসটা আমাদের পাওয়ার কথা, কিন্তু বঞ্চিত করা হয়েছে যে, জনগণকে সত্যিকার অর্থে রাষ্ট্রের মালিক হিসেবে দেখতে চাই। শনিবার দুপুরে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
ড. কামাল বলেন, আমরা যদি সত্যিকার মালিক হই, তাহলে আমাদের মাথা কেনার মতো কেউ আছে বলে মনে করি না। আমাদের মাথা কেনার মতো টাকা কারও নেই। আর টাকা থাকলেও কেউ আমাদের মাথা কিনতে পারবে না। কারণ, বাঙালির মাথা কেউ কিনতে পারে না। কিছু লোককে কায়দা করে স্বল্প সময়ের জন্য বাগে নিতে পারে, কিন্তু ধরে রাখতে পারে না। তিনি বলেন, এই কথাগুলো কেবল মঞ্চে দাঁড়িয়ে বললে হবে না। আমাদের লোক সংখ্যা তো কোটি, কোটি। এখানের কথা পাড়া-মহল্লায় পৌঁছাতে হবে, ইউনিয়নে পৌঁছাতে, উপজেলায় পৌঁছাতে হবে, জেলায় জেলায় পৌঁছাতে হবে। এই কাজটা করার জন্য সঙ্গে সঙ্গে নেমে পড়তে হবে।
তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষের বিচারমতা আছে। আমি সবার কাছে বলছি যে কয়েকটি অনুষ্ঠানকে নির্বাচন বলে চালানো হয়েছিল সেটাকে নির্বাচন হিসেবে আমরা মেনে নিতে পারি না। আমি বলব যারা সরকারে আছেন ও তাদের সমর্থক তারা- এ রকম দাবি করে মনে করবেন না মানুষ অন্ধ, দেশের মানুষের মধ্যে সে বিচার করার ক্ষমতা নেই।
ড. কামাল হোসেন বলেন, সরকার এতো উন্নয়ন উন্নয়ন যে করে কিন্তু এই উন্নয়ন করতে গিয়ে কত টাকা বিদেশ থেকে ঋণ নেওয়া হচ্ছে, কত টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। আমরা আইয়ুব খানের সময় দেখেছি, তারা উন্নয়নের বক্তব্য দিয়ে দিয়ে, আবার তাদের পতনও দেখেছি। অর্থাৎ উন্নয়নের বক্তব্য দিতে দিতে যে পতন হয়, সেটার তো সব চেয়ে বড় উদাহরণ আইয়ুব খান।
তিনি বলেন, আমি সবচেয়ে বেশি আশাবাদী সেই সত্তরের দুর্দিনে যখন সারা পৃথিবীর মানুষ বলছিল এমনকি একাত্তরেও বলছিল স্বাধীনতা অসম্ভব। কী করে হবে এটা হতে পারে না। সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলাম। এটাই প্রমাণ করে বাংলার মানুষ অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। এ কারণেই আমি বলি আমাদের নিরাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই।
জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রবের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড আব্দুল মঈন খান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীসহ আরো অনেকে।