জাপার চেয়ারম্যান হচ্ছেন কে ?

এরশাদবিহীন জাতীয় পার্টির প্রথম সম্মেলন হচ্ছে আগামী শনিবার। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হতে যাওয়া এ সম্মেলনের আগেই জল্পনা শুরু হয়েছে চেয়ারম্যান পদ ঘিরে। চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদের থাকছেন, না রওশন হচ্ছেন- এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা ও আলোচনা। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই চিন্তার ভাঁজ স্পষ্ট হয়ে উঠছে দলটির শীর্ষ নেতাদের কপালে। দলটির এক সিনিয়র প্রেসডিয়াম সদস্য গতকাল রাতে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, বয়স ও নানা কারণে বেগম রওশন এরশাদ দলকে সময় দিতে পারবেন না। তাছাড়া দলে জি এম কাদেরের বিকল্প নেই। তার নেতৃত্বেই সারা দেশের তৃণমূল নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন।
অন্যদিকে রওশন ঘনিষ্ঠজনের এক প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা এখনো রওশন এরশাদের পক্ষেই আছেন। তারা রওশনকেই জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চান। এ ছাড়া জি এম কাদেরের চেয়ারম্যান হওয়ার বিরোধিতা করে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে তারা একটি বিবৃতি দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খসড়া তৈরি হয়ে আছে, যেকোনো সময় সাংবাদিকদের কাছে চলে যাবে।
এদিকে সম্প্রতি জি এম কাদেরের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বিভাগের ১৯ জেলার নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। কক্সবাজার মোটেল শৈবালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জীবদ্দশায় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরকে মনোনয়ন দিয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। যারা এ নিয়ে বিতর্ক করছেন, তারা গঠনতন্ত্র মানেন না।
রাজধানীর বনানীর জাপা চেয়ারম্যান কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠকে জি এম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টির আগামী নেতৃত্ব নির্বাচনে প্রয়োজনে ভোটের আয়োজন করা হবে। আগামী ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় পাটির কেন্দ্রীয় কাউন্সিল। কাউন্সিলে দলের নেতৃত্ব নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ভোট করব, সেভাবে প্রস্তুতি থাকবে। আপনারাও ভোটাভুটির জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকবেন। কাদের আরো জানান, টাকা দিয়ে ভাড়া করে লোক আনা হবে না। কাউন্সিলে নেতাদের নিজেদের টাকা খরচ করে কাউন্সিলে আসতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি টাকা দিয়ে কাউন্সিলে লোক আনতে চাই না। টাকা দিয়ে ভাড়া করে লোক আনা হবে না। সম্মেলনে খাবারের ব্যবস্থাও থাকবে না। খাবার নিয়ে বিশৃড়খলা তৈরি হয়। আমি যদি পয়সা দিয়ে আপনাদের আনি, তাহলে আপনাদের ভয়েস শোনার কোনো প্রয়োজন নেই। আর আপনি যদি পার্টি করেন, তাহলে নিজের গরজে আসবেন। পার্টির পদ-পরিচয় দিয়ে কিছু না কিছু মর্যাদা তো আপনারা পান।
এদিকে জাপার তৃণমূল নেতারা জানিয়েছেন, দলে জি এম কাদেরের বিকল্প নেতা নেই। তার নেতৃত্বে প্রতিদিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী জাতীয় পার্টিতে যোগদান করছেন। তাকে ঘিরে দল প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছেন। তারা মনে করেন, ভবিষ্যতে দল শক্তিশালী হবে তার নেতৃত্বে। জাপার চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর দলকে জি এম কাদের সুসংগঠিত করে প্রধান বিরোধী দলের অবস্থানে নিয়ে আসছেন।
এ ছাড়া জাতীয় পার্টির মহাসচিব পদেও থাকছে নতুন চমক। পার্টির মহাসচিব পদে আলোচনা রয়েছে, সাবেক মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, জাপা নেতা গোলাম মসিহ, কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু ও ফখরুল ইমাম। পার্টির মহাসচিব পদে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করে জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু বলেন, নেতাকর্মীদের কিছু দেওয়ার জন্য এবার আমি পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছি।
এ ছাড়া অতিরিক্ত মহাসচিব যারা আলোচনায় রয়েছেন। তারা হচ্ছেন, মাহমুদুল হাসান চৌধুরী, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, লিয়াকত হোসেন খোকা ও হাসিবুল ইসলাম জয়।

 

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।