সর্বশেষঃ

ভর মৌসূমেও কমেনি পেঁয়াজের দাম

মৌসুমের নতুন পেঁয়াজ বাজারে এলেও আশানুরূপ দাম কমেনি। বছরের সবচেয়ে আলোচিত খাদ্যপণ্যটির দাম অনেকটা কমার পর ফের গেল সপ্তাহে কিছুটা বেড়েছে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসার পরও কেন আবার দাম বাড়ছে, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। এ অবস্থায় টিসিবির পেঁয়াজেই আগ্রহ তাদের। দামও কেজিপ্রতি ৪৫ থেকে কমিয়ে ৩৫ টাকা করা হয়েছে। তাই পেঁয়াজের ট্রাকের সামনে আগের মতোই দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়।
ক্রেতারা জানান, এখন পেঁয়াজের মৌসূম। পণ্যটি বাজারে আসতে শুরু করেছে। সেখানে দাম বেড়েছে। এর পেছনে কী আছে, তা খুঁজে বের করা দরকার। সরকারের মনিটরিংয়ের জায়গাটা দুর্বল বলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে যে পরিমাণ নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ থাকার কথা ছিল, তা না থাকায় দাম বেড়ে গেছে।
বিক্রেতারা জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম প্রতি পাল্লায় (পাঁচ কেজি) ৮০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। রাজধানীর ৫০টি স্থান ট্রাকভর্তি টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারাও নিজেদের মতো করে কেউ এক কেজি, কেউ দুই কেজি আবার কেউ পাঁচ কেজি করে পেঁয়াজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
রাজধানীর তোপখানা রোডে এবং মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংক ছেড়ে কিছুটা দূরে অবস্থানকারী টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রির ট্রাক ঘিরে ক্রেতাদের লাইন দেখা গেছে। উভয় স্থানেই ট্রাক দুটি ঘিরে মানুষের জটলা। তারা নিজেদের চাহিদামাফিক পরিমাণমতো পেঁয়াজ কিনছেন।
মতিঝিলে টিসিবির ট্রাক থেকে পেঁয়াজ কিনতে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী রোকেয়া খাতুন জানান, আগে ৪৫ টাকা থাকলেও এখন ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বলে কিনতে এলাম। আগেও লাইনে দাঁড়িয়ে ভিড় ঠেলে মাত্র এক কেজি পরিমাণ পেঁয়াজ কিনতে পারতাম। এখন চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ কিনতে পারছি। তিনি আরো জানান, বাজারে দেশি পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলেও দাম এখনো আমাদের নাগালের বাইরে। এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে লাগে ১২০-১৩০ টাকা, যা আমাদের পক্ষে অনেকটাই কষ্টকর বিধায় এখনো টিসিবির পেঁয়াজ খাচ্ছি।
তোপখানা রোডে টিসিবির ট্রাক থেকে পেঁয়াজ কিনতে আসা রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের কর্মচারী ইদ্রিস মোল্লা একই তথ্য জানান। তিনি আরো বলেন, ‘এখান থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে পেঁয়াজ কিনেছি।’
অপর ক্রেতা মফিজুর রহমান কাজ করেন নিউমার্কেটের একটি শাড়ির দোকানে। তিনিও দাঁড়িয়েছেন তোপখানার ট্রাকের সামনে। তিনি বলেন, ‘জীবনে এমন সাইজের, এমন স্বাদের বা এমন রঙের পেঁয়াজ দেখিনি। দাম কম। তাই পাঁচ কেজি কিনলাম ১৭৫ টাকা দিয়ে। বাজারে এই দামে এক কেজি পেঁয়াজও পেতাম না।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিলার মনসুর আলী বলেন, ‘সরকার যত দিন চাইবে, তত দিনই আমরা পেঁয়াজ বিক্রি করব। বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ শতভাগ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত টিসিবির এই কার্যক্রম চলবে বলে আমরা জেনেছি। তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিদিন চার টন করে বরাদ্দ পাচ্ছি। পুরোটাই বিক্রি করার চেষ্টা করি। কিছু অবিক্রীত থেকে যায়, যা পরদিন বিক্রি করার জন্য আনি। চাহিদা কমে গেছে। তাই বরাদ্দ পাওয়া পেঁয়াজ পুরোটা বিক্রি করতে সময় লাগছে। যতণ পর্যন্ত ক্রেতা আসেন, ততণ পর্যন্তই থাকি।
এ প্রসঙ্গে টিসিবির চেয়ারম্যানের পক্ষে তার পিএস হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, বাজার স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। পেঁয়াজের দামও ৪৫ টাকা থেকে কমিয়ে ৩৫ টাকা করা হয়েছে। সরবরাহও বেড়েছে। আগে প্রতি ট্রাকে এক টন পেঁয়াজ দেওয়া হলেও এখন চার টন করে দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় সারা দেশে পেঁয়াজের সংকট তৈরি হয়। সরকার এ সংকট মেটাতে নানা উদ্যোগ নিয়েও পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ২৫০ টাকা পর্যন্ত ওঠে।ছবি-৩।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।