তাইলে আপনি প্রতিদিন নৌ-মন্ত্রী নিয়ে আইসেন : হাসনাঈন চেয়ারম্যান
শত বাঁধা উপেক্ষা করে ভোলাবাসীর স্বপ্নের ওয়াটার বাস গ্রীণ লাইন-২’র যাত্রা শুরু
ভোলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও তার ভাড়া করা লোকদের তুমুল প্রতিরোধ ও বাঁধার মূখে এবং সকল জল্পনা কল্পনা আর ষড়যন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে ভোলার ইলিশা জংশন পল্টুনে ভিরলো বহু প্রতিক্ষিত ওয়াটার বাস গ্রীণ লাইন সার্ভিস। রাতে রোটেশনে লঞ্চ চলাচলের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হলো ভোলার আপামর অসহায় জনগণ। তাদের পূরণ হলো দীর্ঘদিনের কাঙ্খিত স্বপ্ন। দ্রুত সয়য়ে পেলো দিনের আলোয় ঢাকা-ভোলা নদী পথে ভ্রনের সুযোগ।
পূর্ব ঘোষিত সময়সূচী অনুযায়ি ১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল ০৮টায় ঢাকার কুঠি বাড়ির ঘাট থেকে প্রায় ৩০০ যাত্রী নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোলার উদেশ্যে যাত্রা শুরু করে গ্রীন লাইন ওয়াটার বাস সার্ভিস। বেলা ১২ টায় ভোলার ইলিশা জংশন পল্টুনে পৌছলে চেয়ারম্যান হাছনাইন ও তার অনুগত লোকজন ওয়াটার বাস পল্টুনে ভিড়তে বাঁধা দেয়। এসময় কঠোর অবস্থান নেয় পুলিশ ও নৌ পুলিশ। পল্টুন থেকে লোকজন সরিয়ে দেয়া হয়। পরে ওয়াটার বাস থেকে যাত্রিরা নেমে আসে। এক পর্যায়ে গ্রীন লাইন স্বত্বধীকারী মোঃ আলাউদ্দিন পল্টুনে নেমে আসলে তার সাথে কথা বলেন চেয়ারম্যান হাছান। তিনি দাবী করেন, এই সার্ভিসটি এখানে চলাচল করলে ব্লক ভেঙ্গে যাওয়া, নদী ভাঙ্গন ও জেলেদের জাল-নৌকা ডুবে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই এই গ্রীন লাইন ওয়াটার বাস এই রুটে চালাতে দেবেন না ওই চেয়ারম্যান।
এদিকে যাত্রিরা চলে যাওযার পর মিডিয়ার সাথে কথা বলেন গ্রীণ লাইনের স্বত্তাধিকারী মোঃ আলাউদ্দিন। তিনি বলেন, এই রুটে গ্রীন লাইন চলাচলের সম্ভাব্যতা যাচাই করেই নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয় অনুমতি দিয়েছে। এ সময় ওই ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আমিও এই দেশের সন্তান, এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা। এই দেশে আমারও ব্যবসা করার অধিকার রয়েছে। এ সময় উতেজিত হয়ে চেয়াম্যান হাসনাঈন আহমেদ বলেন, তাইলে আপনি প্রতিদিন নৌ-মন্ত্রী নিয়ে আইসেন।
এ বিষেয়ে ওয়াটার বাস সার্ভিসের যাত্রী এডভোকেট শাহাদাত শাহীন, তালহা তালুকদার বাঁধন, আমিরুল ইসলাম ও আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, আজকে ভোলা-ঢাকা নৌ-রুটে দিনের বলোয় চলাচল করতে পেরে আমরা আনন্দিত। অল্প সময়ের মধ্যে বাড়ী এসে দুপুরের খাবার খেয়ে পরিবারের সাথে সময় কাটাতে পেরেছি। এটি ভোলার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবী। আমরা চাই এই বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মানুষের সুবিধার্থে এই সার্ভিসটি চালু থাকুক। তাছাড়া এই সার্ভিস চালু হওয়ার জন্য ভোলার মানুষের প্রিয় নেতা তোফায়েল আহমেদ এর প্রসংশা করেন যাত্রীরা।
অপরদিকে বহুল আলোচিত গ্রীন লাইন ওয়াটার বাসটি দেখার জন্য কয়েক হাজার মানুষ নদীর পাড়ে এসে ভীর করে। পরে নির্ধারিত সময়ের পূর্বে দুপুর সোয়া ১টার দিকে প্রায় ২০০ যাত্রি নিয়ে গ্রীন লাইনটি ঢাকার অভিমূখ চলে যায়।
অন্যদিকে এই সার্ভিস চলাচলের ঘোষনার পর থেকেই প্রতিরোধ করতে শুরু হয় নানা ষড়যন্ত্র। এতে যোগ হয় রাতে চলা লঞ্চ মালিক পক্ষ ও লক্ষ্মীপুরের বাস মালিক পক্ষ। এ নিয়ে সোমবার ওই চেয়ারমান হাছনাঈন এর নেতৃত্বে জংশনে একটি মানববন্ধনও করা হয়। ওই মানববন্ধনে ওয়াটার বাস চলাচলে প্রতিরোধ করার ঘোষণা দেয় হয়। এ নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনার ঝড় উঠে। এতে ওয়াটার বাস সার্ভিসের পক্ষে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি হয়। গ্রীন লাইনের উদ্ভোধনী এই সফল যাত্রায় স্বাগত জানিয়েছে ভোলার সাধারন মানুষ। স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা পালনের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে।