ভোলা দক্ষিণবঙ্গ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ৫ম ব্যাচের বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত
ভোলায় দক্ষিণবঙ্গ পলিটেকনিটক ইন্সটিটিউটের ৫ম ব্যাচের বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৭ ডিসেম্বর শনিবার প্রতিষ্ঠানে ক্যাম্পাসে এ বিদায় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
বিদায়ী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহমুদুল হাসান আবেগময় কণ্ঠে বলেন, মানুষের জীবনের পুরোটা সময় বিভিন্ন ধাপে বিভক্ত। একটা ধাপ পেরিয়ে আরেকটা ধাপে উঠতে অনেক কাঠখড় পোহাতে হয়। প্রতিটা ধাপের কষ্টগুলোকে অসহ্য মনে হয়, তবুও জীবনের কঠিন বাস্তবতায় সেগুলোকে মাড়িয়ে সামনের পথে এগিয়ে চলতে হয়। একজন শিক্ষার্থীর জীবনের শুরুর বাস্তবতা পড়ালেখার মাধ্যমে শুরু হয়। স্কুল শেষে যখন একজন শিক্ষার্থী পলিটেকনিক লাইফে প্রবেশ করে, তখনই মূলত তার জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয়। সুন্দর একটি ভবিষ্যতের আশায় চিন্তামগ্ন প্রতিটি শিক্ষার্থীর দেখতে দেখতে হারিয়ে যায় লাইফের অন্যতম সেরা সময়গুলো। যখন হুঁশ ফেরে তখন যেন গোধূলিলগ্ন, চাইলেও দিনের আলোকে তখন আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় না।
অত্র প্রতিষ্ঠানের ৫ম ব্যাচ তথা বিদায়ী শিক্ষার্থীদের দিনটিকে স্মৃতিময় করে রাখতে আয়োজনের কোনো কমতি ছিল না। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে শোভা পাচ্ছিল ব্যানার, রঙিনভাবে সাজিয়ে তোলা হয় ক্যাম্পাস। চার বছর আগে যেসব অচেনা মুখ বুকের মধ্যে লালিত স্বপ্ন নিয়ে ক্যাম্পাসে আগমন করেছিল, সময়ের নিষ্ঠুর বাস্তবতায় আজ তারা বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে। ক্যাম্পাসের পথচলায় সর্বদা অনুপ্রেরণাদায়ী বড় ভাইদের বিদায় দিতে জুনিয়রদের মধ্যেও যেন অব্যক্ত কষ্ট ফুটে উঠছিল।
এছাড়াও আয়োজনের বিভিন্ন দিক নিয়ে বক্তব্য রাখেন ইঞ্জিনিয়ার মেহেদী হাসান, ব্যাংক ম্যানেজার আবুল কালাম, কৃষি অফিসার এবি এম মোস্তফা কামাল।
বিদায়ী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে পলিটেকনিকের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিলুফার ইয়াসমিন, সিভিল টেকনোলজির বিভাগীয় প্রধান ইঞ্জিনিয়ার বেল্লাল নাফিজ, ইন্সট্রাক্টর হামিদুর রহমান আজাদ, আসমা আক্তার, মোঃ মাকসুদুর রহমান, সমীর চন্দ্র রায়, ফারিয়া আক্তার দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।
একসময় ক্লাসে এসব শিক্ষকের লেকচার শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে ওঠা প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছে আজ তাদের বক্তব্য যেন বড়ই মধুর লাগছিল। তারা যেন খুব করে চাইছিল এক সময়ের বিরক্তিময় এসব মুখ থেকে আরও কিছু মধুর বাণী শুনতে। কেননা আজকের পর থেকে চার বছরের পরিচিত এসব মুখগুলোর দেখা যে আর সচরাচর মিলবে না। তাই তো বিদায় বেলায় প্রতিটি শিক্ষাগুরুর বক্তব্য শুনে নিজেদের অজান্তেই চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল। প্রতিটি শিক্ষার্থী আজ মনের গভীর থেকে ভালোবাসার দৃষ্টিতে এসব শিক্ষাগুরুর কাছে তাদের সব ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমার চাহনীতে তাকিয়ে ছিল। উপস্থিতি সব শিক্ষকরাও যেন তাদের চাহনী বুঝতে পেরে আবেগময় হয়ে এসব মুখের দিকে তাকিয়ে চোখ থেকে দুয়েক ফোঁটা জল বিসর্জন করে আশীর্বাদ করে বলছিল, তোরা অনেক বড় হও। পরিশেষ অনুষ্ঠানের সভাপতির সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শেষ হয় বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।