বোরহানউদ্দিনে বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৪ পালিত, সম্মাননা পেলেন ৫ জয়িতা
ভোলায় ভাই’র বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী বোনের জমি আত্মসাতের অভিযোগ
(লিখিত বক্তব্য তুলে ধরছেন প্রতিবন্ধী সালেহা বেগম)
ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডে আপন ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে জমি আত্মসাতের অভিযোগ করলেন বাকপ্রতিবন্ধী বোন সালেহা বেগম ও তার পরিবার। ৩০ নভেম্বর শনিবার সরোজমিনে ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত বাক প্রতিবন্ধী সালেহা বেগমের বাড়িতে গেলে বাক প্রতিবন্ধী সালেহা বেগম সাংবাদিকদের সামনে তার ভাই মাওলানা একরাম ও পিতা মোশারফ হোসেন মাস্টারের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ কাগজে লিখে তুলে ধরেন।
সালেহা বেগমের স্বামী মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষক আব্দুল মালেক বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার স্ত্রী স্পষ্ট করে কথা বলতে পারেনা। সে কথা বলার চেষ্টা করে, কিন্তু কথা স্পষ্ট হয় না এবং তার কথা কেউ বুঝতে পারে না। এক কথায় সে বাক প্রতিবন্ধী। এটা জেনেই আমি তাকে বিবাহ করি। আমাদের ঘরে ৩ ছেলে ও দুটি মেয়ে রয়েছে। আমি সালেহাকে বিয়ের পর থেকেই দেখে আসছি আমার শ্যালক সালেহার ভাই মাওলানা একরাম কু-বুদ্ধি দিয়ে সালেহার বাবা (আমার শ্বশুর) মোশারেফ হোসেন মাস্টারকে ভুল ভাবে পরিচালিত করে আসছে। মাওলানা একরাম তার বাবাকে দিয়ে কিছু জমি বিক্রি করে। ভাই বোনদের পাওনা না বুঝিয়ে দিয়ে জমি বিক্রির সব টাকা নিজে একাই আত্মসাৎ করেন এবং বাকি সকল সম্পত্তি নিজে ভোগ দখলের পাঁয়তারা করে আসছে।
সালেহা বেগমের মেয়ে আশরাফুন্নেসা বলেন, আমার মা স্পষ্ট করে কথা বলতে পারে না এবং চোখেও ভালোভাবে পরিষ্কার দেখতে পায় না। আমার নানা মোশারফ হোসেন মাস্টার দীর্ঘ ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে আমার মায়ের কোন খোঁজ খবর নেয় না। আমার মামা মাওলানা একরাম আমার নানাকে ভুল বুঝিয়ে আমার মায়ের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি করে রেখেছে এবং আমার নানা আমার মাকে যাতে কোনো সম্পত্তি না দেয় তার জন্য আমার মামা আমার নানাকে সবসময় মানসিক চাপে রাখে। আমার মামা মাওলানা একরাম আমার নানাকে দিয়ে কিছুদিন পরপরই জমি এবং গাছ বিক্রি করে এবং সে টাকা একাই নিজে আত্মসাৎ করে থাকেন। আমি আমার মায়ের পাওনা সকল সম্পত্তি দাবি করছি।
মোশারফ হোসেন মাস্টারের ছোট ছেলে ও মাওলানা একরামের ছোট ভাই সিঙ্গাপুর প্রবাসী মোজাম্মেল এর স্ত্রী সুবরা বলেন, ১৭ বছর ধরে এ সংসারে রয়েছি, কিন্তু কখনো আমার শ্বশুর মোশারফ হোসেন মাস্টার অথবা ভাসুর মাওলানা একরামকে আমার বড় ননদ প্রতিবন্ধী সালেহার সাথে ভালোভাবে কথা বলতে দেখিনি। সবাই সবসময় সালেহাকে অবহেলা করে এসেছে। আমার স্বামী মুজাম্মেল এর সাথে আমার বড় ভাসুর মাওলানা একরাম জমি নিয়ে প্রতারণা করেছে।
এ বিষয়ে জানতে প্রতবন্ধী সালেহার ভাই মাওলানা একরামের চরনোয়াবাদ চৌমুহনীর বাসায় গেলে মাওলানা একরাম এর সাথে দেখা হয়নি এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
বাক প্রতিবন্ধী সালেহা ও মাওলানা একরামের বাবা মোশারফ হোসেন মাস্টার বলেন, আমার মেয়ে সালেহা এবং তার স্বামী মালেক আমার ও আমার ছেলে একরামের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে তা সত্য নয়। আমি আমার মেয়ে সালেহাকে তার প্রাপ্ত সম্পত্তি থেকে কখনো বঞ্চিত করবো না।
অভিযুক্ত একরাম মাওলানার ছেলে আরিফ বলেন, আমার ফুফু সালেহা বেগম, ফুফা আব্দুল মালেক ও আমার ফুফাতো ভাই বোনেরা আমার বাবার বিরুদ্ধে জমি আত্মসাতের যে অভিযোগ করেছেন তা সত্য নয়। আমরা প্রয়োজনে আমাদের ফুফার সাথে বসে এ বিষয়ে মনোমালিন্য দুর করার চেস্টা করব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভেদুরিয়া ইউনিয়নের চেয়্যরম্যান তাজুল ইসলাম মাস্টার বলেন, সালেহা বেগমকে তার পিতা এবং ভাইয়েরা কোন প্রকার সহায়তা করেনা এটা আমি শুনেছি বিষয়টি সত্যি। এটা অমানবিক। কিন্তু সালেহা বেগমের পিতা মোশারেফ হোসেন মাস্টার এখনো জীবিত রয়েছে এবং তার সম্পত্তি বন্টনের অধিকার সম্পূর্ন তার ব্যক্তিগত। আইনগত দিক থেকে চেয়্যারমান হিসেবে আমার কোন পদক্ষেপ গ্রহনের সুযোগ নেই। মোশারেফ হোসেন মাস্টারের দুই ছেলে মাওলানা একরাম ও মোজাম্মেল এর সাথে জমি ক্রয় বিষয় নিয়ে দন্ধের বিষয়টি আমি জানি।