পেঁয়াজকাণ্ডে নাজেহাল মানুষ, আজও শেষ নেই ভোগান্তির
পেঁয়াজ নিয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি যেন শেষই হচ্ছে না। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান, জরুরি ভিত্তিতে কার্গো বিমানে করে আমদানি ছাড়াও ব্যাপক প্রচারণা করেও পেঁয়াজের দাম কমাতে পারেনি সরকার। পেঁয়াজের দাম শুধু বাড়েইনি বরং গত দুই দিনে আরও বেড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে আজও ২৪০ থেকে ২৬০ কেজি টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। আর মিসর থেকে আমদানি করা বড় আকারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে এলাকাভেদে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা কেজিতে।
পেঁয়াজের এ নাগাল ছোঁয়া দামে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা টিসিবির ন্যায্যমূল্যের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রে পেঁয়াজ কিনতে ভিড় করছেন। ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে মিলছে ২ কেজি পেঁয়াজ। এই ২ কেজি পেঁয়াজের দাম নেওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা।
আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে রাজধানীর খামার বাড়ি গোলচত্বরে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রির ট্রাকের পাশে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
খামারবাড়িতে টিসিবির ট্রাকের পাশে শত শত নারী-পুরুষ পেঁয়াজের আশায় রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন। তাদের শত অপেক্ষা কখন মিলবে পেঁয়াজ নামে সেই সোনার হরিণ।
পেঁয়াজ কিনতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা শাহীনুর রহমান নামে এক ব্যক্তি দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে বলেন, ‘সকাল ৮টায় এসেছি। এখনো পেঁয়াজের দেখা মেলে নাই। আমরা গরীব মানুষ, বেশি দামে তো কিনতে পারি না। তাই সারা দিন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকি পেঁয়াজের আশায়।’শাহীনুরের মতো একই কথা জানিয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক নামে অপর এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘সরকার কি আমাগে দেখবো না? এই যে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি হইছে, আমরা সাধারণ মানুষ কি এত দামের পেঁয়াজ কিনতে পারি? শুনলাম বিমানে কইরা পেঁয়াজ আনা হইছে, তাইলে দাম কমে না কেন?’
খামারবাড়িতে পেঁয়াজ কিনতে এসেছেন রোজিনা বেগম নামে এক সরকারি চাকরিজীবী। অফিসে দুপুরের খাবারের বিরতিতে তিনি এসেছেন রান্নার অন্যতম অনুষঙ্গ পেঁয়াজ কিনতে। কিন্তু অফিসে তার যতটুকু বিরতি আর পেঁয়াজ নিতে যে দীর্ঘ সারি তা দেখে আর লাইনে দাঁড়ানোর সাহসই পাননি। পেঁয়াজের জন্য অনুরোধ করলে ডিলার জানিয়েছেন, লাইনে না দাঁড়ালে পেঁয়াজ মিলবে না। তাই পেঁয়াজ ছাড়াই খালি হাতে অফিসে ফিরতে হয়েছে রোজিনা বেগমকে।
রোজিনা বেগম দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে বলেন, ‘গতকালও এসেছিলাম কিন্তু বড় লাইন দেখে পেঁয়াজ নিতে পারি নাই। আজও যা অবস্থা মনে হয় না পেঁয়াজ কেনা সম্ভব হবে।’