ভোলার বিভিন্ন দাবী নিয়ে চট্টগ্রামস্থ ভোলা জেলা ছাত্র ফেরামের সংবাদ সম্মেলন
৩ বছর ধরে শিকলবন্দি আওলাদ!

তিন বছর ধরে মায়ের সঙ্গে শিকলবন্দি রয়েছে মো. আওলাদ হোসেন (১৪) নামে এক প্রতিবন্ধী কিশোর। আওলাদ কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর এলাকার মৃত ট্রাকচালক আল-আমিনের ছেলে।
১৩ বছরের কিশোর ছেলে আওলাদের মাথায় সমস্যা। এ জন্য সে হারিয়ে যেতে পারে এমন ভয়ে শিকল দিয়ে ছেলেকে বেঁধে রেখেছেন। মা যেখানে যাচ্ছেন, ছেলেও যাচ্ছে সেখানে। সারাক্ষণ শিকলে বাঁধা অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে তার।
মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের ভাওয়াল রাজবাড়ি সড়কের ফুটপাতের গ্রিলে আওলাদকে বেঁধে রেখে একটি ভিক্ষার বাটি হাতে বলছিলেন আওলাদের মা সালমা বেগম। এ সময় তিনি যুগান্তরকে বলেন, ১১ বছর আগে শিশু ছেলে আওলাদকে কোলে ও পাশের সিটে স্ত্রী সালমাকে বসিয়ে আল আমিন ট্রাক চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে কিশোরগঞ্জের নেওড়া ব্রিজে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হন তারা। ওই সময় তিন বছরের শিশু আওলাদ হোসেন স্মৃতিশক্তি হারিয়ে বেঁচে যায়। কিন্তু আল আমিন তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান।
ওই ঘটনায় ট্রাকের হেলপার জোবায়েরও একটি পা হারায়। কিন্তু ভাগ্যক্রমে ট্রাকে থাকা সালমা বেগমের কিছু হয়নি।
সালমা বেগম জানান, ওই অ্যাক্সিডেন্টে ভাগ্যক্রমে আমি বেঁচে গেলেও আমার স্বামী আল আমিনকে বাঁচাতে পারিনি। একমাত্র সন্তান আওলাদ হোসেনও স্মৃতিশক্তি হারিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই তাকে সবসময় শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়।
ভারসাম্যহীন সন্তানকে দেখার কেউ নেই। আগে অন্যের বাসায় ঝিয়ের কাজ করেছি। এখন তাকে একা রেখে কোথাও কাজ করতে যেতে পারি না। তাই সঙ্গে সঙ্গে রাখতে হয়।
সালমা বেগম আরও জানান, তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের চা-বাগান এলাকার আরজানের বোন রাশিদা আক্তারের একটি টিনশেডে ১৫০০ টাকায় ভাড়া থাকেন। পুরান ঢাকার মিজানুর রহমান নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা তাকে মাসে দুই হাজার টাকা দেয়। ওই টাকা দিয়ে বাসা ভাড়া ও মানুষের কাছে হাত পেতে দুমুঠো আহার জোগাতে হয়। টাকার অভাবে ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছি না।