বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভোলার বেতুয়া-মনপুরাসহ উপকূলীয় অঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ
পেঁয়াজের ঝাঁঝে দুই দিনেও বিক্রি হয়নি এক গরু
বেশ কয়েক দিন ধরে দেশের মানুষের মুখে মুখে পেঁয়াজ একটি আলোচিত নাম। কারণ পেঁয়াজ এমন একটি পণ্য যা যুগের পর যুগ ধরে বাঙালি রসনায় ব্যবহার হয়ে আসছে। পেঁয়াজ ছাড়া তরকারি রান্নার কথা ভাবতেই পারেন না অনেকে।
আবার গরু বা মুরগির মাংস রান্নায় পেঁয়াজ ব্যবহার বাধ্যতামূলক বলে মনে করেন বাঙালি রাঁধুনিরা। কিন্তু পেঁয়াজের আকাশ ছোঁয়া দামের কারণে ঘরে ঘরে সব রান্নায় তুলনামূলক কম পেঁয়াজের ব্যবহার শুরু হয়েছে।
তবে কম পেঁয়াজে মাংস রান্না সম্ভব নয় এমন ধারণা থেকেই ক্রেতারা মাংস কেনাও কমিয়ে ফেলেছেন। ফলে গত কয়েক দিনে মাংস ব্যবসায়ীদের বিক্রিও অনেকটা কমে গেছে।
যেই মাংস ব্যবসায়ী দিনে দুটি গরু জবাই করে বিক্রি শেষ করে ফেলতেন তিনি গতকাল শুক্রবারের জবাই করা একটি গরুও পুরোপুরি বিক্রি করতে পারেননি। বাকি অর্ধেক মাংস (বাসি মাংস) নিয়ে আজ শনিবার সকাল থেকে দোকান খুলে বসেছেন তিনি।
অনেকে আবার ক্রেতা কম দেখে একটি গরু জবাই দিয়ে তা ভাগ করে নিয়ে আলাদাভাবে বিক্রি করছেন। আবার অনেক মাংস ব্যবসায়ী আজ দোকানই খোলেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজ একাধিক মাংস ব্যবসায়ী দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে এসব কথা জানিয়েছেন।
তাদের দাবি, পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণে মাংস কেনা কমিয়ে দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আর বাসি মাংস কেউই কিনতে চায় না। তাই নানা কৌশলে মাংস বিক্রি করে হচ্ছে।
একই অবস্থায় রয়েছেন মুরগি ব্যবসায়ীরাও। মুরগির ক্রেতাও গত কয়েক দিন যাবত কমতে শুরু করেছে। দাম একই থাকলেও চাহিদা কমেছে বলে জানিয়েছেন মুরগি ব্যবসায়ীরা।
মিরপুর এলাকার হাসান মিয়া নামে এক মাংস ব্যবসায়ী দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে বলেন, ‘সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার আমার দোকানে দুটি গরু জবাই হয়। আর দুপুরের মধ্যেই মোটামুটি সব মাংস বেচাকেনা হয়ে যায়। কিন্তু গতকাল একটা গরু জবাই দিয়েছি। সেই মাংসই বিক্রি করতে রাত ১০টা বেজে গেছে। তাই আর একটা গরু জবাই দেওয়ায় সাহস পাই নাই। কারণ মাংস খাওয়ার মানুষ কমে গেছে মনে হয়।’
অপর এক মাংস ব্যবসায়ী পরিচয় না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘আজকে যে মাংসটুকু দেখছেন এগুলো গতকালের। কারণ কাল সারা দিনেও একটা গরু পুরোপুরি বিক্রি হয় নাই।’
একই অবস্থার কথা বলেছেন মোহাম্মদপুর এলাকার মুরগি বিক্রেতা মো. সালামও। তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজের যে দাম, মানুষ মুরগি খাইবো কেমনে। বেচাকেনা ভালো না।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘ঢাকায় প্রতিদিন প্রায় ছয় হাজার পশু জবাই হয়। কিন্তু এখন সর্বোচ্চ হাজার খানেক পশু জবাই হচ্ছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘পেঁয়াজ ছাড়া মাংস রান্না হয় না। এটা যুগ যুগ ধরে বাংলা সংস্কৃতিতে চলে আসছে। কিন্তু পেঁয়াজ ছাড়াও আসলে মাংস রান্না করা যায়। অনেক বড় বড় রান্নার আয়োজনে পেঁয়াজের বিকল্প হিসেবে অন্য কিছুও ব্যবহার করছেন রাধুনিরা।’