গয়েশ্বর বাবু বটগাছ থেকে কবে সরবেন, প্রশ্ন হাছান মাহমুদের
‘বিএনপি হচ্ছে একটি বটগাছ, এই বটগাছের নিচে মানুষ আসবে বিশ্রাম নিয়ে চলে যাবে’ দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায়ের এমন বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেছেন, বিএনপি নামক বটগাছ থেকে গয়েশ্বর বাবু কবে যাবেন?
মঙ্গলবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর কালকে বলেছেন ‘বিএনপি হচ্ছে একটি বটগাছ। এই বটগাছের নিচে মানুষ আসবে এবং বিশ্রাম নিয়ে চলে যাবে’।
বিএনপি ছেড়ে যাবেন এমন নেতাদের তালিকায় আরও বহু জ্যেষ্ঠ নেতা রয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সবাইকে নেবে না।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে উদ্দেশ্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তাদের কয়েকজন সিনিয়র নেতা যে দল ত্যাগ করে চলে গেছেন, সেই প্রসঙ্গে গয়েশ্বর এই কথা বলেছেন। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে গয়েশ্বর বাবু কখন বিএনপির বটগাছ থেকে চলে যাবেন। সেই প্রশ্ন অনেকে করেছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি থেকে যেভাবে তাদের জ্যেষ্ঠ নেতারা দলত্যাগ করে চলে যাচ্ছেন, বিএনপি ছেড়ে যাচ্ছেন, এই ছেড়ে যাওয়ার লিস্টে আরও বহুজন আছে। সেগুলো ভবিষ্যতে বিএনপি দেখতে পাবে। এই হতাশাজনক পরিস্থিতিতে গয়েশ্বর বাবু নিজের হতাশা কাটাতে আত্মতুষ্টির জন্য এই কথা বললেও তাদের দলত্যাগ তারা ঠেকাতে পারবে না।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গয়েশ্বর বাবু এই কথা বলে আত্মতুষ্টি পাওয়ার চেষ্টা করলেও এতে আত্মতুষ্টি পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের অনেকে প্রশ্ন করেছে, গয়েশ্বর বাবু বিএনপির গাছতলা থেকে কবে চলে যাবেন?’
সম্প্রতি বিএনপি থেকে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান এম মোরশেদ খান পদত্যাগ করেছেন। আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতার দল ছাড়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
বিএনপির কেউ আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছে কিনা- এমন প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির অনেক নেতাই দল ছেড়ে যাওয়ার জন্য বহুদিন ধরেই চিন্তা ভাবনা করছেন এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে যে যোগাযোগ করছেন না তা নয়। আওয়ামী লীগ কিন্তু যাকে তাকে দলে নেয়ার জন্য বসে রয়নি। আওয়ামী লীগ একটি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জনগণের মধ্য থেকে উঠে আসা দল। আওয়ামী লীগে যোগ দিতে চাইলেই সবাইকে নেয়া হবে না।
‘বিএনপি থেকে অনেকেই দল ত্যাগ করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন, মাত্র শুরু হলো ভবিষ্যতে বিএনপি আরো দেখতে পাবে’-যোগ করেন হাছান মাহমুদ। হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি থেকে যেভাবে তাদের সিনিয়র নেতারা দলত্যাগ করে চলে যাচ্ছেন, এই তালিকায় আরো বহুজন আছেন। সেগুলো ভবিষ্যতে বিএনপি দেখতে পাবে।
বিএনপি নেতাদের দল ত্যাগ করার কারণ সম্পর্কে আওয়ামী লীগের এই প্রচার সম্পাদক বলেন, রাজনীতি হচ্ছে মানুষের জন্য, জনগণের কল্যাণের জন্য। কিন্তু তাদের (বিএনপি) রাজনীতি ১১ বছরে মানুষের কল্যাণে আবর্তিত হয়নি। তাদের রাজনীতি সবসময় আবর্তিত হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং খালেদা জিয়া, তারেক জিয়ার মামলা এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে। তারা এই বিষয়গুলোকে ফুটিয়ে তোলার জন্য যে জঘন্য পথ অবলম্বন করেছে, জনগণের উপর আক্রমণ করা, পেট্রলবোমা হামলা চালানো, সে কারণে তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এ কারণে তাদের নেতারা দল ছেড়ে চলে যাচ্ছে। বিএনপিতে গণতন্ত্র নেই দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিদেশ থেকে যেভাবে দলকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়, তাদের দলের মধ্যে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র বলতে কোনো কিছু নেই, স্থায়ী কমিটির সদস্যরা কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন না। সিদ্ধান্ত আসে তাদের দণ্ডিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছ থেকে এবং সেগুলো অপরিনামদর্শী সিদ্ধান্ত।’
সূত্র যুগান্তর